ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক, নিহত ছাত্রনেতা ওসমান হাদির খুনিদের গ্রেফতারি কত দূর? জবাব চেয়ে এ বার বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিল হাদির দল। সময়সীমার মধ্যে সদুত্তর দিতে না পারলে অন্তর্বতী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সহকারী উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে।
হাদির শেষকৃত্যের পর শনিবার বিকেলে শাহবাগ চত্বরে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, জমায়েত থেকেই ইউনূস সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তথা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক) খোদাবক্স চৌধুরীকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের তরফে আবদুল্লা আল জাবের বলেন, ‘’২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের জনসমক্ষে এসে বলতে হবে, গত এক সপ্তাহে তদন্ত কত দূর এগিয়েছে। এর জবাব না দিতে পারলে তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে।’’ এ ছাড়া, নির্বাচন বানচাল করতে দেশ-বিদেশ থেকে ষড়যন্ত্র চলছে বলেও দাবি করেছেন জাবের। দেশবাসীকে শান্ত থাকা এবং কোনও প্ররোচনায় পা না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
শনিবার দুপুরে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজ়ায় হাদির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। উপস্থিত ছিলেন সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়াও ছিলেন তাবড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যেরা। হাদিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সংসদ ভবনের সামনে জড়ো হয়েছিলেন কাতারে কাতারে মানুষ। বিবিসি বাংলা-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, নমাজের আগে ইউনূস বলেন, ‘‘তোমাকে আমরা বিদায় জানাতে আসিনি আজ। তুমি আমাদের বুকের ভিতরে আছ, সব বাংলাদেশির বুকের ভিতরে আছ।’’ সে সময়েও হাদির পরিবার ও ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যদের পক্ষ থেকে হাদির খুনিদের গ্রেফতারি ও চরম শাস্তির দাবি জানানো হয়। এর পর দুপুর সাড়ে ৩টের দিকে হাদির দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে কেন্দ্রীয় মসজিদে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে সমাধিস্থ করা হয় তরুণ নেতাকে।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন হাদি। সরকারি উদ্যোগে চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। টানা ছ’দিন লড়াইয়ের পর বৃহস্পতিবার রাতে হাদির মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ্যে আসে। এর পরেই বাংলাদেশ জুড়ে শুরু হয় তাণ্ডব। ‘সংগঠিত জনরোষে’ তছনছ হয়ে যায় একাধিক সরকারি ভবন, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং দেশের প্রথম সারির দুই সংবাদপত্র প্রথম আলো ও ডেলি স্টার-এর দফতর।