Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩

ধর্ষণ-খুনে এ বার গ্রেফতার সুমতি

 আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে সুরজিৎ সরকার আগেই ধরা পড়েছে। এ বার ওই মামলায় তথ্য প্রমাণ লোপাট ও ষড়যন্ত্রে যুক্ত সন্দেহে তার মা সুমতিকেও গ্রেফতার করল পুলিশ।

গ্রেফতার: সুরজিতের মা সুমতি। ছবি: স্বরূপ সরকার

গ্রেফতার: সুরজিতের মা সুমতি। ছবি: স্বরূপ সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৭
Share: Save:

আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে সুরজিৎ সরকার আগেই ধরা পড়েছে। এ বার ওই মামলায় তথ্য প্রমাণ লোপাট ও ষড়যন্ত্রে যুক্ত সন্দেহে তার মা সুমতিকেও গ্রেফতার করল পুলিশ। টানা জেরার পর শনিবার সকালে তাকে গ্রেফতার করে ভক্তিনগর থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, ঘটনার পরে ছেলের কুকীর্তি ঢাকতে একাধিক ছক কষেন ওই মধ্যবয়সী মহিলা।

Advertisement

তদন্তকারীদের অনুমান, যে চাদরের উপরে মৃত শিশুটিকে শোওয়ানো হয়েছিল, সেটি সুমতি পুড়িয়েছেন। নিহত শিশুর বাবা চাদর পোড়ানোর অভিযোগ তোলেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। ঘটনা নিয়ে পরিবারের লোকজন কে কী বলবেন তাও তিনি ঠিক করে দিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশের এটাও সন্দেহ, দেহ লোপাটের জন্যই রাত ১টার পরে সবাইকে চলে যেতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু গাড়ির আওয়াজ পেয়ে শিশুর পরিবার বাইরে বেরিয়ে আসায় তা আর সম্ভব হয়নি বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘ঘটনায় মহিলা শেষ পর্যন্ত নিজেকে তো বটেই ছেলেকেও বাঁচানোর চেষ্টা করে গিয়েছেন। আমরা দ্রুত চার্জশিট দেব।’’

২৫ জানুয়ারি রাতে ওই ঘটনার দু’দিন পরে জেরায় অসঙ্গতিপূর্ণ কথাবার্তা বলায় গ্রেফতার করা হয় সুরজিৎকে। গত ৮ দিন ধরে এসিপি অচিন্ত্য গুপ্তের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল টানা জেরা করে অভিযুক্ত পরিবারটিকে। ছোট ছেলেকে বাঁচাতে সুমতির শেখানো কথাই সবাই বলছিলেন। ধীরে ধীরে জেরায় ভাঙতে থাকেন তারা। ঘটনার সময় বাইরে ছিল বলে প্রথমে দাবি করলেও সুরজিৎ যে সে সময় বাড়িতেই ছিল তার প্রমাণ মিলেছে। সুরজিতের ডিএনএ টেস্টও হয়েছে।

তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, শিশুর বাবা ভ্যান চালানোর কাজ সেরে প্রতিদিনই রাত করে বাড়ি ফেরেন। সন্ধে সাড়ে ছ’টার পর শিশুর মা ছোট ছেলেকে নিয়ে ওষুধ আনতে গিয়েছিলেন। ১১ ভাড়াটের বহুতল বাড়িতে শিশুটি ঘোরাঘুরি করছিল। সেই সময়ই তা অভিযুক্তের নজরে আসে। সে কাঁচের গুলি হাতে মেয়েটিকে ডাকে। ৩০ টাকা হাতে দিয়ে লোভ দেখিয়ে ছাদে নিয়ে যায়। ওই কাঁচের গুলি সুরজিতের ঘর থেকে মিলেছে। সেখানে কুকুরের বসার জন্য এক মোটা চাদর ছিল। ধর্ষণের পর মেয়েটিকে চিৎকার করার পর অভিযুক্ত সুরজিৎ মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে মারে। পাটের সূতলি দিয়ে গলায় ফাঁসও দেয়। তারপর নিচে চলে আসে।

Advertisement

রাত ৮টা নাগাদ মেয়েটিকে খোঁজাখুজি শুরু হয়। ছেলের সন্দেহজনক আচরণ দেখেই সুমতি বিষয়টি টের পান। ছেলে মা’কে বাঁচাতে বললে সুমতি আসরে নামেন বলে অভিযোগ। এ দিন বিকেলে শিশুর বাবা বলেন, ‘‘আমি তো প্রথম থেকেই বলছিলাম, উনি সব জানেন। ছাদে উনিই তো আমাকে পাঠান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.