Advertisement
E-Paper

ভোটে জেতার পরে কেশপুরে গিয়ে খুনের রাজনীতি বন্ধের আর্জি দেবের

দেশের বাড়ির এলাকা কেশপুর দিয়ে প্রথম প্রচার শুরু করেছিলেন। বিপুল ভোটে জেতার পরও সেই কেশপুরেই প্রথম পা রাখলেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ দীপক অধিকারী মানে দেব। রাজনৈতিক সংঘর্ষ, খুনোখুনির সূত্রে বারবার শিরোনামে এসেছে কেশপুর। শনিবার সেখানে পৌঁছে তাই শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানালেন টলিউডের সুপারস্টার।

সুমন ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৪ ০২:৪৩
মাধ্যমিকে কৃতী রিমি ঘোষকে সংবর্ধনা। —নিজস্ব চিত্র।

মাধ্যমিকে কৃতী রিমি ঘোষকে সংবর্ধনা। —নিজস্ব চিত্র।

দেশের বাড়ির এলাকা কেশপুর দিয়ে প্রথম প্রচার শুরু করেছিলেন।

বিপুল ভোটে জেতার পরও সেই কেশপুরেই প্রথম পা রাখলেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ দীপক অধিকারী মানে দেব। রাজনৈতিক সংঘর্ষ, খুনোখুনির সূত্রে বারবার শিরোনামে এসেছে কেশপুর। শনিবার সেখানে পৌঁছে তাই শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানালেন টলিউডের সুপারস্টার। সাফ জানিয়ে দিলেন, “আমি চাই না, ফিরোজ আলির মতো আর কেউ শহিদ হোক। এই খুনের রাজনীতিকে মাটিতে পুঁতে দিন।”

গত বুধবার কেশপুরের চরকা গ্রামে তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষ বাধে। মাথায় চোট পেয়ে মারা যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা ফিরোজ আলি। এ দিন বিকেলে কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতি আয়োজিত সংবর্ধনা সভা সেরে চরকা গ্রামেও যান দেব। নিহত ফিরোজের স্ত্রী লায়লা খাতুন ও ছেলে আনজাদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি, সমবেদনা জানান। দলের তরফে ফিরোজের পরিবারকে অর্থসাহায্যও করা হয়।

চরকা গ্রামের সংঘর্ষে ফিরোজের মৃত্যুর ঘটনায় ৭২ জন সিপিএম নেতা-কর্মীর নামে তৃণমূলের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৩০ জন। ধরা না পড়লেও অভিযুক্তের তালিকায় নাম রয়েছে দেবের জেঠা সিপিএমের কেশপুর জোনাল কমিটির সদস্য শক্তিপদ অধিকারীরও। দেব অবশ্য এ দিন সে প্রসঙ্গে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি শুধু বলেন, “কে অভিযুক্ত তা তো পরে বোঝা যাবে।”

চরকা গ্রামে জখম তৃণমূল সমর্থকের সঙ্গে নতুন সাংসদ।

এ দিন বারবারই খুনোখুনির রাজনীতি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী। নিহত তৃণমূল নেতার পরিজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে দেব বলেন, “আমি কোনও রাজনৈতিক দলের নাম বলছি না। সব দলেই কিছু মানুষ থাকে, যারা খারাপ কাজ করে। আমরা তা মেনে নিয়ে বোকামি করি।” দেবের মতে, রাজনীতির দলাদলিতে নেতারা মারা যান না, যাঁরা খেটে খান মারা পরেন তাঁরাই। এক জনকে খুন করলে শুধু তাঁকে মারা হয় না, গোটা পরিবারটাকেই মেরে ফেলা হয় বলেও মনে করিয়ে দেন দেব। তাই তাঁর আর্জি, “এই হানাহানি, মারামারির রাজনীতি বন্ধ করুন। দলকে মারার জন্য তো ভোট রয়েছে। ভোট দিয়ে হারিয়ে দিন।”

ভোটে জেতার পর এ দিনই প্রথম নিজের নির্বাচনী এলাকায় এলেন দেব। বেলা পৌনে একটা নাগাদ তিনি প্রথমে ঘাটাল শহরে আসেন। প্রচারের সময় যে বাড়িটায় থাকতেন, সেই ‘দেবালয়’-এ ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম নিয়ে কেশপুর রওনা দেন নব-নির্বাচিত সাংসদ। দুপুরে ছিল এলাহি ভোজের ব্যবস্থা। ভাত, ডাল, চিংড়ি, মাংস, চাটনি, দই সবই ছিল মেনুতে। নিরাপত্তারক্ষীদের যত্ন করে করে খাওয়ান তিনি। কেশপুর অডিটোরিয়ামে এ দিন সাংসদকে সংবর্ধনা জানানোর আয়োজন করেছিল কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতি। প্রথমেই সেখানে যান দেব। সেখানে তিনি বলেন, “আমি শান্তি চাই। আমরা কাউকে আঘাত করব না। ভালোবাসা দিয়ে এগোতে চাই।” দেবের সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, বিধায়ক শঙ্কর দোলুই, বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো, কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ, জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ প্রমুখ।

কেশপুর থেকে ঘাটালে ফিরে আরও একটি সংবর্ধনা সভায় যান দেব। ঘাটাল শহরের বেলপুকুরে তৃণমূল আয়োজিত সেই সভায় ঘাটাল ১ ও ২ ব্লক, দাসপুরের দলীয় নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। দেব আবার সংবর্ধনা জানান মাধ্যমিকে কৃতী রিমি ঘোষকে। তারকা সাংসদকে দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন হাজার চারেক উৎসাহী জনতা। তাঁকে নির্বাচিত করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান দেব। এখানেও রাজনৈতিক হিংসা বন্ধ করে উন্নয়নে জোর দেওয়ার বার্তা দেন তিনি। দেবের আশ্বাস, ঘাটালের উন্নয়নে তিনি যথাসাধ্য করবেন। সাংসদ তহবিলের টাকার বাইরেও উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ জানাবেন। শু্যটিংয়ের ফাঁকে সময় পেলেই নিজের নির্বাচনী এলাকায় আসবেন বলেও জানান সুপারস্টার। তবে সব ছাপিয়ে তাঁর আর্জি ছিল একটাই, “উন্নয়ন নিয়ে ভাবুন। আর শান্তি বজায় রাখুন।”

(সহ-প্রতিবেদন: অভিজিৎ চক্রবর্তী)

dev sumon gosh keshpu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy