নন্দকুমারে বিজেপির সভায় কণিষ্ক পণ্ডা। —নিজস্ব চিত্র।
জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে ইতিমধ্যেই দলের প্রদেশ সভাপতির কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কণিষ্ক পণ্ডা। অপেক্ষা রয়েছে শুধু বিজেপি নেতৃত্বের সম্মতির।
এরই মধ্যে বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার বাজারে বিজেপির এক সভায় উপস্থিত হলেন কণিষ্ক পণ্ডা। শুধু তাই নয়, ভাষণও দিলেন। তারপরে ফের ক্ষোভ উগরে দিলেন কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রতি। ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, “কংগ্রেসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, দিশাহীনতার রাজনীতি চলছে।” সভা শেষে সাংবাদিকদের বললেন, “বিজেপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু বিজেপি নেতা-কর্মীদের তরফে আমাকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে সম্মতি আছে কি না, তা জানতেই সভায় এসেছি।” তারপরেই অবশ্য বলেন, “আমাকে বিজেপি নেতা-কর্মীরা বিপুলভাবে সমর্থন জানিয়েছেন।”
কণিষ্কবাবুর কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়াকে কটাক্ষ করেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের সভাপতি আনোয়ার আলি। বুধবার তিনি বলেন, “কণিষ্কবাবু কংগ্রেসে থাকলেও দলের কোনও কাজ করতেন না। গত চার বছরে জেলা কংগ্রেসের কোনও বৈঠকেও আসেননি। গত বছরে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে দাঁড়িয়েও পরাজিত হন।” এরপরেই তাঁর কটাক্ষ, “কণিষ্কবাবু আদর্শ নয়, রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্যই উনি এখন বিজেপিতে যাচ্ছেন।” কণিষ্কবাবু এই মাসের ২৭ কিংবা জুলাইয়ের ৩ তারিখ বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে জানান।
দলত্যাগী এই নেতা এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ না দিলেও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় ২৫ জন সিপিএম, সিপিআই, তৃণমূল কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির সভায় ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অসীম সরকার, দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তপন কর, সদ্য লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়ানো তমলুকের প্রার্থী বাদশা আলম, কাঁথির প্রার্থী কমলেন্দু পাহাড়ি-সহ দলের জেলা ও ব্লক নেতৃত্ব। এ দিন অসীমবাবু বলেন, “আমাদের আপাতত লক্ষ্য পুরসভা নির্বাচন ও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি করা।” অন্য দল থেকে আসা নেতাদের কী কোনও পদ দেওয়া হবে? অসীমবাবুর জবাব, “বিজেপি কোনও দাদা-দিদির দল নয়। গণতান্ত্রিক ভাবে, সাংগঠনিক পদ্ধতিতে দলের পদাধিকারী নির্বাচন করা হয়।” নির্দিষ্ট জেলা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া খেজুরির প্রাক্তন বিধায়ক তথা সমাজবাদী পার্টির জেলা কমিটির সদস্য পাত্র, উত্তর কাঁথির প্রাক্তন বিধায়ক অনিল মান্না প্রমুখ।
লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই সিপিএম, তৃণমূল-সহ অন্যদল থেকে বিজেপিতে যোগদান চলছেই। বিজেপি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাসের দাবি, “লোকসভা থেকে এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন ব্লকে অন্য রাজনৈতিক দল থেকে প্রায় ৭ হাজার কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।” জেলাজুড়ে চলা তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আগামী ২০ জুন তমলুকে জেলাশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করা হবে বলেও সুকুমারবাবু জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy