শালবনিতে জিন্দলদের প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির পর নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার নির্দেশে বুধবার ওই প্রকল্প এলাকায় যান মেদিনীপুরের মহকুমাশাসক (সদর) অমিতাভ দত্ত। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন। কর্তৃপক্ষের তরফে ছিলেন এজিএম (ট্রেনিং) সঞ্জীব দুবে, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট উত্তম সরকার, অ্যাডভাইসর দেবেন মাহাতো। প্রকল্প এলাকা ঘুরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জেলাশাসককে রিপোর্ট দিয়েছেন মহকুমাশাসক।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে গিয়েছেন, ফের ১৬ জুন বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে। বিক্ষোভ ঘিরে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন মহকুমাশাসক। কত একর জমিতে প্রকল্প, কী ভাবে জিন্দল গোষ্ঠী জমি পেয়েছে, এখনও পর্যন্ত স্থানীয় কতজন কাজ পেয়েছেন, রিপোর্টে তার বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। তবে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অমিতাভবাবু। জেলাশাসক অবশ্য বলেন, “মহকুমাশাসককে ওই এলাকায় পাঠিয়েছিলাম। পরিস্থিতির উপর আমাদের নজর রয়েছে।”
জিন্দলদের প্রস্তাবিত ইস্পাত প্রকল্প ঘিরে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় প্রশাসনের একাংশ উদ্বিগ্ন। দ্রুত কারখানা চালু করে সব জমিদাতা পরিবারকে চাকরি, পরিচয়পত্র দেওয়া-সহ নানা দাবিতে গত মঙ্গলবার শালবনিতে জিন্দলদের প্রস্তাবিত ইস্পাত প্রকল্পের সামনে বিক্ষোভ দেখায় একাংশ জমিদাতা পরিবার। প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার (সিকিউরিটি) অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত দাবিপত্রও দেন তাঁরা। দাবিগুলো খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন অমিতাভবাবু। প্রশাসন সূত্রে খবর, মহকুমাশাসক তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছেন, ওই দিন আড়াইশো জন গ্রামবাসী বিক্ষোভে সামিল হন। নেতৃত্বে ছিলেন আসনাশুলির পরিষ্কার মাহাতো, জামবেদিয়ার নিত্যানন্দ সাহা। মূল দাবি ছিল, সব জমিদাতা পরিবারের চাকরি।
২০০৮ সালের ২ নভেম্বর শালবনিতে জিন্দলদের প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস হয়। অনুষ্ঠান সেরে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে ওই দিন ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ করে মাওবাদীরা। আহত হন কয়েকজন পুলিশ কর্মী। তারপর থেকেই কারখানার কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছিল। পরে অবশ্য কাজ শুরু করেন জিন্দলরা। গোড়ায় জিন্দল গোষ্ঠীর ঘোষণা ছিল, ২০১৩ সালের মধ্যেই প্রথম পর্যায়ের উত্পাদন শুরু হয়ে যাবে। তবে এখনও পর্যন্ত পুরো কারখানা গড়ে ওঠেনি। ঠিক কী কী কারণে কারখানার কাজ এগোনো যাচ্ছে না, কর্তৃপক্ষের তরফে উপস্থিত আধিকারিকেরা তা মহকুমাশাসককে জানান। মহকুমাশাসকের রিপোর্টে সেই কারণগুলোর উল্লেখ রয়েছে। জেলাশাসককে পাঠানো ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রকল্পে কাজ দেওয়ার জন্য জমিদাতা পরিবারগুলোর ২৩১ জন সদস্যের নামের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত ৭০ জনকে কাজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy