এক ব্যবসায়ীর মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে খড়্গপুর শহরের অদূরে বারবেটিয়া-জামনা সড়কের শিরষি থেকে উদ্ধার হয় খড়্গপুর শহরের সাঁজোয়ালের বাসিন্দা স্বপন সেন (৪০)-এর দেহ। সম্পর্কে তিনি খড়্গপুর পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের তুষার চৌধুরীর শ্যালক। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে স্বপনবাবুর। তবে শরীরে একাধিক ক্ষত থাকায় মৃতের পরিবারের তরফে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই বিষয়টা পরিষ্কার হবে। অভিযোগের তদন্ত করে দেখা হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শহরের পুরাতন বাজারের জুতো ব্যবসায়ী স্বপনবাবু এলাকায় পরিচিত নাম। তিনি প্রতিদিনই দোকান থেকে বেরিয়ে ক্লাবে ক্যারাম খেলে রাত করে বাড়ি ফিরতেন। নিজে অত্যাধিক মদ্যপান না করলেও মাঝে মাঝে বন্ধুদের সঙ্গে পানশালাতেও যেতেন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ দোকান থেকে বেরিয়েছিলেন স্বপনবাবু। তারপর ক্যারাম খেলতে যান স্থানীয় ডেভেলপমেন্টের সঙ্ঘশ্রী ক্লাবে। রাত বারোটা পর্যন্ত বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান তিনি। স্বপনবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময় ছেলে শৌভিককে ফোন করেছিলেন তিনি। মৃতের জামাইবাবু তুষার চৌধুরী বলেন, “ফোনে স্বপন বলেছিল ছেলেকে ঘুমিয়ে পড়তে। অনেক রাতেও না ফেরায় স্বপনকে ফোন করা হয়। উত্তর মেলেনি।”
বৃহস্পতিবার ভোরে রাস্তার পাশে মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় গ্রামীণ থানার পুলিশ। দেহটি খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে যান এসডিপিও অজিত সিংহ যাদব। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদেহের পাশেই পড়ে ছিল স্বপনবাবুর মোটরবাইক। তার হেডলাইট ছিল ভাঙা। পুলিশের অনুমান, মোটরবাইকটি রাস্তা থেকে ডান দিকে নেমে গিয়েছিল। তখন কোথাও ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে স্বপনবাবুর গলার কাছে নখের একাধিক ক্ষত রয়েছে, হাতেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একারণেই মৃতের পরিবারের দাবি, ঘটনাটি দুর্ঘটনা নয়, খুন।
হাসপাতালে পৌঁছে এ দিন মৃতদেহর সামনে ভেঙে পড়েন স্বপনবাবুর স্ত্রী শতাব্দী সেন। শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “মোটরবাইকের হেডলাইট ভাঙা ছাড়া আর কোনও ধাক্কা লাগার চিহ্ন নেই। তাই পুলিশকে ভাল করে তদন্ত করতে হবে।”
দুপুরে মৃতদেহের ময়না-তদন্তের আগে পৌঁছন খড়্গপুর টাউন আইসি দীপক সরকার। তিনি মৃতদেহ পরীক্ষা করে দেখেন শরীরে একাধিক নখের আঘাত রয়েছে। এর পরেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। মৃতের জামাইবাবু তুষার চৌধুরী বলেন, “এটা দুর্ঘটনা নয়, খুন করা হয়েছে স্বপনকে। কিন্তু কী কারণে তা বলতে পারব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy