মঙ্গলবারের রেল অবরোধের পরে চাপের মুখে পড়ে আর অবরোধ নয়, এ বার লাইনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাল ডেবরার তৃণমূলের একাংশ। বুধবার বালিচক স্টেশনে তৃণমূলের ওই কর্মসূচির কথা অবশ্য ব্লক তৃণমূলের কাছে অজানাই রয়ে গিয়েছে। এ দিনও তৃণমূল ব্লক সভাপতি রতন দে বা তাঁর অনুগামীদের কাউকেই ওই কর্মসূচিতে সামিল হতে দেখা যায়নি। বরং তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক অলোক আচার্যের নেতৃত্বে চলা ওই কর্মসূচিতে সামিল হতে খড়্গপুর থেকে ছুটে গিয়েছিলেন জেলা কোর কমিটির সদস্য জহরলাল পাল। আর এতেই আরও জল্পনা বাড়ল ডেবরায় তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব ঘিরে।
রেলের ভাড়া মাশুল বৃদ্ধির পরে কংগ্রেস, এসইউসি ও বামেদের পরে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নেমে পড়েছে তৃণমূলও। গত সোমবার থেকে এক সপ্তাহ ব্যাপী এই অবস্থান বিক্ষোভ ও মিছিলের মাধ্যমে বিজেপির রেলভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানানো হবে বলে ঘোষণা করেছিল। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার ডেবরা ব্লকের রাধামোহনপুর স্টেশনে অবস্থান বিক্ষোভের পরে লাইনে নেমে রেল অবরোধ করে তৃণমূল। অবরোধে আটকে পড়ে সাঁতরাগাছিগামী একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন। কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা সাধারণ সম্পাদক অলোক আচার্য। বনধ্-অবরোধ তৃণমূলের নীতি বিরুদ্ধ। তাই ওই দিনের ট্রেন অবরোধ ঘিরে শুরু হয় সমালোচনা। দলের ঝাণ্ডা নিয়ে কেউ এই কর্মসূচি করেছেন বলে দায় এড়িয়েছিলেন ডেবরা ব্লক তৃণমূল সভাপতি রতন দে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ও জানান, তাঁর দল এই অবরোধকে সমর্থন করে না।
এতেই চাপে পড়ে যান তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অলোক আচার্য ও তাঁর অনুগামীরা। মঙ্গলবার রেল মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত কোনও লোকাল ট্রেনে ভাড়া বাড়ছে না। তারপরও বুধবার অলোকবাবুরা নির্ধারিত কর্মসূচি মেনে আইএনটিটিইউসি-র ব্যানারে বালিচক স্টেশনের বাইরে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা ১১টা বেজে ২০মিনিটে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন অলোকবাবুরা। এ দিন এসইউসি মেদিনীপুর, ডেবরাতেও রেল অবরোধ করে।
এ দিনের কর্মসূচি নিয়ে রতনবাবু বলেন, “মঙ্গলবার যাঁরা রেল অবরোধ করেছিল তাঁরাই এ দিনও বালিচকে বিক্ষোভ দেখিয়েছে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। ব্লকের অনুমতি না নিয়ে এইসব করায় আমি জেলা সভাপতিকে জানিয়েছি।” আর অলোকবাবুর বক্তব্য, “আমি জেলা সাধারণ সম্পাদক ।আমি কেন ব্লকের কমিটির অনুমতি নিতে যাব? আমি রাজ্য কমিটির অনুমতি নিয়েছি।” তবে এ দিনের কর্মসূচির কথা স্বীকার করে জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “দল মানুষের অসুবিধা করে অবরোধের পক্ষে নয়। তাই ও দিন বালিচকে অবরোধ নয়, লাইনের ওপরে মিছিল করে প্রতিবাদ জানিয়েছে আমাদের কয়েকজন।” খড়্গপুরের ডিআরএম গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কয়েকটি স্টেশনে কয়েক মিনিটের জন্য ট্রেন আটকানো হয়েছিল। আমরা রেলের বিধি মেনে ব্যবস্থা নেব।”