বাসস্ট্যান্ডের বাইরে যাত্রীদের বাসের জন্য অপেক্ষা।
জেলার সদর শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড। সেখানেই জল সঙ্কট। প্রতিবাদে আন্দোলনে নামলেন বাস কর্মীরা। তাঁদের সিদ্ধান্ত, জল সঙ্কট না মেটা পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ডে কোনও বাস ঢুকবে না, বেরোবেও না। এর ফলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে আসা যাত্রীরা বাস পাননি। দুপুর পর্যন্ত এই ভোগান্তি চলে। আলোচনার পর বিকেলের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুরসভার পক্ষ থেকেও দু’টি জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হয়। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু জানান, পাম্প বিকল হয়েই সমস্যা হয়েছিল। তাঁর কথায়, “যন্ত্র মেরামত করতে তো সময় লাগবেই। তার মধ্যে এ দিন সকাল থেকে আন্দোলন শুরু হয়। আমরা জানিয়ে দিই, এ সব বরদাস্ত করা হবে না।”
মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে বাস কর্মীদের ব্যবহারের জন্য একটি গভীর নলকূপ রয়েছে। বুধবার এই নলকূপের পাম্প খারাপ হয়ে যায়। মেরামতের কাজ দ্রুত শুরু না হওয়ায় বাস কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের উপর দিয়ে প্রতিদিন আটশোরও বেশি বেসরকারি বাস চলাচল করে। এর মধ্যে পাঁচশোরও বেশি বাস সদর শহরের এই কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড ছুঁয়ে যায়। জল সমস্যার সমাধানের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে বাসের চালক- কর্মীরাই আন্দোলন শুরু করেন। বাসস্ট্যাণ্ডের সামনে দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করা হয়। অবরোধের জেরে পথচলতি মানুষ সমস্যায় পড়েন। বাস- কর্মীদের সিদ্ধান্ত মতো, কোনও বাস স্ট্যাণ্ড থেকে ছাড়েনি। স্ট্যাণ্ডে ঢুকেওনি। শহরের বাইরে দিয়ে অবশ্য বাস চলাচল করেছে। স্ট্যাণ্ডে এসে বাস না- পেয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। বাস- কর্মীদের দাবি, প্রতিটি বাসের কাছ থেকে পুরসভা দিনপিছু ১০ টাকা করে নেয়। তবে, স্ট্যাণ্ডে প্রয়োজনীয় পরিষেবা মেলে না। জলের সমস্যা আগে থেকেই চলছে। যে পরিমান জল সরবরাহ করা হয়, তা অপর্যাপ্ত। কেন এই আন্দোলন? বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন- এর জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “জলের সমস্যা ছিল। কর্মীরা নিজেরাই আন্দোলন করেছেন।”
মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে পানীয় জলের কোনও ট্যাঙ্ক নেই।
ভেঙে গিয়েছে ট্যাপ কলও। কলের মুখে পাইপ লাগিয়ে এভাবেই চলে পানীয় জল সংগ্রহ।
বাস ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সহ- সভাপতি শিবু সরখেল বলেন, “শুধু আজ নয়, দিন কয়েক ধরেই স্ট্যাণ্ডে জলের সমস্যা চলছে।” পরিস্থিতি দেখে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হন তৃণমূল নেতৃত্বও। বিকেলের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মেদিনীপুরের পুর- পারিষদ (জল) মৌ রায় বলেন, “পাম্প খারাপ হলে সারাতে তো সময় লাগবেই। সারানোর সময়টুকু দিতে হবে। তার আগেই বাস- কর্মীরা পথ অবরোধ শুরু করেন।” তাঁর কথায়, “যে পাম্পটি খারাপ হয়েছিল, এদিনই সেটি সারানো হয়েছে।” পুরসভার তরফে বাসস্ট্যাণ্ডের দেখভাল করেন মেদিনীপুরের উপপুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস। তিনি বলেন, “যাত্রীদের এ ভাবে সমস্যায় ফেলে বাস- কর্মীরা ঠিক কাজ করেননি। বুধবার সন্ধ্যায় খবর পাই, স্ট্যাণ্ডের পাম্পটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। এদিন সকালেই যাতে মেরামতের কাজ শুরু হয়, সেই উদ্যোগও নেওয়া হয়। তারমধ্যে এদিন সকাল থেকে অবরোধ শুরু হয়।” তাঁর কথায়, “পুরসভার একাধিক কর্মীকে হেনস্তাও করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যা যা পদক্ষেপ করার আমরা করব। কোনও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। ইউনিয়নের নামে এমন অরাজকতা চলতে পারে না। আসলে বাসস্ট্যাণ্ড নিয়ে আমরা কিছু পদক্ষেপ করছি। এই সব পদক্ষেপের ফলে কিছু মানুষের স্বার্থে আঘাত লাগছে। তারাই পিছন থেকে আন্দোলনে কলকাঠি নাড়ছে।”
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy