Advertisement
E-Paper

‘বিচার’ পেতে দিল্লি গেলেন কামদুনির টুম্পা-মৌসুমীরা, সঙ্গে বিজেপির শঙ্কু, মামলা করা হবে সুপ্রিম কোর্টে

১০ বছর আগে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল বাংলা। নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্তদের অনেকের শাস্তি উচ্চ আদালতে মকুব হওয়ায় নতুন করে আন্দোলিত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৫০
Kamduni

বিমানবন্দরে (বাঁ দিকে) টুম্পা কয়াল, মৌসুমী কয়াল (ডান দিকে) —নিজস্ব চিত্র।

কামদুনিকাণ্ডে ‘সঠিক’ বিচার পেতে এ বার দিল্লি গেলেন মৌসুমী কয়াল, টুম্পা কয়ালরা। বুধবার সকালের বিমানে টুম্পা, মৌসুমীদের সঙ্গে করে দিল্লি নিয়ে গেলন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। রাজধানীতে পৌঁছে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সিপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

রাজ্য সরকার হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যাওয়ার পরেও কেন আলাদা ভাবে মামলা করার ভাবনা? টুম্পা, মৌসুমীরা বলছেন— রাজ্যের ভূমিকায় আস্থা রাখতে না-পেরেই এই সিদ্ধান্ত। অন্য দিকে তৃণমূল মনে করছে, বিজেপি কামদুনিকে নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে বলেই এই দিল্লিযাত্রা। টুম্পা, মৌসুমীদের সঙ্গে দিল্লি গিয়েছেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ও। তিনি কামদুনি গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। ২০১৩ সালে ওই ঘটনার সময়ে তাঁকেও প্রতিবাদী মুখ হিসাবে দেখা গিয়েছিল।

২০১৩ সালে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল বাংলা। সেই মামলায় নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্তদের কারও কারও শাস্তি উচ্চ আদালতে মকুব হয়ে গিয়েছে বা কমে গিয়েছে সম্প্রতি। নিম্ন আদালতে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত এক আসামিকে বেকসুর খালাসও করে দিয়েছে হাই কোর্ট। এর পর আবার কামদুনিকে ঘিরে নতুন করে আন্দোলিত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে। এ বার পৃথক ভাবে মামলা করতে দিল্লি গেলেন মৌসুমী, টুম্পারা।

বিধবার দিল্লি উড়ে যা‌ওয়ার আগে বিমানবন্দরে মৌসুমী বলেন, ‘‘হাই কোর্টের রায়ের পর আমাদের মন ভেঙে গিয়েছে। আমরা যাচ্ছি সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু জানি না, আদৌ সঠিক বিচার পাব কি না!’’ টুম্পা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এখন গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শুনছি কপিল সিব্বলকে আইনজীবী হিসাবে দাঁড় করাবেন। কিন্তু এত দিন সরকার কী করছিল? রাজ্য সরকার আইনের ফাঁক তৈরি করেছিল। এখন অপরাধীরা মুক্তি পেয়ে যাওয়ার পর রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে দৌড়চ্ছে।’’ শঙ্কুর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে সুযোগ ছিল অপরাধীরা যাতে ছাড়া না-পায় তা নিশ্চিত করা। কিন্তু তা হয়নি।’’

তৃণমূল মনে করছে, বিজেপির রাজনীতির ফাঁদে পা দিয়ে ফেলছেন কামদুনির অনেকে। দলের অন্যতম মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সিআইডি যথাযথ তদন্ত করেছিল বলেই ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে দোষীদের ফাঁসির সাজা হয়েছিল। আবার রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে বলেই দু’দিন আগে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে, কপিল সিব্বলের মতো আইনজীবীকে দাঁড় করিয়েছে। অন্য দিকে কামদুনির প্রতিবাদীদের হয়ে যে আইনজীবী হাই কোর্টে সওয়াল করলেন, তিনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সহ-সভাপতি। ফলে বোঝাপড়াটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না।’’

কামদুনির ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় গত শুক্রবার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্ট। এই মামলায় যে তিন জনের ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত, তাদের মধ্যে এক জনকে বেকসুর খালাস করে উচ্চ আদালত। বাকি দু’জনের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি আরও চার দোষী সাব্যস্তের সাজা মকুব করে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ।

হাই কোর্টের সেই রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। বিচারপতি বিআর গভাইয়ের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চে রাজ্য মামলা দায়ের করেছে। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ রাজ্যের বক্তব্য শোনার পর সোমবার বলে, আগে এই মামলার সব পক্ষের বক্তব্য শুনতে চায় তারা। তার পর স্থগিতাদেশ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। একই সঙ্গে যে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তকে বেকসুর খালাস করেছিল হাই কোর্ট, তাঁর কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না? উত্তর দেওয়ার জন্য সাত দিন সময় বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী সোমবার মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে।

kamduni Supreme Court BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy