Advertisement
E-Paper

মহিলা ভক্তদের ঠেকাতে দেবের জন্য প্রমীলা পুলিশ

‘খোকাবাবু’ প্রচারে বেরোলে দিদিরা তো উঁকি মারবেই! শুধু দিদি কেন, কাকিমা, মাসিমা, এমনকী ঠাকুমার বয়সী মহিলারাও একটি বার তাঁকে চোখের দেখা দেখতে পাগল। ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দীপক অধিকারী মানে সুপারস্টার দেবকে নিয়ে মহিলা ভক্তদের এই উন্মাদনা কী পর্যায়ে পৌঁছতে পারে, তার আভাস ইতিমধ্যে পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ-প্রশাসন।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৪ ০১:৫৫
অরবিন্দ স্টেডিয়ামে দেবের কর্মিসভায় মহিলা পুলিশ।—ফাইল চিত্র।

অরবিন্দ স্টেডিয়ামে দেবের কর্মিসভায় মহিলা পুলিশ।—ফাইল চিত্র।

‘খোকাবাবু’ প্রচারে বেরোলে দিদিরা তো উঁকি মারবেই!

শুধু দিদি কেন, কাকিমা, মাসিমা, এমনকী ঠাকুমার বয়সী মহিলারাও একটি বার তাঁকে চোখের দেখা দেখতে পাগল। ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দীপক অধিকারী মানে সুপারস্টার দেবকে নিয়ে মহিলা ভক্তদের এই উন্মাদনা কী পর্যায়ে পৌঁছতে পারে, তার আভাস ইতিমধ্যে পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ-প্রশাসন। তা-ও দেব পুরোদস্তুর প্রচারে নামেননি। নামলে কী হবে, তা ভাবাচ্ছে পুলিশকে। তাই, দেবের প্রচার চলাকালীন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশেষ মহিলা পুলিশ দল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, মহিলা হোমগার্ড, কনস্টেবলদের নিয়ে বিশেষ এই দল গড়া হচ্ছে। উর্দি ও সাদা পোশাকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবেন তাঁরা। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলছিলেন, “দেবের প্রচার কর্মসূচিতে মহিলা পুলিশ রাখতেই হবে। না হলে ওঁকে ঘিরে মহিলাদের এই হুড়োহুড়ি-ঠেলাঠেলি সামলাবে কে?”

তৃণমূল সূত্রের খবর, কাল, শনিবার থেকে পুরোদমে প্রচার শুরু করবেন নায়ক। প্রথম দিন ঘাটালে রোড শো করার কথা রয়েছে তাঁর। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রচারের পুরো সময়টাই দেবের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন মহিলা পুলিশকর্মীরা। মহিলা পুলিশ রাখার প্রস্তাবটা গিয়েছিল জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফেই। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্‌ ঘোষ বলেন, “দেব অসম্ভব জনপ্রিয়। সব বয়সের মানুষ তাঁর কাছাকাছি পৌঁছনোর চেষ্টা করে। বিশেষ করে নানা বয়সের মেয়ে-বউরা। তার মধ্যেও যাতে সুষ্ঠু ভাবে প্রচার হয়, পুলিশ নিশ্চয়ই সেই ব্যবস্থা করবে।” তারকা প্রার্থীর প্রচারের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে আজ, শুক্রবার ঘাটালে যাওয়ার কথা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের। তিনি বলেন, “প্রচারে যাতে অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে সে জন্য সব বন্দোবস্তই করছি।”

গত ১৮ মার্চ মেদিনীপুর শহরে তৃণমূলের কর্মিসভায় যোগ দিতে এসেছিলেন দেব। সে দিন অরবিন্দ স্টেডিয়ামে অত্যুত্‌সাহী মহিলা ভক্তদের উন্মাদনা সামলাতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছিল ১৫০ জন মহিলা পুলিশকর্মীকে। একটা সময় মঞ্চের সামনের ব্যারিকেড ভেঙে পড়ার জোগাড় হয়। পুলিশ সুপার ভারতীদেবী নিজে তখন পরিস্থিতি সামলেছিলেন।

২০ মার্চ দেব যখন কেশপুরের মহিষদায় দেশের বাড়ি গিয়েছিলেন, তখনকার অভিজ্ঞতাও পুলিশের কাছে স্বস্তির ছিল না। ওই দিন নিরাপত্তার দায়িত্বে মোট ১৫০ জন পুলিশকর্মী ছিলেন। তার মধ্যে ৩০ জন মহিলা। ১০ জন ছিলেন কেশপুর সদরে, যেখানে দেব সভা করেন। বাকি ২০ জন ছিলেন মহিষদায়, বাড়ির আশপাশে। তাতেও অত্যুত্‌সাহী মহিলা ভক্তদের সামলাতে হিমসিম খেতে হয়েছিল। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “দেবের মহিলা-ফ্যানের সংখ্যা যে কত হতে পারে, তা সে দিন টের পেয়েছি। দেবকে দেখতে দুই তরুণী বর্ধমান থেকে কেশপুরে এসেছিলেন। এ থেকেই বোঝা যায় উন্মাদনা কতটা।”

পুলিশকে সব থেকে বেশি বেগ পেতে হয়েছে গত মঙ্গলবার। সে দিন রাত সাড়ে দশটা নাগাদ দেব গিয়েছিলেন ঘাটালের বাম প্রার্থী সন্তোষ রানার বাড়িতে। রাতের অন্ধকারে প্রায় নিঃসাড়ে মেদিনীপুরের বার্জটাউনে সন্তোষবাবুর বাড়িতে ঢুকেছিলেন দেব। তবে খবরটা চাউর হতে দেরি হয়নি। সেই রাতে তড়িঘড়ি মহিলা পুলিশ মোতায়েন করা যায়নি। ফলে, দেব বেরোনোর পরে অত্যুত্‌সাহীদের উন্মাদনায় তুমুল বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। সেই ভিড়েও একটা বড় অংশ ছিল মহিলা ফ্যান। তাদের মধ্যে থেকে বের করে এনে কোনওমতে গাড়িতে তোলা হয় টলিউডের সুপারস্টারকে।

মঙ্গলবারের পর আর ঝঁুকি নিতে চাইছে না পুলিশ। সে জন্যই দেবের প্রচারে মহিলা পুলিশ রাখার সিদ্ধান্ত। আর এই সিদ্ধান্তে যে সব মহিলা পুলিশকর্মীর শিকে ছিঁড়তে চলেছে, তাঁরা বেজায় খুশি। কেউ কেউ অটোগ্রাফের খাতা গোছানো শুরু করেছেন। এক মহিলা পুলিশকর্মী তো বলেই ফেললেন, “কাজের দৌলতে যদি স্বপ্নের নায়ককে কাছ থেকে দেখা যায়, হাত মেলানো যায়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। মোবাইলে ছবিও তুলে রাখব।”

dev female police female fan medinipur barun dey
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy