তজমুল হোসেন। নিজস্ব চিত্র
“এলাকায় বিদ্যুতের কোনও অভাব নেই। অনুরোধ করছি, কিছু বিদ্যুতের পোল (খুঁটি) দেওয়া হলে ভাল হত। বিদ্যুতের খুঁটি।” বৃহস্পতিবার মালদহে প্রশাসনিক বৈঠকে দলের মন্ত্রীর অনুরোধ শুনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জবাব, “করে দেবে। তজমুলের কাজ হয়ে গেল।” মুখ্যমন্ত্রী ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প, বস্ত্র ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী তজমুল হোসেনের ওই কথোপকথনের ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তা নিয়ে রীতিমতো কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে মন্ত্রীকে। তজমুল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক। বিদ্যুতের খুঁটি ছাড়া, আর কি কোনও সমস্যা এলাকায় নেই, এই প্রশ্ন তুলে নেট নাগরিকদের পাশাপাশি, মন্ত্রীকে নিশানা করেছেন বিরোধীরাও। মন্ত্রী কী ভাবে ‘এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা নেই’ বললেন, সে প্রশ্নও উঠেছে।
সমাজ মাধ্যমে তাঁকে যে টিপ্পনীর নিশানা করা হচ্ছে, তা নজরে এসেছে তজমুলেরও। শনিবার তিনি দাবি করেন, ‘‘এলাকার বিধায়ক হিসেবে বিভিন্ন সমস্যার কথা বিধানসভায় নিয়মিত তুলি। কিন্তু বর্তমানে চাঁচল থেকে বিহারের কাটিহার পর্যন্ত জাতীয় সড়কের কাজ চলতে থাকায় রাস্তা থেকে ওরা (জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ) বিদ্যুতের খুঁটি তুলে ফেলেছে। আবার অনেককেই ঘরদোর সরাতে হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতর সে খুঁটি সরবরাহ করতে পারছে না। তাই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এনে, সাহায্য চেয়েছি।’’
মালদহে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রীকে ওই অনুরোধ করেন তজমুল। তার ভিত্তিতে সমাজ মাধ্যমে কারও কটাক্ষ, মিলনগড়ে রাস্তা নেই। কয়েকটা বিদ্যুতের খুঁটি দিলে যাতায়াত করা সহজ হত। কেউ পানীয় জলের সমস্যার কথা জানিয়ে খুঁটি চেয়ে কটাক্ষ করেছেন।
হরিশ্চন্দ্রপুরের ইসলামপুর, লটোরা, রাধিকাপুর, ডহরা, ডাটিয়ন মৌজা, খন্তা মৌজা-সহ একাধিক এলাকায় মাঠে সরকারি ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ চাষিদের একাংশের। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার মালদহের রিজিওনাল ম্যানেজার চন্দন মণ্ডল বলেন, ‘‘বিদ্যুতের খুঁটি নিয়ে কোথায়, কী সমস্যা তা জানতে মন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। উনি তালিকা পাঠাবেন বলেছেন। তালিকা পেলে, আমরা খুঁটির ব্যবস্থা করে দেব। আর মাঠে বা কোনও এলাকায় কেউ আবেদন করেও বিদ্যুৎ না পেয়ে থাকলে, আমাকে জানান। ব্যবস্থা নেব।’’
স্থানীয় সিপিএম নেতা শেখ খলিল বলেন, ‘‘মন্ত্রীর কাছে এলাকার প্রকৃত সমস্যার কোনও খোঁজ নেই। উনি কি জানেন, বহু গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি? এলাকায় বিদ্যুতের অভাবে জলসেচ ব্যাহত হচ্ছে। আর মন্ত্রী বলে দিলেন, ‘বিদ্যুতের সমস্যা নেই’।’’ হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ‘গুড বুক’-এ থাকার জন্য বকাবকি খাওয়ার ভয়ে তিনি এলাকার সমস্যা নিয়ে মুখ খোলেননি।’’ বিজেপি নেতা রূপেশ আগরওয়াল বলেন, ‘‘এক জন মন্ত্রী বিদ্যুৎ দফতরকে বললেই খুঁটি পাওয়া যেত।’’ মন্ত্রী অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘এ সব এ নিয়ে অযথা প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy