Advertisement
E-Paper

প্রতারণা করেছে পুরসভা, আদালতের নির্দেশে মামলা

তৃণমূল পরিচালিত রামজীবনপুর পুরসভার উদ্যোগে চালু হওয়া পিপিপি মডেলের হাসপাতাল থেকে নার্সিং, প্যাথলজি, হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট-সহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং চাকরির নাম করে আগেই টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু প্রশিক্ষণ-চাকরি তো দূর, ঘাটাল মহকুমার অর্ন্তগত এই হাসপাতালটিই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতারিতদের মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে চন্দ্রকোনা থানা রবিবার মামলা রুজু করল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:২৯

তৃণমূল পরিচালিত রামজীবনপুর পুরসভার উদ্যোগে চালু হওয়া পিপিপি মডেলের হাসপাতাল থেকে নার্সিং, প্যাথলজি, হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট-সহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং চাকরির নাম করে আগেই টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু প্রশিক্ষণ-চাকরি তো দূর, ঘাটাল মহকুমার অর্ন্তগত এই হাসপাতালটিই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতারিতদের মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে চন্দ্রকোনা থানা রবিবার মামলা রুজু করল।

চন্দ্রকোনা থানা সূত্রের খবর, আদালতের নির্দেশে পুরসভার চেয়ারম্যান শিবরাম দাস, হাসপাতালের অংশীদার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার-সহ ছ’জনের নামে প্রতারণা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু হয়েছে। পরের বছরেই ঘাটালের রামজীবনপুর-সহ পাঁচটি এলাকায় পুরভোট। তার আগে এমন বিষয়কে অন্যতম হাতিয়ার করেছে বিজেপি। দলের নেতা গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি, “অবিলম্বে দোষীদের ধরতে হবে। টাকা ফেরতেরও ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে আন্দোলন শুরু হবে।”

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শিবরাম দাসের বক্তব্য, “একটা ভাল কাজ করতে কলকাতার একটি সংস্থার সঙ্গে মৌ-চুক্তি হয়েছিল। ওই সংস্থাটিই হাসপাতাল দেখভাল করত। তা ছাড়া টাকা নেওয়ার কথা জানাজানি হতেই পুরসভা হাসপাতালটি বন্ধ করে ওই সংস্থার কর্ণধারকে রামজীবনপুরে আসার আর্জি জানায়। কিন্তু কেউ আসেনি।” তাঁর আরও বক্তব্য, পুরসভা কোনও ভাবেই টাকা নেওয়ার ব্যাপারে যুক্ত নয়। তদন্ত হলেই প্রমাণ হবে।

তবে প্রতারিত যুবক-যুবতীদের প্রশ্ন, পুর-কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। কেননা, পুরসভার ঘরে যৌথ ভাবে হাসপাতালটি চালু হয়েছিল। দেখভাল করার কথা দু’পক্ষেরই। প্রতারিতদের দাবি, হাসপাতালটি চালু হওয়ার পরেই রীতিমতো প্রচার চালিয়ে এজেন্ট পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ-চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। নেওয়া হয় ১৫-২০ হাজার টাকাও। এক যুবকের কথায়, “তখনই যদি পুর-কর্তৃপক্ষ পুলিশ দিয়ে এ সব বন্ধ করতে উদ্যোগী হত, তা হলে এমনটা এড়ানো যেত!”

স্থানীয় সূত্রের খবর, গত পুর নির্বাচনে তৃণমূল রামজীবনপুর পুরসভায় ক্ষমতায় এলে পুর শহরে একটি হাসপাতাল চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ভোটে জিতে পুর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব জমিতে কেন্দ্রীয় সরকারে পিছিয়ে পড়া প্রকল্পের (বিআরজিএফ) মাধ্যমে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে ‘জীবনজ্যোতি’ নামে মাস সাতেক আগে স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদন ছাড়াই ওই হাসপাতালটি চালু করে। আরও অভিযোগ, হাসপাতালটিতে তৃণমূলের কাউন্সিলরের ছেলে, যুব তৃণমূল নেতার স্ত্রী-সহ শাসক দলের লোকজনই বেশি কাজ করতেন।

শহরের কিছু বাসিন্দা জানাচ্ছেন, চালু হওয়ার মাস দু’য়েক পর থেকেই হাসপাতালটি অনিয়মিত ভাবে চলছিল। মাস খানেক আগে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। চালুর পর ৬০ থেকে ২০০ টাকা করে নিয়ে কার্ড চালু করা হয়। ৬০ টাকায় এক মাস, ২০০ টাকায় তিন মাস আউটডোরে চিকিৎসার পরিষেবার সুযোগ পাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তাতে ভাল সাড়াও পড়ে। কেননা, রামজীবনপুরে একটি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও সেটি চলে ‘নাম কা ওয়াস্তে’। ভরসা ঘাটাল বাা আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল।

এই পরিস্থিতিতে রামজীবনপুরে পিপিপি মডেলে এই হাসপাতাল চালু হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছিলেন অনেকেই। প্রায় ৭-৮ হাজার মানুষের থেকে টাকা নিয়ে কার্ডও বিলি করা হয়েছিল। কিন্তু, নানা কেলেঙ্কারিতে হঠাৎই তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এর প্রভাব পুরভোটেও পড়বে বলে মনে করে বিজেপি নেতৃত্ব। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টিকে নিয়ে আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।

ramjibanpur municipality has cheated on cheat ghatal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy