বুধবার দুপুরে ফাঁকা মেদিনীপুরের গাঁধীমোড়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
বৃষ্টির দেখা নেই। অস্বস্তিকর গরমে যেন ঘর ছেড়ে বেরোনোই দায়!
বুধবারের তাপমাত্রা ছিল ৪০.৫ ডিগ্রি। গত সোমবার মেদিনীপুরে পারদ আরও চড়েছিল। তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মঙ্গলবার কিছুটা কমে তা হয় ৪১.৩ ডিগ্রিতে। বুধবারের তাপমাত্রা আরও একটু কমেছে ঠিকই। কিন্তু তাতে হাঁসফাঁস করা পরিস্থিতির এতটুকু অবনতি হয়নি। কারণ, সেই আপেক্ষিক আর্দ্রতা। এ দিন মেদিনীপুরে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৬৯ শতাংশ। তাই গরমে দমবন্ধ করা অবস্থা থেকে রেহাই মেলেনি। মেদিনীপুর কলেজের এন সি রাণা আকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্তা মাখনলাল নন্দগোস্বামী বলেন, “আর্দ্রতার বাড়াবাড়িতেই অস্বস্তি বাড়ছে। এখনই বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই এই অস্বস্তিকর গরম চলবেই।”
গরমের জেরে পথে বেরিয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন বহু মানুষ। পরিস্থিতি দেখে কেউ রাস্তার পাশে একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ বা ঠাণ্ডা পানীয়তে চুমুক দিচ্ছেন। বিকোচ্ছে লস্যিও। কলেজ ছাত্রী অঙ্কিতা সাহা বলেন, “বৈশাখের শেষের দিকে এই গরম ভাবাই যায় না। দুপুরের পর বাড়ি থেকে বেরোতেই ইচ্ছে করছে না। কবে যে একটু বৃষ্টি হবে!” মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা সৌরভ সাহু, পিন্টু গরাইদের কথায়, “দুপুরের পর বাড়ি থেকে বেরোলেই চোখে-মুখে শুকনো গরমের তেজ এসে লাগছে। বিকেলেও ফুরফুরে বাতাসের দেখা মেলা ভার! জানি না আর ক’দিন এই পরিস্থিতি চলবে! একটু বৃষ্টি সত্যিই দরকার।”
কাজের জন্য পথে বেরোতেই হবে। তাই গরমের তেজ এড়াতে অনেকে পথে বেরোলে মুখে ‘মাস্ক’ পড়ছেন। শহরের সোমনাথ সিংহের কথায়, “মাস্ক পড়লে নাকে গরমটা লাগে না। শরীরটাও কিছুটা ঠাণ্ডা থাকে।” প্রচণ্ড গরমে অনেকে অসুস্থ হয়েও পড়ছেন। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবাশিস পাল বলেন, “আর্দ্রতা বেশি হওয়ার ফলেই আবহাওয়ার এই পরিস্থিতি। অনেকে গরমের তেজ সহ্য করতে পারেন না। তাই অসুস্থ বোধ করেন। দিন কয়েক আগে গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে অবশ্য তাঁরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।” ডেবরার বিএমওএইচ রজত পাল বলেন, “তাপপ্রবাহ চলছে। তাই গরমে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।”
পরিস্থিতি দেখে চিকিত্সকদের পরামর্শ, বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় সঙ্গে ছাতা রাখুন। ছাতা নিতে না চাইলে টুপি পড়ুন। সরাসরি মাথায় যেন রোদ না লাগে। সুতির জামাকাপড় পরলে গরমে আরাম পাওয়া যায়। গরমে ঘামের সঙ্গে নুন বেরিয়ে যায় বলে শরীর দুর্বল লাগে। প্রয়োজনে নুন-চিনির জল খান। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, এ বছর এমনিতেই স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তার উপর এই পরিস্থিতি। তাপমাত্রার পারদ যেন চড়ছেই। চড়া রোদে কমবেশি সকলকেই হাঁসফাঁস করা পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
এই অবস্থায় কবে বৃষ্টি নামে, এখন সেই দিকে তাকিয়েই হাপিত্যেশ করে বসে রয়েছেন সকলে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy