—ফাইল চিত্র।
বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদার প্রতারণার জাল যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে, আবারও তার প্রমাণ পেল সিবিআই।
সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার জন্য মধ্যপ্রদেশের ইনদওর পুলিশের একটি দল শনিবার কলকাতায় এসে সিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সুদীপ্তের বিরুদ্ধে ইনদওরে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ব্যবসায়ী। সেই প্রতারণার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সারদার এক হিসেবরক্ষক এবং এক ম্যানেজারকেও জেরা করা হবে।
সিবিআইয়ের খবর, ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ী শান্তনু ঘোষের কাছ থেকে ২২০ কোটি টাকার বিনিময়ে একটি মোটরবাইক কারখানা কিনেছিলেন সুদীপ্ত। তদন্তে জানা গিয়েছে, সেই সময়ে কারখানায় বেশ কিছু মোটরবাইক ছিল। সুদীপ্ত সেই সব বাইক বিক্রি করার জন্য খবরের কাগজে ডিলারশিপ দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেন।
মধ্যপ্রদেশের যে-ব্যবসায়ী ইনদওরে সুদীপ্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তাঁর দাবি, সেই বিজ্ঞাপন দেখে তিনি ইনদওরে ওই মোটরবাইকের ডিলারশিপ নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পরে ডিলারশিপের অগ্রিম বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা পাঠান সুদীপ্তের কাছে। কিন্তু টাকা দেওয়া সত্ত্বেও তিনি কোনও মোটরবাইক পাননি। বেশ কিছু দিন অপেক্ষা করার পরে অগ্রিম হিসেবে পাঠানো টাকা বারবার চাওয়া সত্ত্বেও ফেরত পাননি ওই ব্যবসায়ী। শেষ পর্যন্ত ২০১৩ সালে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের কাছে তিনি সুদীপ্তের নামে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
শুধু ইনদওর নয়, সারদার তরফে বিভিন্ন রাজ্যের আরও বেশ কয়েকটি শহরের কিছু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এমন ডিলারশিপ বাবদ টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে জানাচ্ছে সিবিআই। সেই সব জায়গা থেকে অবশ্য এখনও কোনও অভিযোগ এসে পৌঁছয়নি। তদন্তে নেমে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ জেনেছে, ইনদওরের ঘটনায় হুগলির পোলবায় সুদীপ্তের মোটরবাইক কারখানার এক ম্যানেজার এবং সারদা রিয়েলটির এক হিসেবরক্ষকের যোগসাজশ রয়েছে। সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জেরার মুখে সুদীপ্ত বারবার তাঁর নিজের কিছু কর্মীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনেছেন। তাঁর অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে তাঁকে অন্ধকারে রেখে বিভিন্ন ভাবে সারদার টাকা আত্মসাৎ করেছেন তাঁর সংস্থার কর্মীদের একাংশ। তাঁর সংস্থার পতনের বড় কারণ এটাও। ইনদওরের ব্যবসায়ীর মামলায় সুদীপ্তের সংস্থার ওই ম্যানেজার ও হিসেবরক্ষকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠেছে।
শান্তনুর মোটরবাইক কারখানা সুদীপ্তকে হস্তান্তরের ঘটনাকে ঘিরে যে-প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে তদন্ত করে ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং সিবিআই ইতিমধ্যে আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে। ওই মামলার তদন্ত চলাকালীন সুদীপ্ত অভিযোগ করেছিলেন, হস্তান্তর চুক্তির পরে দেখা যায়, কিছু মোটরবাইক এবং তার চাকা ছাড়া কারখানায় আর কিছুই ছিল না! উল্টে ওই কারখানার নামে বিশাল অঙ্কের ঋণ বকেয়া পড়েছিল ব্যাঙ্কে। যাঁর বিরুদ্ধে সুদীপ্তের এই অভিযোগ, ওই কারখানার পূর্বতন মালিক সেই ব্যবসায়ী শান্তনু ঘোষকেও গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তিনি এখন জেলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy