তৃণমূলের দলাদলিতে স্থগিত হয়ে গেল মেলা। ঘটনাটি মেদিনীপুর সদর ব্লকের নয়াগ্রামের। মঙ্গলবার থেকেই স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের মাঠে এই মেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল। এ দিন অবশ্য মেলা শুরু হয়নি। স্কুল মাঠে মেলা করার জন্য উদ্যোক্তারা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। সংসদ অনুমতি দেয়নি। কেন? পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি নারায়ণ সাঁতরা বলেন, “আগামী ১১- ১২ জানুয়ারি সরকারি উদ্যোগে এই মাঠে মেলা হবে। বেসরকারি উদ্যোগে যে মেলাটি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলত। একই মাঠে দু’টি মেলা হবে কী ভাবে? সরকারি মেলাটির কথা আগে থেকেই জানানো হয়েছিল। তাই বেসরকারি মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।”
সংসদ সভাপতি এই যুক্তি সাজিয়ে দিলেও স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরেই মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে চলা মেলা স্থগিত হয়েছে। দুই গোষ্ঠীর একদিকে রয়েছে শাসক দলের ব্লক সভাপতি দিলীপ দে এবং তাঁর অনুগামীরা। অন্যদিকে রয়েছে দিলীপবাবুর বিক্ষুব্ধরা। মেলার যাঁরা উদ্যোক্তা, তাঁদের অনেকেই শাসক দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত। উদ্যোক্তাদের অন্যতম, তৃণমূলের সদর ব্লকের সাধারণ সম্পাদক গোলক মাইতির কথাতেই তা স্পষ্ট। গোলকবাবু বলেন, “দলের ব্লক সভাপতি চক্রান্ত করে মেলা ভেস্তে দিলেন! সেই চক্রান্তে সংসদ সভাপতিও নিজেকে জড়িয়ে দিলেন! ব্লক সভাপতির পরামর্শেই সংসদ সভাপতি মেলার অনুমতি দেননি।”
নয়াগ্রাম এলাকাটি মেদিনীপুর সদর ব্লকের মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। গ্রামীণ এলাকায় মেলা করতে হলে পঞ্চায়েতের ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট লাগে। সেই সার্টিফিকেটও পেয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের উপপ্রধান অঞ্জন বেরা বলেন, “মেলা হলে
আমাদের কোনও আপত্তি ছিল না। এরপর কেন মেলা স্থগিত হয়ে গেল তা বলতে পারব না। খোঁজ নিয়ে জানতে হবে!” তৃণমূলের অন্দরে অঞ্জনবাবু দিলীপ- বিরোধী শিবিরের লোক বলেই পরিচিত। নয়াগ্রাম উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে চলা এই মেলার নাম ছিল ‘বিবেক মেলা’।
মেলা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় যাঁর দিকে অভিযোগ সবথেকে বেশি উঠছে, তৃণমূলের সদর ব্লক সভাপতি সেই দিলীপবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। কেন ‘চক্রান্ত’ করে মেলা ভেস্তে দেওয়া হল? দিলীপবাবু বলেন, “এলাকার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা বলছেন, অভিভাবকেরা বলছেন, স্কুল মাঠে মেলা করা ঠিক হবে না! এখানে আমাকে জড়ানোর কিছু নেই!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy