Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
মেদিনীপুর কমার্স কলেজ

টিচার ইন-চার্জের ইস্তফা ঠেকাতে তৎপর তৃণমূল

কমার্স কলেজের টিচার ইন-চার্জের ইস্তফা ঠেকাতে তৎপর হলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে কলেজের টিচার ইন-চার্জ বিবেকানন্দ দাস মহাপাত্রের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়। আশ্বাস দিয়েছেন, কলেজে পড়াশোনার পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ-প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। কোনও রকম উচ্ছৃঙ্খলতা বরদাস্ত করা হবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫৭
Share: Save:

কমার্স কলেজের টিচার ইন-চার্জের ইস্তফা ঠেকাতে তৎপর হলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে কলেজের টিচার ইন-চার্জ বিবেকানন্দ দাস মহাপাত্রের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়। আশ্বাস দিয়েছেন, কলেজে পড়াশোনার পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ-প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। কোনও রকম উচ্ছৃঙ্খলতা বরদাস্ত করা হবে না। এ প্রসঙ্গে দীনেনবাবু বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী পুরো বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। আমি ওঁকে (টিচার ইন-চার্জ) পুলিশ-প্রশাসনের উপর আস্থা রাখার কথাই বলেছি। যেই করুক, কলেজে উচ্ছৃঙ্খলতা বরদাস্ত করা হবে না।”

সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলারই ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া বিবেকানন্দ কলেজের টিচার ইন-চার্জ টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের চাপে ইস্তফা দিয়েছিলেন। শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধেও তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তারপর নদিয়ার চাপড়ার বাঙালঝি কলেজের অধ্যক্ষও টিএমসিপি-র আচরণে ‘অপমানিত’ হয়ে ইস্তফা দেন। তৃণমূল নেতাদের ‘চাপে’ পরে সিদ্ধান্ত বদলান তিনি।

মেদিনীপুর কমার্স কলেজের টিচার ইন-চার্জ বিবেকানন্দবাবু অবশ্য ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে রবিবার পর্যন্ত সরে আসেননি। শনিবারের পরে এ দিনও তিনি বলেন, “টিচার ইন-চার্জের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলেছি। আমি চাই, অন্য কাউকে এই দায়িত্ব দেওয়া হোক।”

বৃহস্পতি-শুক্র, পরপর দু’দিন ছাত্র পরিষদ (সিপি) এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল মেদিনীপুর শহরের কৈবল্যদায়িনী মহাবিদ্যালয় (কমার্স কলেজ)-এ। তারপর অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। শনিবার কলেজের টিচার ইন-চার্জ বিবেকানন্দ দাস মহাপাত্র দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে চিঠি দেন। তবে তাঁকে এখনও অব্যাহতি দেওয়া হয়নি।

শনিবার সকালেই কলেজের পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে পরিচালন সমিতির সভাপতি শ্যামলেন্দু মাইতির। পার্থবাবু কলেজ খোলা রাখতে অনুরোধ করেন। সেই মতো কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন কর্তৃপক্ষ। কলেজের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পার্থবাবু তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেনবাবুর সঙ্গেও কথা বলেন। তারপরই শনিবার রাতে টিচার ইন-চার্জের সঙ্গে কথা বলেন দীনেনবাবু।

এই পরিস্থিতি কলেজে পরিচালন সমিতির জরুরি বৈঠক ডাকতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। রবিবার সকালে পরিচালন সমিতির সভাপতি শ্যামলেন্দু মাইতির সঙ্গে কথা হয়েছে টিচার ইন-চার্জের। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী শুক্রবার কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠক হবে। সেখানে টিচার ইন-চার্জের ইস্তফা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা। কলেজ ক্যাম্পাসে গোলমাল এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে রবিবার মেদিনীপুর কোতয়ালি থানার আইসি সুশান্ত রাজবংশীর সঙ্গে দেখা করেন শহরের কংগ্রেস কাউন্সিলর কৌস্তভ বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, সোমবার থেকে কলেজের আশপাশে পুলিশি নজরদারি থাকবে।

মেদিনীপুর শহরে একমাত্র কমার্স কলেজের ছাত্র সংসদ টিএমসিপির হাতে নেই। এখানে ক্ষমতায় রয়েছে সিপি। অভিযোগ, ছাত্র সংসদ দখলে মরিয়া টিএমসিপি মাঝেমধ্যে কলেজে অশান্তি বাধাচ্ছে। গত বৃহস্পতি এবং শুক্রবার পরপর দু’দিন মেদিনীপুর কমার্স কলেজে অশান্তিতে জড়ায় সিপি-টিএমসিপি। বৃহস্পতিবার দু’টি ছাত্র সংগঠনেরই প্রতিষ্ঠা দিবস ছিল। সে দিন পতাকা তোলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। শুক্রবার টিএমসিপির কিছু কর্মী ছাত্র সংসদের ঘরে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc midnapore teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE