যাত্রা ও রাজনীতির পৃথক মঞ্চে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। নিজস্ব চিত্র।
তাঁর যাত্রাপ্রেমের কথা কারও অজানা নয়। পেশাদার রাজনীতিক হয়েও বার বার যাত্রামঞ্চে অভিনয় করে দর্শকদের হাততালি কুড়িয়েছেন তিনি। এ বার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে যাত্রামঞ্চে হাজির হচ্ছেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। দু’টি যাত্রাপালার দল রয়েছে তাঁর। একটি পেশাদার ও অন্যটি অপেশাদার। অপেশাদার দলটিকে নিয়েই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে একটি যাত্রা মঞ্চস্থ করেছেন তিনি। যাত্রার নাম – ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’। শ্রীচৈতন্য নাট্যসমাজ (পূর্বস্থলী) অপেশাদার দলটি নতুন এই যাত্রাপালাটির আয়োজন করেছে। যাত্রার প্রয়োজনে কখনও বিষ্ণু, কখনও মহাদেব, কখনও বা চৈত্যনের ভুমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। এ বার তাঁকে দেখা যাবে সম্পূর্ণ নতুন রূপে।
এই যাত্রার কেন্দ্রবিন্দু ভাই-বোনের সম্পর্ক। দাদা হিন্দু ও বোন মুসলমান। দাদা গোরাচাঁদ ও ভগ্নি সালমা। কোনও রক্তের সম্পর্ক নেই তাদের, কিন্তু সম্প্রীতির বন্ধন তাঁদের ভাই-বোন করেছে। তাদের এই সম্পর্ক ও সামাজিক টানাপড়েন নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’ যাত্রাটি। লিখেছেন, পালাকার ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়। দাদা গোরাচাঁদের চরিত্রে অভিনয় করছেন মন্ত্রী স্বপন। জানিয়েছেন, বায়না পেলে ভিন জেলাতে গিয়েও অভিনয় করতে আপত্তি নেই মন্ত্রীমশাইয়ের। নিজের প্রযোজনা নিয়ে স্বপনের বক্তব্য, ‘‘যে ভাবে দেশে রাজনীতির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতা ছ়ড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তার বিরুদ্ধেই আমার এই পালা। আমরা গ্রামের মানুষ, সব জাতির মানুষ একসঙ্গে থেকে বড় হয়েছি। কোনও ভেদাভেদ নেই আমাদের মধ্যে। বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে আমরা এই যাত্রা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যাত্রা গ্রামের মানুষের মধ্যে জাগরণ ঘটাতে পারে। আমাদের এই পালা গ্রামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষদাঁত ভেঙে দেবে।’’ নাম না করে বিজেপি-কে আক্রমণ করে তাঁর এমন পালা মঞ্চস্থ করার কারণ উল্লেখ করেছেন রাজনীতিক স্বপন।
প্রসঙ্গত, গ্রামীণ বর্ধমানের বাসিন্দা স্বপন গত প্রায় দেড় দশক ধরে বিধানসভার সদস্য। এখন বিলুপ্ত নাদনঘাট থেকে পরিষদীয় রাজনীতির জীবন শুরু করলেও, বর্তমানে তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র পূর্বস্থলী দক্ষিণ। বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিধায়ক থেকে বর্তমানে তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী। বিধানসভা ও প্রশাসনিক ভাবে অবস্থান বদলে গেলেও বদলায়নি তাঁর যাত্রা অনুরাগ। আর তাঁর নতুন এই যাত্রাপালায় ঘটেছে তাঁর রাজনীতি ও যাত্রাপ্রেমের মিলন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy