Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
সমশেরগঞ্জ

গ্রেফতার দুই দুষ্কৃতী, তবুও ঘুম আসে না কিশোরীর

দুই দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে। কিন্তু ঘুমোতে পারছে না পনেরো বছরের মেয়েটা। ভুলতে পারছে না মায়ের মুখ। যে মা দুর্বৃত্তদের হাত থেকে তাকে বাঁচাতে গিয়ে ভোজালির কোপে মারা গিয়েছেন। ভাবতে-ভাবতে অসুস্থই হয়ে পড়েছে সে।

আদলতের পথে। —নিজস্ব চিত্র।

আদলতের পথে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৭
Share: Save:

দুই দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে। কিন্তু ঘুমোতে পারছে না পনেরো বছরের মেয়েটা। ভুলতে পারছে না মায়ের মুখ।

যে মা দুর্বৃত্তদের হাত থেকে তাকে বাঁচাতে গিয়ে ভোজালির কোপে মারা গিয়েছেন। ভাবতে-ভাবতে অসুস্থই হয়ে পড়েছে সে।

সমশেরগঞ্জের ওই ঘটনায় রবিবার রাতেই আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রাহেদ আনসারি আর তার দাদা শফিকুল আনসারিকে পাকড়াও করে পুলিশ। সোমবার জঙ্গিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক মনোজিৎ সরকার তাদের সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

কিন্তু এই খুনে অন্যতম অভিযুক্ত, রাহেদের জামাইবাবু ফকির আনসারি এখনও অধরা। গোটা এলাকায় সে নানা কুকর্মের পান্ডা বলে পরিচিত। তার প্রশ্রয় ও প্ররোচনাতেই দুই ভাই শুক্রবার গভীর রাতে ওই কিশোরীকে তুলে আনতে তার বাড়িতে ঢুকেছিল বলে মনে করছেন এলাকার অনেকে। মেয়েকে ধরে তারা টানাটানি করছে দেখে মা ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তখনই রাহিদ তাঁর পেটে ভোজালি ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ফকির বেপাত্তা, তাকে খোঁজা হচ্ছে। এ দিনই বহরমপুরে গিয়ে পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করে মেয়েটি। পরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মামলাও সরছে বহরমপুরে। পুলি শ সূত্রের খবর, খুন ছাড়াও নাবালিকার যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ‘পকসো’ আইনে মামলা রুজু হওয়ায় বহরমপুরে একটি বিশেষ আদালতে তা স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। সেখানেই ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কিশোরী গোপন জবানবন্দি দেবে। এসইউসি প্রভাবিত ‘মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠন’ এ দিন অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বিক্ষোভও দেখিয়েছে।

পুলিশের দাবি: রাহেদ অপরাধ কবুল করেছে। তার সঙ্গে কে-কে ছিল পুলিশকে তা-ও জানিয়েছে। পুলিশ আপাতত ভোজালিটি উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। জঙ্গিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে রাহেদ পুলিশকে বলেছে, “রাগ চড়ে গিয়েছিল বলেই ছুরিটা চালিয়ে দিয়েছিলাম।”

দু’জন গ্রেফতার হলেও আতঙ্কে আছে মৃতার পরিবার। তাঁর স্বামী জানিয়েছেন, আপাতত তাঁরা গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন না। নাবালক তিন বোন আর এক ভাইয়ের সামনে যে বাবে মাকে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা, সেই দৃশ্য তাদের মন থেকে মোছা কঠিন। মাঝেমধ্যেই চমকে ঘুম থেকে উঠছে তাঁদের চার ও পাঁচ বছরের দুই মেয়ে। তিনি বলেন, “বড় মেয়ে কিছুটা বুঝলেও বাকি তিন জন গত দু’দিন ধরে প্রায় কিছুই খাচ্ছে না। প্রায়ই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠছে আট বছরের ছেলেটা। কীসের ইদ আমাদের?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

miscreant arrest girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE