স্কুলে ঢুকে তাণ্ডব ও প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠল। বুধবার খড়্গপুরের উৎকল বিদ্যাপীঠের এই ঘটনায় জখম হয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রকুমার বহরা। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র সুশান্ত বহরার নির্দেশে কয়েকজন যুবক তাঁকে মারধর করেছে। তবে এ দিনের ঘটনায় রাত পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয় নি।
স্থানীয় ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়্গপুরের ওড়িয়া মাধ্যমের এই স্কুলে কয়েক বছর ধরেই নানা সমস্যা চলছে। শিক্ষা দফতরের অনুমতি ছাড়া ২০০৮ সাল থেকে ওই স্কুল চত্বরে চলছে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। ওই বেসরকারি স্কুলটি উৎকল বিদ্যাপীঠের পরিচালন সমিতির সম্পাদক, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে চলায় শুরু হয় দায় ঠেলাঠেলি। স্কুলে পড়াশোনা ব্যাহত হওয়ায় বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। চলতি বছরের ২১ মার্চ পরিচালন সমিতির সম্পাদক ও সভাপতির নামে থানায় টাকা তছরুপের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রকুমার বহরা। তাঁর অভিযোগ, ওই ইংরেজ মাধ্যম স্কুল ও উৎকল বিদ্যাপীঠের সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা মিলিয়ে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন সভাপতি।
রবীন্দ্রকুমারবাবুর অভিযোগ, এই ঘটনার পর থেকেই তাঁর উপর চাপ বাড়ছিল। সম্পাদক ও সভাপতির হয়ে তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সুশান্ত বহরা। এমনকী গত ৫জুন তাঁর বাড়িতে স্কুলের চাবি চেয়ে একটি হুমকি ফোন যায়। সে দিনই সুশান্ত বহরা, শিব সাহু, লোকনাথ দাস-এই তিনজনের নামে টাউন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রবীন্দ্রবাবুর স্ত্রী ভারতী বহরা। এরপরই বুধবার কয়েকজন যুবক স্কুলে রবীন্দ্রবাবুকে হেনস্থা করে। তিনি পুলিশে খবর দিতে থানার উদ্দেশে রওনা দিলে স্কুলের সামনেই ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। জখম রবীন্দ্রবাবুকে ভর্তি করা হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রবীন্দ্রবাবু বলেন, “আমি টাকা তছরুপের অভিযোগ করেছিলাম সভাপতির নামে। তার পর থেকেই সুশান্ত বহরা আমাকে হেনস্থা করতে থাকে। এ দিনও সুশান্তর নেতৃত্বেই আমাকে ওই যুবকেরা মারধর করে। এই ঘটনায় সম্পাদক ও সভাপতির মদত রয়েছে।”
যদিও স্কুলের সম্পাদক গৌরহরি নায়েক দাবি করেন, “স্কুলের টাকা নয়ছয় হয়নি। সব টাকার হিসেব আছে। এর সঙ্গে আমরা কোনওভাবে যুক্ত নই। বরং একস ময়ে সুশান্ত বহরাদের ডেকেই স্কুলের সম্পাদক বলে ঘোষণা করেছিলেন রবীন্দ্রবাবু। এখন সুশান্তর সঙ্গে কি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের ঝামেলা হয়েছে বলতে পারব না।” তবে এই বিষয়ে পরিচালন সমিতির সভাপতি করুণাকর পণ্ডার সঙ্গে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy