গত লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর সদর বিধানসভায় প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে চতুর্থস্থানে ছিল কংগ্রেস। তারপরেও অবশ্য নিজেদের এক সময়ের ‘শক্ত ঘাঁটি’ খড়্গপুরে হাল ছাড়তে নারাজ দলীয় নেতৃত্ব। এ বছরই খড়্গপুরে পুরসভা নির্বাচন। তার আগে রেলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে শুক্রবার অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হল পুরসভায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেস। নেতৃত্বে খোদ পুরপ্রধান।
এ দিন দুপুরে খড়্গপুরে ডিআরএম অফিসের বাইরে বোগদা এলাকায় ওই বিক্ষোভে কংগ্রেস অভিযোগ তোলে, রেল এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে পুরসভা বাধার মুখে পড়ছে। বিক্ষোভসভায় উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে, উপ-পুরপ্রধান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল, দলের জেলা সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া, শহর সভাপতি অমল দাস, মহিলা নেত্রী হেমা চৌবে। বিক্ষোভে রেল এলাকার মহিলাদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। রেল এলাকার ৬ জন কাউন্সিলর ডিআরএমকে স্মারকলিপি দেন।
এ দিন কংগ্রেস নেতৃত্ব রেলের জীর্ণ কোয়ার্টার, বেহাল রাস্তা, পথবাতির অভাব নিয়ে সরব হন। রেল কলোনিতে পুর-উদ্যোগে বিদ্যুৎ সংযোগ ও জলের পরিষেবা দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। পুরপ্রধান বলেন, “এখানে রেল কোনও কাজ নিজে করছে না। পুরসভাকেও করতে দিচ্ছে না। আমরা বাধা এড়িয়ে ৪০টি ডিপ টিউবওয়েল বসিয়ে জল সরবারহ করেছি। বিদ্যু সংযোগের অনুমতি দিলেও রেলের বাধায় তা আটকে গিয়েছে।” কাজে বাধা পেয়ে রেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলেও জানান তিনি। একই সুরে জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশবাবুর বক্তব্য, “রেল এলাকায় উন্নয়নের কাজের দায়িত্ব রেলের। আমাদের দল ক্ষমতায় এসে রেল ওয়ার্ডে কাজ করতে চেয়েছে কিন্তু রেল বাধা দিচ্ছে। মানুষের উন্নয়নে স্বার্থে লড়াই চালিয়ে যাব।”
গত ২ ফেব্রুয়ারি পুর-নির্বাচনের ওয়ার্ড সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হতেই ভোটের বাদ্যি বেজে গিয়েছে। নিয়ম মতো মে মাসে এই ভোট হওয়ার কথা। ২০১০ সালের শেষ নির্বাচনে ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টিতে জিতেছিল কংগ্রেস। রেল এলাকার ১৩, ১৫, ১৮, ২০, ২১, ২২, ২৬ ও ২৭— মোট ৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টি রয়েছে কংগ্রেসের দখলে। রেল ওয়ার্ডে অবাঙালি ভোটার বেশি। তার উপর এখন বিজেপি-র পালে হাওয়া। গত লোকসভা ভোটে তো খড়্গপুর সদর বিধানসভায় এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তাই জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, রেল এলাকায় নিজেদের দাপট ধরে রাখতে এখন থেকেই মাঠে নেমে পড়ল কংগ্রেস। যদিও পুরপ্রধানের দাবি, কাজে বাধা পাচ্ছেন বলেই তাঁরা রেলের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy