Advertisement
১৬ জুন ২০২৪

বন্ধ কাউন্টার, ফোন বিল জমায় নাভিশ্বাস মেদিনীপুরে

কাউন্টার রয়েছে তিনটি। কিন্তু একটির বেশি খোলা থাকে না। ফলে শহরের পঞ্চুরচকে বিএসএনএল অফিসে টেলিফোন বিল জমা দিতে আসা গ্রাহকদের লম্বা লাইনে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। ন্যূনতম দু’টি কাউন্টার খোলার দাবিতে একাধিকবার সরব হয়েছেন গ্রাহকেরা। কিন্তু পদক্ষেপ করেননি বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ। বিকল টেলিফোন লাইন সারানোর ক্ষেত্রেও দেরির অভিযোগ উঠছে।

দু’টি কাউন্টার বন্ধ। গ্রাহকদের লম্বা লাইন বিএসএনএল অফিসে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

দু’টি কাউন্টার বন্ধ। গ্রাহকদের লম্বা লাইন বিএসএনএল অফিসে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৪ ০১:১৬
Share: Save:

কাউন্টার রয়েছে তিনটি। কিন্তু একটির বেশি খোলা থাকে না। ফলে শহরের পঞ্চুরচকে বিএসএনএল অফিসে টেলিফোন বিল জমা দিতে আসা গ্রাহকদের লম্বা লাইনে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। ন্যূনতম দু’টি কাউন্টার খোলার দাবিতে একাধিকবার সরব হয়েছেন গ্রাহকেরা। কিন্তু পদক্ষেপ করেননি বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ। বিকল টেলিফোন লাইন সারানোর ক্ষেত্রেও দেরির অভিযোগ উঠছে।

মেদিনীপুরের বিএসএনএলের আধিকারিক বিলাস ঘোষ বলেন, “কর্মী সঙ্কটের কারণে একাধিক কাউন্টার খোলা যায়নি।” তবে বিকল হওয়া টেলিফোন সারানোর ক্ষেত্রে খুব একটা দেরি হয় না বলেই দাবি কর্তৃপক্ষের। বিলাসবাবুর কথায়, “কোথাও রাস্তার কাজ হলে বা অন্য সমস্যা দেখা দিলে কিছু ক্ষেত্রে দেরি হয়। নতুবা দ্রুত সারিয়ে দেওয়া হয়।”

এই দাবি মানতে নারাজ বাড় মানিকপুরের বাসিন্দা হিমাদ্রী দে। তাঁর কথায়, “দু’মাস ধরে টেলিফোন বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। বাড়িতে অসুস্থ মানুষ রয়েছে। কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও বিকল ফোন সারানো হয়নি।” কর্তৃপক্ষ জানান, অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

বর্তমানে বেসরকারি মোবাইল ও টেলিফোন সংস্থাগুলি রমরমিয়ে ব্যবসা বাড়িয়ে চলেছে। ওই সব সংস্থা নিজস্ব কর্মী দিয়ে বাড়ি থেকেও বিল সংগ্রহ করছে। সেখানে বিএসএনএল-এর এই পরিষেবার ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা। মেদিনীপুর শহরে লক্ষাধিক মানুষের বাস। বর্তমানে মোবাইলের রমরমার বাজারে। তবে এখনও অনেকে ল্যান্ডলাইন ব্যবহার করেন। ইন্টারনেট, ফ্যাক্স-সহ নানা কারণেও অনেকে ল্যান্ডলাইন ব্যবহার করেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রতি মাসে বাড়িতে বিল আসে। টেলিফোন কার্যালয়ে সেই বিল জমাও দিতে যেতে হয়। এক সময় বিল জমা দেওয়ার বিভাগটিকে সুন্দর ও ঝকঝকে করে সাজানোও হয়েছিল। বসানো হয়েছিল বাতানুকূল যন্ত্রও। ছিল তিনটি কাউন্টার। বিল জমা দিতে গিয়ে মানুষকে লাইনে দাঁড়াতে হত না। বড় জোর লাইনে ২-৫ জন লোক থাকতেন। ফলে ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই বিল জমা দেওয়া যেত। বাতানকূল যন্ত্র থাকায় কিছুক্ষণ দাঁড়াতে হলেও খুব একটা সমস্যা হত না।

তবে এখন অবস্থাটা পাল্টে গিয়েছে। বাতানুকূল যন্ত্র আর চলে না। তিনটি কাউন্টারের পরিবর্তে খোলা থাকে মাত্র একটি কাউন্টার। দীর্ঘ লাইন পৌঁছে যায় অফিসের বাইরেও। বিল জমা দিতে গেলে ন্যুনতম এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় নিয়ে বেরোতে হবে। প্রতিটি মানুষেরই কাজের চূড়ান্ত ব্যস্ততা। ব্যস্ততার মাঝে কী ভাবে বিল জমা দেওয়ার জন্য এত সময় দেওয়া সম্ভব? কেউ সরকারি অফিসে কাজ করেন, কেউ স্কুলে বা কলেজে পড়ান, কেউ বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। কাজের দিনেই বিএসএনএল-এর অফিস খোলা থাকে। অন্য দিন সরকারি অফিসের মতোই টেলিফোন অফিস বন্ধ থাকে।

বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কর্মী সঙ্কটের কথা উর্ধ্বতন আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। কর্মী না দিলে সমস্যা মেটানো সম্ভব নয়। যে সব কর্মী রয়েছেন বিল দেওয়ার সময় তাঁদের ওই কাজে লাগিয়ে গ্রাহকদের পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয় না কেন? কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সেই চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগ কর্মীই তা মানতে রাজি হননি। ফলে গ্রাহকদের দুর্ভোগ কমেনি। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই বেসরকারি সংস্থাগুলি রমরমিয়ে ব্যবসা করে চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

counter close of bsnl office medinipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE