পরিকাঠামোগত সমস্যায় ধুঁকছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কৃষি খামারগুলো। প্রায় সব খামারেই কর্মী সংখ্যা কম। জমিও বেহাত হতে বসেছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার বৈঠক করলেন জেলার কৃষি-কর্তারা। কেশপুরের আনন্দপুর কৃষি খামারে এই বৈঠকে ছিলেন কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর নিমাইচন্দ্র রায়, জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ প্রমুখ। ছিলেন বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলার কৃষি খামারগুলোর কর্মকর্তারাও। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মলবাবু বলেন, “জেলার কয়েকটি কৃষি খামারের পরিস্থিতি সত্যিই খারাপ। আমরা নতুন করে পরিকল্পনা তৈরি করে খামারগুলোর উন্নতি করতে চাই। কী কী সমস্যা রয়েছে, কী ভাবে সমস্যার সমাধান সম্ভব, বৈঠকে সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হয়েছে।”
আনন্দপুরের কৃষি খামারটি বেশ বড়। এখানে মূলত আলু বীজ নিয়ে গবেষণা হয়। বীজ তৈরিও হয়। এই খামারের আওতায় প্রায় ৬০০ একর জমি রয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আনন্দপুরের খামারটির পরিকাঠামো উন্নয়নে আর্থিক সহায়তা চেয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য, দুই সরকারের কাছেই প্রস্তাব পাঠানো হবে। যেমন সহায়তা মিলবে, তেমন কাজ হবে। জেলার যে সব খামারের পাশে পুকুর রয়েছে, সেখানে মাছ চাষের প্রসঙ্গটিও এ দিনের বৈঠকে ওঠে। ঠিক হয়েছে, এ ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সমিতিকে সহায়তা করতে বলা হবে।
জেলায় মোট ১২টি কৃষি খামার রয়েছে। এর মধ্যে কেশপুর ব্লকেই রয়েছে দু’টি। একটি কেশপুরে, অন্যটি আনন্দপুরে। মেদিনীপুর সদর, গড়বেতা-১ ও ২, সবং, পিংলা, নারায়ণগড়, কেশিয়াড়ি, ঝাড়গ্রাম, বিনপুর-২, চন্দ্রকোনা-১ ব্লকেও কৃষি খামার রয়েছে। কৃষি দফতরের এক কর্তা মানছেন, “পরিকাঠামোগত সমস্যা আর নজরদারির অভাবেই কিছু খামার নষ্ট হতে বসেছে। আনন্দপুরে বৃহৎ আলু গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। এটিও নানা সমস্যায় ধুঁকছিল। গত বছর থেকে কিছুটা সচল হয়েছে। এ বছর আলু বীজ তৈরিও হয়েছে।” তাঁর কথায়, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই কেন্দ্রের পরিকাঠামোর উন্নতি করা দরকার। যে পরিমান জমি রয়েছে, তাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে হবে।”
আগামী ১২ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে কৃষি দফতরের এক সভায় উপস্থিত থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের। জেলা কৃষি দফতর থেকে কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে আগ্রহী ও যোগ্য কৃষকদের সরকারি ভর্তুকি প্রদানের প্রকল্প সমূহ রূপায়ণের রূপরেখা নির্ধারণের জন্যই ওই সভা ডাকা হয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, ওই সভার আলোচ্যসূচিতে খামারের বিষয়টিও থাকবে। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মলবাবুর কথায়, “কিছু খামারের ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ করা জরুরি। আগামী ১২ ডিসেম্বর কৃষি দফতরের সভায়। খামারগুলোর উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হবে। খামারের পুনরুজ্জীবনে আমরা সব রকম চেষ্টা করব।”