Advertisement
E-Paper

জলাধার থেকে মিলল নিখোঁজ ছাত্রের দেহাংশ

স্কুল পালিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে গেঁওখালিতে পিকনিক করতে গিয়েছিল নবম শ্রেণির এক পড়ুয়া। সেখান থেকে বন্ধুরা ফিরে এলেও খোঁজ মিলছিল না ওই ছাত্রের। রবিবার সুতাহাটা এলাকার উত্তর রাণিচকের বাসিন্দা নিখোঁজ শোভন ধাড়া (১৫) নামে ওই ছাত্রের দেহাংশ মিলল হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের পানীয় জল প্রকল্পের প্ল্যান্টের একটি জলাধারে। তবে এই ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪৩

স্কুল পালিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে গেঁওখালিতে পিকনিক করতে গিয়েছিল নবম শ্রেণির এক পড়ুয়া। সেখান থেকে বন্ধুরা ফিরে এলেও খোঁজ মিলছিল না ওই ছাত্রের। রবিবার সুতাহাটা এলাকার উত্তর রাণিচকের বাসিন্দা নিখোঁজ শোভন ধাড়া (১৫) নামে ওই ছাত্রের দেহাংশ মিলল হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের পানীয় জল প্রকল্পের প্ল্যান্টের একটি জলাধারে। তবে এই ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হলদিয়া থানার পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হলদিয়া) অমিতাভ মাইতি বলেন, “প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ওই দেহাংশ নিখোঁজ ছাত্রেরই। তবে ডিএনএ পরীক্ষার পরই বিষয়টিতে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”

পুলিশ ও মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় ভূপতিনগর তিলোত্তমা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র শোভন গত শুক্রবার স্কুল পালিয়ে গেঁওখালি বেড়াতে গিয়েছিল। সঙ্গী ছিল তারই দুই সহপাঠী রবি দাস ও দেবপ্রসাদ মাইতি। গেঁওখালিতে হাজির ছিল রবীন মাইতি নামে আরও এক বন্ধু। কিন্তু বেড়ানোর পর সকলেই বাড়ি ফিরলেও খোঁজ মেলেনি শোভনের। শনিবার সুতাহাটা থানায় ছেলের নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেন শোভনের বাবা পেশায় লরিচালক মনোরঞ্জন ধাড়া। শনিবার রাতেই পুলিশ তদন্তে নেমে শোভনের বন্ধুদের সনাক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে শোভনের বন্ধুরা জানিয়েছিল, ওই দিন তারা মদ-মাংস খেয়ে ঘোরার পর জল প্রকল্পের জলাধারে স্নানে নেমেছিল। সেখানেই হঠাৎই তলিয়ে যায় শোভন। কিন্তু ভয়ে তারা কাউকে কিছু বলতে পারেনি। শনিবার রাতেই পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শোভনের খোঁজে ঘটনাস্থলে যান শোভনোর কাকা মোহন ধাড়া-সহ কয়েকজন প্রতিবেশী। কিন্তু মেলেনি কিছুই। তবে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন গামছা পরে স্নানে নেমেছিল শোভন। আর জামা-স্কুল ব্যাগ ছিল জলাধারের পাড়ে। ঘটনার পর তার সঙ্গীরা ভয়ে সেগুলি ঘটনাস্থলের কাছে এক জায়গায় লুকিয়ে রেখেছিল। শনিবার রাতে অবশ্য তারা লুকোনো জায়গা থেকে তা বের করে দেয়।

এ দিকে, রবিবার সকালে ওই জল প্রকল্পে পাম্প চালানোর পরই জলাধারে রক্ত, মাংস আর হাড়ের টুকরো ভেসে ওঠায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ও নিখোঁজ ছাত্রের পরিজনরা। কিন্তু শোভনের মৃত্যু হলো কীভাবে? পর্ষদের ইঞ্জিনিয়ার ও পুলিশের ব্যাখ্যা, ওই জলাধারের গভীরে থাকা বড় বড় পাইপ দিয়ে জলাধারে ধরে রাখা নদীর জল শোধনের জন্য প্ল্যান্টে যায়। শক্তিশালী মেশিনের সাহায্যে জল তোলায় জলাধারের গভীরে জলের স্রোত থাকে। স্নান করার সময় হয়তো শোভন কোনওভাবে জলের গভীরে চলে গিয়েছিল। তখনই স্রোতের টানেই সে ওই পাইপের মধ্যে ঢুকে যায়। প্ল্যান্টের ঘূর্নায়মান যন্ত্রে (যেটি মিনিটে ন’শো বার ঘোরে) টুকরো টুকরো হয়ে যায় শোভনের দেহ। তারপর জলের সঙ্গে গিয়ে অন্য জলাধারে ভেসে ওঠে।

শোকস্তব্ধ মনোরঞ্জনবাবু বলতে পারেননি কিছুই। তবে শোভনের কাকা মোহনবাবু বলেন, “ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসার পরই অভিযোগ দায়ের করার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। আসলে ওরা সকলেই নাবালক। তাই হয়তো আবেগে চলে গিয়েছিল। এই মৃত্যুর পিছনে চক্রান্ত রয়েছে বলে মনে হয় না।” মর্মান্তিক এই ঘটনায় পর্ষদকে সরাসরি দোষারোপ না করলেও তাঁর বক্তব্য, “জলাধারে এমন বিপদের কথা বোর্ডে লিখে রাখা উচিত ছিল। এ বার থেকে যেন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। না বলে এমন দুর্ঘটনা আরও ঘটবে।” তবে পর্ষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক উজ্জ্বল সেনগুপ্ত বলেন, “যেহেতু ওই জল প্রকল্পের জল হলদিয়া শহর-সহ সুতাহাটার একাংশে পানীয় জল হিসাবে সরবরাহ করা হয়, তাই ওই পাম্পটি বন্ধ রাখা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, পানীয় জলের নতুন প্রকল্পের পাম্প চালু থাকায় জলের সমস্যা হবে না। এই পাম্পটি শোধন করে ফের তা চালু করা হবে।

student missing body parts found sovan dhara
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy