Advertisement
E-Paper

প্রকল্প সফল করতে স্ব-নির্ভর দলেই ভরসা প্রশাসনের

স্ব-সহায়ক দলের মাধ্যমে নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পকে সফল করতে উদ্যোগী হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও। কারণ, এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পে কেবল শৌচাগার তৈরির উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে এমন নয়, আদৌ মানুষ তা ব্যবহার করছেন কিনা তার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৪২

স্ব-সহায়ক দলের মাধ্যমে নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পকে সফল করতে উদ্যোগী হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও। কারণ, এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পে কেবল শৌচাগার তৈরির উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে এমন নয়, আদৌ মানুষ তা ব্যবহার করছেন কিনা তার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনিক কর্তাদের ব্যাখ্যা, স্বনির্ভর দলের সদস্যরা সংশ্লিষ্ট গ্রামেরই মানুষ। তাঁদের বাড়িতেও শৌচাগার হবে। তাঁরা নিজেরা যেমন ব্যবহার করবেন তেমনই অন্যরাও ব্যবহার করছেন কিনা দেখবেন। কেউ ব্যবহার না করলে তাঁকে ব্যবহার করার জন্য উত্‌সাহও দেবেন।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পাপিয়া ঘোষ রায়চৌধুরী বলেন, “মূলত উন্নত মানের শৌচাগার তৈরি ও তা সকলকে ব্যবহার করানো— এই লক্ষ্যেই স্বনির্ভর দলগুলিকে কাজে লাগানো হচ্ছে।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ ও জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা দু’জনে এই পরিকল্পনা করেছেন বলে জেলা পরিষদ জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সেই প্রশিক্ষণের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি মেদিনীপুর সদর ব্লকের মণিদহ ও শিরোমণি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার স্ব-সহায়ক দলের সদস্য গোষ্ঠী ও পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় প্রধানত যে তিনটি বিষয় আলোচনা হয়েছে তা হল, কাজের গুণগত মান যেন উন্নত হয়, সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটি বাড়িতে যেন শৌচাগার থাকে, তা যেন পরিবারের সকলে ব্যবহার করেন।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৯৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত আগেই নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েত হিসাবে পুরস্কার পেয়েছিল। একটি পঞ্চায়েত সমিতিও ওই পুরস্কার পায়। যদিও পরবর্তীকালে সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, পুরস্কৃত ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেক বাড়িতেই শৌচাগার নেই। প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, এর মধ্যে কয়েকটি পরিবার এই প্রকল্পের আওতাতেই আসেনি। আবার কোথাও পুরস্কার পাওয়ার পর একটি পরিবার বিভক্ত হয়েছে। পরবর্তীকালের সমীক্ষা অনুযায়ী, জেলায় মোট পরিবারের সংখ্যা ১১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬২২ টি। যার মধ্যে শৌচাগার রয়েছে এমন পরিবারের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৮৪ হাজার ৮১৭। শুধু তাই নয়, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও নেই শৌচাগার। সম্প্রতি নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পে ফের প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার তৈরির তোড়জোর শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র দেবে ৫১০০ টাকা আর উপভোক্তাকে দিতে হবে ৯০০ টাকা।

কিন্তু মাত্র ৬ হাজার টাকায় কি আদৌ ভাল শৌচাগার নির্মাণ সম্ভব? এই প্রশ্ন ওঠার পরেই এর সঙ্গে একশো দিনের প্রকল্পের সমন্বয় ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয় জেলা। একশো দিনের প্রকল্প থেকে ৫৪০০ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে একটি শৌচাগারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৪০০ টাকা। প্রথমে জেলার ৬০টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েত করা হবে। তার জন্য ওই ৬০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ৭৯ হাজার শৌচাগার তৈরি করার প্রয়োজন। প্রশাসন জানিয়েছে, ২০১৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

আর এই কারণেই স্ব-সহায়ক দলকে কাজে লাগানো বলে প্রশাসন জানিয়েছে। কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কিনা তা বুঝতে স্ব-সহায়ক দলের সদস্যদের যাতে অসুবিধে না হয় তার জন্য রাজমিস্ত্রিদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাছাড়াও উপভোক্তাদের কাছ থেকে ৯০০ টাকা সংগ্রহ করা, সকলে শৌচাগার ব্যবহার করছে কিনা দেখা সব কাজই করবে দল। তার জন্য শৌচাগার পিছু কিছুটা টাকাও দেওয়া হবে দলগুলিকে। ২০১৭ সালের মধ্যেই নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

self help group civic authority clean india project west midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy