Advertisement
E-Paper

পড়ে সরকারি প্রকল্পের টাকা, পিছোচ্ছে উন্নয়ন

টাকা এসেছিল ২০০৭-০৮ আর্থিক বছরে। পরিকল্পনা ছিল বেলপাহাড়ি ব্লকে অবস্থিত ল্যাম্পসের (লার্জ সাইজ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি) দু’টি গুদাম তৈরি করা হবে। কিন্তু কোথায় কী? গুদাম তো হয়ইনি, দীর্ঘদিন সেই টাকার হদিসই মেলেনি। অবশেষে জানা গিয়েছে, টাকা পড়ে রয়েছে তফসিলি জাতি-উপজাতি বিত্ত নিগমের অফিসে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:১৭

টাকা এসেছিল ২০০৭-০৮ আর্থিক বছরে। পরিকল্পনা ছিল বেলপাহাড়ি ব্লকে অবস্থিত ল্যাম্পসের (লার্জ সাইজ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি) দু’টি গুদাম তৈরি করা হবে। কিন্তু কোথায় কী? গুদাম তো হয়ইনি, দীর্ঘদিন সেই টাকার হদিসই মেলেনি। অবশেষে জানা গিয়েছে, টাকা পড়ে রয়েছে তফসিলি জাতি-উপজাতি বিত্ত নিগমের অফিসে।

একই অবস্থা নারায়ণগড়ে বাগান তৈরির টাকারও। জেলা বলছে, পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নের জন্য বাগান তৈরির বরাদ্দ টাকা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ২০১১ সালে। অথচ প্রথম দিকে ব্লক বলেছিল, টাকার হদিস নেই। এখন খবর, সেই টাকারও ঠাঁই হয়েছে তফসিলি জাতি-উপজাতি বিত্ত নিগমের অফিসেই।

এই দুই প্রকল্প ছাড়া, রামগড় হাইস্কুলে হস্টেল তৈরির জন্য ২০১০ সালে প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা পেয়েছিল জেলা। জেলা পরিষদের মাধ্যমে সেই কাজ করার কথা ছিল। মাওবাদী সমস্যার কারণে সেই সময় কাজ করা যায়নি। ফলে জেলাশাসককে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০১১ সালের পর থেকে মাওবাদী সমস্যা নেই। কিন্তু সেই সময় আবার প্রকল্পের বরাদ্দের হদিস না মেলায় কাজ শুরুই হয়নি। পরে জানা যায় জেলাশাসকের কাছে পড়ে রয়েছে সেই টাকা। বিষয়টি জানার পরে ওই টাকা যাতে স্কুলকে দেওয়া হয় সে ব্যাপারে উদ্যোগী হয় জেলা পরিষদ।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এখন ওই টাকায় কী করে কাজ হবে? ২০১০ সালে জিনিসপত্রের দাম যা ছিল, ২০১৪ সালে সব ক্ষেত্রেই মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে যে কোনও নির্মাণ কাজে আগের থেকে খরচ বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ! ফলে যে প্রকল্প রিপোর্টের ভিত্তিতে স্কুলকে ওই টাকা দেওয়া হয়েছিল বর্তমানে যে আদৌ তাতে কাজ হবে না তা নিয়ে কারও সংশয় নেই। ২০১১ সাল থেকে মাওবাদী সমস্যা না থাকলে আড়াই বছরের মধ্যেও কেন ওই টাকার খোঁজ মেলেনি, কেনই বা স্কুলকে দেওয়া গেল না এ সব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি প্রশাসনিক কর্তাদের কাছ থেকে।

২০০৭-০৮ সালে বেলপাহাড়ি ব্লকের গিদিশাল ও কাঁকড়াঝোর— এই দু’জায়গায় ল্যাম্পসের দু’টি গুদাম তৈরি করতে প্রায় সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল সরকার। এলাকার গরিব মানুষ যাতে কেন্দু পাতার সঠিক মজুরি পান সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। আর কেন্দু পাতা রাখার জন্যই এই গুদাম। এ ছাড়া ল্যাম্পসের মাধ্যমে এলাকার কৃষির উন্নয়নে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। ২০০৭ সালে ওই টাকা ব্লককে দেওয়া হয়েছিল। এমন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও টাকা পড়ে রইল, অথচ কাজ হল না। একই ভাবে নারায়ণগড় ব্লকের তরফবরপণ্ড ও গনুয়াএই দু’টি জায়গায় বাগান তৈরির জন্য ১০ লক্ষ করে মোট ২০ লক্ষ টাকা পেয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। ২০১১ সালে ব্লকে থাকা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের ইন্সপেক্টর ও বিডিও দু’জনে মিলে ওই কাজ করার কথা ছিল।

তাহলে সেই টাকা গেল কোথায়? জানা গিয়েছে, ব্লকের নামে চেক দেওয়া হলেও ব্লকের তরফ থেকে ওই টাকা তোলাই হয়নি। টাকা পড়ে রয়েছে তফসিলি জাতি- উপজাতি বিত্ত নিগমের অফিসেই।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ অবশ্য বলেন, “উন্নয়নের টাকা ফেলে রাখা যাবে না। তাই দ্রুত ওই টাকা স্কুলকে দিতে বলেছি।” প্রশ্ন উঠছে, প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা পড়ে রইল সরকারি অফিসে। সেই টাকা তোলা না হওয়ায় এক দিকে যেমন কয়েক বছর পিছিয়ে গেল ওই এলাকার উন্নয়ন, এখন টাকা মিললেও ওই টাকায় সেই কাজ করা কঠিন হবে। ফলে প্রশাসনিক উদাসীনতার ফল ভোগ করছেন সাধারণ মানুষ।

government project development work medinipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy