দূষিত হয়েই চলেছে নদী। তা রুখতে জলে নেমেছেন ওঁরা। ভরা গঙ্গায় প্রায় ১৬৫ কিলোমিটার নৌকা বেয়ে প্রচার করেছেন দূষণের হাত থেকে নদীকে রক্ষা করার বার্তা। মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি ঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে শনিবার শেষ বিকেলে আট জন মহিলা নবদ্বীপের দেয়ারাপাড়া ঘাটে কায়াক নিয়ে এসে পৌঁছালেন। নদীর ঘাটে তখন উপস্থিত অসংখ্য মানুষ তাঁদের বরণ করছেন ফুল, মালা, চন্দনে। আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবসে মেয়েদের এই বিশেষ অভিযান।
ভারতের এক নম্বর জাতীয় জলপথ গঙ্গাকে বাঁচাতে ‘ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশন’ (ইস্ট জ়োন) এবং ‘নবদ্বীপ অল্টিটিউড ডট ইন’-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল— সর্বনারী কায়াকিং অভিযান। গত ৪ মার্চ মুর্শিদাবাদ থেকে নদী রক্ষায় সচেতনতার বার্তা নিয়ে শুরু হয়েছিল মেয়েদের ‘কায়াকিং’। সমতলে বিরল ওই জলপথ অভিযাত্রা ৮ মার্চ, শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে শেষ হল নবদ্বীপে। সব মিলিয়ে, মোট ২৫ জন নানা বয়সের মহিলা অংশ নিয়েছিলেন নদী রক্ষার এই অভিনব উদ্যোগে।
এ প্রসঙ্গে পর্বতারোহণ সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশন’-এর ইস্ট জ়োন চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান দেবরাজ দত্ত বলেন, “নারী দিবস উদ্যাপনের জন্য মেয়েদের এই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসকে বেছে নিয়েছিলাম। নদীর প্রতি ভালবাসা বাড়াতে আমরা ঠিক করেছিলাম, আট জন অভিজ্ঞ মহিলা অভিযাত্রী প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত থাকবেন। সঙ্গে যাঁরাই চাইবেন, তাঁরাই অংশ নিতে পারবেন। আর তাঁদের গাইড করবেন নামী অভিযাত্রীরা।” নদীতে দীর্ঘ কায়াকিং অভিযানে মহিলা অভিযাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিল দুই অভিজ্ঞ রিভার গাইড অসীম সামন্ত এবং পুষ্পেন মণ্ডল।
নবদ্বীপ পর্বতারোহী সংস্থা ‘অল্টিটিউড ডট ইন’-এর সভাপতি হিমাংশু সাহা বলেন, “ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশনের ইস্ট জ়োন চ্যাপ্টার আমাদের যে ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, আমরা ভীষণ কৃতজ্ঞ। এই অনুষ্ঠানের জন্য পুরসভাও সব রকম সহযোগিতা করেছে। আগামী তিন দিন ধরে চলবে অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্প।” এদিন অভিযাত্রীদের পাশপাশি সম্মানিত করা হয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল নারীদের। উপস্থিত ছিলেন নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা, উপ-রপ্রধান শচীন্দ্র বসাক, নবদ্বীপ থানার আইসি জলেশ্বর তিওয়ারি প্রমুখ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)