চলছে পাড় বাঁধানোর কাজ।—নিজস্ব চিত্র
দুই শহর— রঘুনাথগঞ্জ ও জঙ্গিপুরকে ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে ভাগীরথীর পাড় বাঁধানোর কাজ শুরু করল সেচ দফতর। স্পার বাঁধানোর জন্য ইতিমধ্যে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। রঘুনাথগঞ্জে স্পার বাঁধানোর সেই কাজ ইতিমধ্যে শুরুও হয়েছে। আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে শহরের প্রাচীণ শ্মশানটিকে রক্ষার জন্য। তিন কোটি টাকা দিয়ে শহরের বাজার এলাকার ভাঙন রোধের কাজ করা হবে। জঙ্গিপুর শহরের সরস্বতী লাইব্রেরি এলাকার ধসে যাওয়া অংশ সংস্কারের জন্য কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তবে এখনও সে কাজ শুরু হয়নি। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজ শুরু হতে দিন পনেরো সময় লাগবে।
গত জুলাইয়ে ভাগীরথীর ভাঙনে বিপন্ন হয়ে পড়ে রঘুনাথগঞ্জের মহাশ্মশান। শহরের বাজার সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহ ফাটল ধরে। তড়িঘরি বালির বস্তা ফেলে শ্মশানের ভাঙনের ঠেকানো হয়। কিন্তু ভবিষ্যতে ভাঙনের আশঙ্কা ছিলই। বালির বাঁধ দিয়ে আর কতদিন ভাঙন ঠেকানো যাবে! ভাঙনে ইতিমধ্যেই শ্মশানের একাংশ নদীগর্ভে তলিয়েও গিয়েছে। কাঠের চুল্লি ঠাঁই নিয়ে জলের তলায়। বৈদ্যুতিন চুল্লি থাকায় অবশ্য শবদাহের ক্ষেত্রে এখনও বড়সর কোনও সমস্যা হচ্ছে না। জেলার প্রাচীনতম শ্মশানগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। বীরভূম ও ঝাড়খণ্ড থেকেও অনেকে দাহ করার জন্য এখানে মৃতদেহ আনেন। প্রতিদিন অন্তত ১৫টি করে দেহ দাহ করা হয় এখানে। জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান সিপিএমের মোজাহারুল ইসলাম বলেন, “শ্মশানের প্রায় সব কটি কাঠের চুল্লিই ভাগীরথীর গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। বৈদ্যুতিন চুল্লিও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদী দিন দিন শ্মশানের কাছে চলে আসছে।’’ এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেচ দফতর শ্মশান এলাকার চারপাশে স্পার বাঁধানোর কাজ শুরু করেছে।
সেচ দফতরের ভাঙন রোধ বিভাগের পদস্থ বাস্তুকার সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বর্ষায় নদীর জল বাড়ার আগেই কাজ শেষ করতে হবে। জানুয়ারি মাসে ভাগীরথীতে জলের টান পড়ায় পাথর বাঁধানো স্পারে ফাটল ধরে বসে গেছে সরস্বতী লাইব্রেরির সামনের একাংশ। সেই কাজের জন্যও অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। তার জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে।”
আপাতত দুই শহরের ভাঙন ও ধস ঠেকানো গেলেও ভবিষ্যতে যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না, এমন নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না সেচ দফতরের কর্তারা। সঞ্জয়বাবু জানান, কিছুদিন ধরে ভাগীরথী দিয়ে বার্জে করে ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার ফলে সৃষ্ট জলের তরঙ্গ পাড়ে ধাক্কা মারছে। এতেই ভাঙন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy