Advertisement
E-Paper

পাশের হারে শীর্ষে পূর্ব, মেধায় এগিয়ে পশ্চিম

পাশের হারের নিরিখে মাধ্যমিকের পর উচ্চ-মাধ্যমিকেও রাজ্যে শীর্ষস্থানে রইল পূর্ব মেদিনীপুর। রাজ্যে গড় পাশের হার ৭৮.৪ শতাংশ। সেখানে পূর্বের পড়ুয়াদের পাশের হার প্রায় দশ শতাংশ বেশি, ৮৮ শতাংশ! অন্য দিকে, সম্ভাব্য দশম স্থানে রয়েছেন পশ্চিমের দুই ছাত্রছাত্রী।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৪ ০০:৩০

পাশের হারের নিরিখে মাধ্যমিকের পর উচ্চ-মাধ্যমিকেও রাজ্যে শীর্ষস্থানে রইল পূর্ব মেদিনীপুর। রাজ্যে গড় পাশের হার ৭৮.৪ শতাংশ। সেখানে পূর্বের পড়ুয়াদের পাশের হার প্রায় দশ শতাংশ বেশি, ৮৮ শতাংশ! অন্য দিকে, সম্ভাব্য দশম স্থানে রয়েছেন পশ্চিমের দুই ছাত্রছাত্রী।

গত বছরে উচ্চ-মাধ্যমিকে পাশের হারে শীর্ষে ছিল কলকাতা। এ বছর কলকাতাকে টপকে সেই জায়গা নিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা। কলকাতার পড়ুয়াদের পাশের হার ৮৬ শতাংশ। পাশের হারে শীর্ষস্থান পেলেও মেধা তালিকায় সম্ভাব্য প্রথম দশে নেই এই জেলার কোনও ছাত্র-ছাত্রী।

তবে ভাল ফল করেছে জেলার বেশ কয়েক জন পড়ুয়া। কাঁথির মুগবেড়িয়া বিদ্যালয়ের অরিন্দম মণ্ডল ৪৬৩ নম্বর পেয়েছে। তমলুক শহরের রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী প্রান্তিকা দাস, অভীপ্সা দত্ত ৪৬২ পেয়েছে নম্বর।

উচ্চ-মাধ্যমিক সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার পূর্বে উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল ৪০ হাজার ৬১৭ জন। এদের মধ্যে পাশ করেছে ৩৫ হাজার ৭৪৫ জন। তবে তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের দুই ছাত্র এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান পেলেও উচ্চ-মাধ্যমিকে তেমন উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায়নি। এ কথা স্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক সোমনাথ মিশ্র। তিনি বলেন, “স্কুলের সামগ্রিক ফল ভাল হলেও মেধা তালিকায় কেউ স্থান না পাওয়ায় আমরা কিছুটা হতাশ!”

তমলুকের রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা মজুমদার জানিয়েছেন, স্কুলের দুই ছাত্রী ভাল ফল করেছে। যদিও কয়েক নম্বরের জন্য তাদের মেধা তালিকায় স্থান হয়নি। কৃষ্ণাদেবীর মতে, “জেলার ছাত্র-ছাত্রীরা বিজ্ঞান বিষয়ে ভাল নম্বর পেলেও বাংলা-ইংরেজির মতো ভাষায় খামতির জন্য নম্বর কিছুটা কম পেয়েছে।” তাঁর পরামর্শ, অভিভাবকরা বিষয়টিতে আরও গুরুত্ব দিলে সামগ্রিক ফল ভাল হবে বলে আশা করছি।

অন্য দিকে, মাধ্যমিকের পরে উচ্চমাধ্যমিকেও পাশের হারে পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরকে অনেকটা পিছনে ফেলেছে পূর্ব মেদিনীপুর। তবে রাজ্যের সম্ভাব্য মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। সম্ভাব্য দশম স্থানে রয়েছেন পশ্চিমের দুই ছাত্রছাত্রী। মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র অরিত্রজিৎ গুপ্তের প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৭। অন্য দিকে, মেদিনীপুরের অলিগঞ্জ ঋষি রাজনারায়ণ স্কুলের ছাত্রী নীমিষা কুঙর-এরও প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৭। এই তালিকায় অবশ্য পূর্ব মেদিনীপুরের জায়গা হয়নি।

এ বার রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিকে পাশের হার ৭৮.৪২ শতাংশ। গত তিন বছরের থেকে যা অনেকটাই বেশি। রাজ্যের হার যেখানে ৭৮.৪২ শতাংশ, সেখানে পশ্চিম মেদিনীপুরের পাশের হার ৮২ শতাংশ। পশ্চিমে এ বার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৪৯ হাজার ৩৯৫। এর মধ্যে ছাত্র ২৬ হাজার ৫৮৪। ছাত্রী ২২ হাজার ৮১১। কেন পাশের হারে পূর্বের থেকে পিছিয়ে থাকে পশ্চিম?

শিক্ষকদের একাংশ মনে করেন, এর একটা বড় কারণ পশ্চিম মেদিনীপুরের মধ্যেই রয়েছে জঙ্গলমহল। যেখানে শিক্ষিতের হার তুলনায় কম। পশ্চিম মেদিনীপুরের মধ্যে এমন বেশ কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে শিক্ষার আলো এখনও সে ভাবে পৌঁছয়নি। মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের (বালক) শিক্ষক তথা রাঙামাটি হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক মধুসূদন গাঁতাইত বলেন, “বরাবর পাশের হারে পূর্ব মেদিনীপুর আগে থাকে। কারণ, ওই জেলায় শিক্ষিতের হার বেশি। অভিভাবকেরা অনেক বেশি সচেতন। ছেলেমেদের উচ্চশিক্ষিত করার ক্ষেত্রে তাঁদের আগ্রহ থাকে। এ জন্য ছোট থেকেই তাঁরা ছেলেমেয়েদের উপরে নজর রাখেন।” তাঁর কথায়, এখন পশ্চিম মেদিনীপুরও পড়াশোনার ক্ষেত্রে উন্নতি করছে। জেলার যে সব এলাকা পড়াশোনার দিক থেকে পিছিয়ে ছিল, সেখানে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে উঠছে। এর সুফল আগামী দিনে মিলবে।

এমনটাই মনে করেন অলিগঞ্জ ঋষি রাজনারায়ণ স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক সুব্রত সরকারও। তবে তাঁর মত, “এখনই পাশের হারে পূর্ব মেদিনীপুরের থেকে এগোনো কঠিন। আশা করি, আগামী দিনে পশ্চিম মেদিনীপুরেও পাশের হার বাড়বে।”

medinipur higher secondary result
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy