Advertisement
E-Paper

নিরাপত্তা চাই, মন্ত্রীকেই বলতে চান মৌসুমী-টুম্পা

রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে এ বার মুখোমুখি হচ্ছেন কামদুনি আন্দোলনের দুই প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী ও টুম্পা কয়াল। দেখা হবে সেই কামদুনিতেই। এই প্রথম এবং অপেক্ষায় দুই পক্ষই!

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:৩০
আলিঙ্গন। কামদুনি থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত বিজেপি মহিলা মোর্চার পদযাত্রা শুরুর আগে টুম্পা কয়াল এবং মৌসুমী কয়ালের সঙ্গে নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

আলিঙ্গন। কামদুনি থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত বিজেপি মহিলা মোর্চার পদযাত্রা শুরুর আগে টুম্পা কয়াল এবং মৌসুমী কয়ালের সঙ্গে নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে এ বার মুখোমুখি হচ্ছেন কামদুনি আন্দোলনের দুই প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী ও টুম্পা কয়াল। দেখা হবে সেই কামদুনিতেই। এই প্রথম এবং অপেক্ষায় দুই পক্ষই!

বস্তুত, নারী নির্যাতন এ বার বিধানসভা নির্বাচনে অন্যতম বড় হাতিয়ার হতে চলেছে বিরোধীদের। তার মোকাবিলায় সক্রিয় শাসক দলও। গত এক মাসে সেই প্রশ্নে নানা কর্মসূচি ছুঁয়ে গিয়েছে কামদুনিকে। সে বামেদের কাকদ্বীপ থেকে কামদুনি পর্যন্ত সাইকেল জাঠাই হোক বা কামদুনি-কাণ্ডের সাজার পরে তাকে নিজেদের ‘জয়’ দাবি করে তৃণমূলের উল্লাসই হোক! সেই তালিকাতেই বুধবার সর্বশেষ সংযোজন হয়েছে কামদুনি থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত বিজেপি মহিলা মোর্চার পদযাত্রা। যেখানে এ দিন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়দের বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে কামদুনিতে মৌসুমী, টুম্পাদের উপস্থিতি। এবং সেখানেই থামছেন না মৌসুমীরা!

তাঁদের কর্মকাণ্ড কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয় বলেই ফের জানাচ্ছেন মৌসুমী, টুম্পা। সে যুক্তি প্রতিষ্ঠা করতেই যেন শাসকের কাছেও তাঁদের যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে! বিজেপি-র মিছিলে এ দিন ছিলেন রূপাও। মৌসুমীর প্রশ্ন, ‘‘বাংলার দ্রৌপদী গ্রামে এসেছেন, আর দেখতে যাব না?’’ কিন্তু তিনি তো এখন কেবল অভিনেত্রী নন, রাজ্য বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রীও? এ বার মৌসুমীর দৃঢ় জবাব, ‘‘আমাদের পাশে লড়াই আন্দোলনে যে দল যখনই এসেছে, আমরা সঙ্গ দিয়েছি। কাউকে অসম্মান করব কেন? তার মানে আমরা সেই দলেরই হয়ে গিয়েছি, তা তো নয়!’’

সে না হয় প্রতিবাদের অঙ্গ। এত দিন আন্দোলনের পরে এ বার মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন কেন? ‘‘আমাদের মূল দাবি ছিল দোষীদের ফাঁসি। তা হয়েছে, এলাকায় কিছু উন্নয়নও হয়েছে। কিন্তু আদালতের রায়ে দু’জন ছাড়া পেয়ে গিয়েছে, এটা আতঙ্কের। মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য কামদুনিতে আরও কিছু কাজ প্রয়োজন, মন্ত্রী এলে সেটা জানাতেই তাঁর কাছে যাব।’’ রুদ্ধশ্বাসে বলে চলেন টুম্পা-মৌসুমী। তা বলে শাসক দলের নেতা? ‘‘কেন আমাদের বারবার কোনও না কোনও দলের তকমা দেওয়ার চেষ্টা চলছে?’’ প্রশ্ন করেন টুম্পা। ‘‘আমাদের গ্রামের উন্নতির জন্য যে দলই আসুক, আমাদের কি সেখানে যেতে বাধা আছে?’’ পাল্টা প্রশ্ন মৌসুমীর।

কামদুনির উন্নয়নের হাল এখন কোথায়, ধর্ষণ-কাণ্ডের আড়াই বছর পরে তা সরেজমিনে দেখতে রবিবার কামদুনি যাওয়ার কথা খাদ্যমন্ত্রী ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘আর কী কী উন্নয়ন প্রয়োজন, তা জানতেই তো কামদুনি যাচ্ছি। ওখানে গিয়ে বারবার যারা রাজনীতি করার চেষ্টা করছে, তাদের কথা শুনব কেন? এলাকার মানুষরা আসুন, বলুন আর কী কী করতে হবে। সবাই স্বাগত! দেখুন না, সে সব হয় কি না!’’ অর্থাৎ কামদুনির প্রতিবাদের দুই মুখকে স্বাগতই জানাচ্ছেন তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি।

মৌসুমী-টুম্পা অবশ্য এ দিনও আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিলেন। তাঁদের বাড়ি থেকে কামদুনি মোড়ে আনতে গাড়ি নিয়ে যান প্রাক্তন বিধায়ক বীথিকা মণ্ডল ও তাঁর সঙ্গীরা। তবে মৌসুমী, টুম্পারা নিজেরাই পৌঁছে যান কামদুনি মোড়ে। মৃতার শহিদ বেদিতে মালাও দেন। হাজার খানেক মহিলাকে নিয়ে শুরু হয় বিজেপির মিছিল। কিন্তু এত দিন পরে তাঁরা কামদুনিতে! বিজেপি মহিলা মোর্চার জাতীয় সভানেত্রী বিজয়া রাহাতকর বলেন, ‘‘আমি এই প্রথম এলাম, তা ঠিক। কিন্তু আমাদের মহিলা মোর্চার অনেকেই প্রথম থেকে কামদুনি আন্দোলনে ছিলেন। এ রাজ্যে সরকারের মদতেই নারী নির্যাতন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে এমন আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’

মিছিল শুরুর মুখে তাতে পা না মিলিয়েই বাড়ি ফিরতে দেখা যায় মৌসুমী-টুম্পাদের। বিজেপির কর্মসূচিতে তাঁরা কেন এলেন, দু’জনকে সংবাদমাধ্যম সেই প্রশ্ন করতে যেতেই ছুটে আসেন রূপা। তাঁর অনুরোধ, ‘‘দয়া করে আপনারা অন্তত এই দু’জনকে নিয়ে কোনও রাজনীতির মোড়ক দেওয়ার চেষ্টা করবেন না!’’

mousumi tumpa kamduni
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy