তিন মাস ধরে কারখানা বন্ধ। শ্রমিক-অসন্তোষ বাড়ছে। সামনে আবার লোকসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে বন্ধ কারখানা চালু করতে ফের উদ্যোগী হল তৃণমূল। মেদিনীপুরের কেশর মাল্টিয়ান কটন মিল খোলা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। ছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। বৈঠকে মালিকপক্ষ আশ্বাস দেন, কারখানা খোলার সব রকম চেষ্টা চলছে। আর্থিক সংস্থান হলে যত শীঘ্র সম্ভব মিল চালু হবে। মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “দ্বিপাক্ষিক বৈঠক মোটের উপর ফলপ্রসূই হয়েছে। মালিকপক্ষ তিন সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। আমরা এই সময়টুকু দিতে রাজি হয়েছি।”
গত জানুয়ারির গড়া থেকেই বন্ধ রয়েছে মেদিনীপুর শহরের এই সুতো কল। কাজ হারিয়েছেন প্রায় ৮০০ জন শ্রমিক। এর মধ্যে প্রায় ২০০ জন স্থায়ী শ্রমিক। বাকিরা অস্থায়ী শ্রমিক এবং ঠিকাশ্রমিক। স্থায়ী শ্রমিকেরা কাজ করলে ৩৩৫ টাকা করে মাইনে পেতেন। অস্থায়ী শ্রমিকেরা ১৮০ টাকা করে মাইনে পেতেন। যাঁরা ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতেন, তাঁদের কারও দিনে ১৬০টাকা, কারও বা ১২৫ টাকা মাইনে ছিল। কারখানা বন্ধের আগের চার-পাঁচ মাস শ্রমিকেরা নিয়মিত কাজ পাচ্ছিলেন না। ফলে, তখন থেকেই সমস্যা হচ্ছিল। আচমকা কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা সঙ্কটে পড়েন। এখন এঁদের অনেকেরই নুন আনতে পান্তা ফুরনো দশা।
এক সময় এই কারখানাটি বিড়লা গোষ্ঠীর ছিল। পরে অন্য সংস্থা কিনে নেয়। মিলের নামও পাল্টায়। বৃহস্পতিবার রাতের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে একদিকে ছিলেন কারখানার মালিক পবন পাটোরিয়া-সহ অন্য আধিকারিকেরা, অন্য দিকে ছিলেন মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতি, পুরপ্রধান প্রণব বসু, তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি দীনেন রায় প্রমুখ। বৈঠকে মালিকপক্ষ জানান, দীর্ঘদিন ধরে কারখানা লোকসানে চলছে। ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছিল। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা কারখানা বন্ধ করেন। গত মার্চে কলকাতায় শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুও এই কারখানা খোলা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইএনটিটিইউসি নেতা শশধর পলমল, পার্থ ঘনা প্রমুখ। শুক্রবার শশধরবাবু বলেন, “আমরা যত দ্রুত সম্ভব কারখানা চালুর দাবি জানিয়েছি। সেই সঙ্গে শ্রমিকদের কিছু আর্থিক সাহায্যেরও দাবি জানিয়েছি।” বিধায়ক মৃগেনবাবুর কথায়, “মালিকপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা ঋণের ব্যবস্থা করছেন। ঋণ না পেলে কারখানা চালু করা যাবে না। আমরা জানিয়েছি, যে করেই হোক কারখানা চালু করতে হবে। তিন সপ্তাহ পরে এ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy