দুরিয়াতে বাম প্রতিনিধিদল। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএম সমর্থকদের উপরে হামলার প্রতিবাদে বুধবার নারায়ণগড়ের খুরশি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুরিয়া গেলেন বাম প্রতিনিধিদল। সেখানে গিয়ে তৃণমূলের ‘অত্যাচার’ থেকে সমর্থকদের বাঁচাতে প্রয়োজনে পাল্টা প্রতিরোধের নিদান দিলেন প্রতিনিধি দলের সদস্য তথা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হরেকৃষ্ণ জানা। এর জেরে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলের।
কেন পাল্টা প্রতিরোধ, এ দিন তার ব্যাখ্যাও দেন হরেকৃষ্ণবাবু। তিনি বলেন, “আমরা কখনও আগে আক্রমণে যাই না। কিন্তু পুলিশকে জানালে অনেক সময় পুলিশ পরে আসে। এক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। এ জন্য আমরা বলেছি, যদি কেউ আক্রমণ করে তবে নিজেদেরই প্রতিরোধ করতে হবে। আর যেখানে আমাদের দলের লোকবল নেই, সেখানে চুপ করে থাকতে হবে।”
গত সোমবার সন্ধ্যায় এই দুরিয়া গ্রামেই তৃণমূল বিজয় মিছিলের নামে সিপিএম সমর্থকদের হামলা করে বলে অভিযোগ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের খাসতালুক নারায়ণগড়ের এই দুরিয়া গ্রামটিতে এখনও সিপিএমের প্রভাব রয়েছে। তবে তৃণমূলও রাজ্যের শাসকদল হওয়ার সুবাদে এই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে। এই এলাকায় গত সোমবার বিজয় মিছিল বের করে তৃণমূল। মিছিল ঘোড়াইপল্লির কাছাকাছি যেতেই গোলমাল বাধে। ভাঙচুর করা হয় চার সিপিএম সমর্থকের বাড়ি। সিপিএমের অভিযোগ ছিল, বাড়ি ভাঙচুরের পরে তৃণমূলের মিছিল বোমা মেরে এগিয়ে যায়। মিছিল আদিবাসী দক্ষিণপল্লির কাছে গেলে আদিবাসী সিপিএম সমর্থকেরা রুখে দাঁড়ান। শুরু হয় সংঘর্ষ। জখম হন দুই মহিলা-সহ চার সিপিএম সমর্থক। ঘটনায় পুলিশ দু’জন তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করে।
এ দিন বাম প্রতিনিধিদল প্রথমেই পৌঁছায় আদিবাসী দক্ষিণপল্লিতে। কথা বলেন আক্রান্তদের সঙ্গে। এ দিন আক্রান্ত সিপিএম সমর্থক পল্টন মুর্মু, মহিলা সমর্থক মঞ্জু মুর্মুরা বলেন, “বোমা মারতে মারতে তৃণমূলের মিছিল আসায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। পরে সবাই মিলে তির-ধনুক নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করি। কিন্তু ওরা সংখ্যায় ছিল পাঁচশো, আমরা ছিলাম চল্লিশ। তাই পারিনি।” পরে পুলিশের ভুমিকাও ইতিবাচক ছিল না বলে অভিযোগ তাঁদের। এই অভিযোগও বাম প্রতিনিধি দলের সামনে তুলেছেন সিপিএম সমর্থকেরা।
এ দিন একটি বৈঠকও করে প্রতিনিধিদলটি। ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা জেলার মাধ্যমে রাজ্য কমিটিতে জানানো হবে বলেও হরেকৃষ্ণবাবু জানান। প্রতিনিধি দলে ছিলেন জেলা কমিটির সদস্য অনিল পাত্র, সিপিআই নেতা প্রবোধ পান্ডা, সিপিএমের জোনাল সম্পাদক ভাস্কর দত্ত প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy