অবিকল এক মুখ!
জিয়াগঞ্জের আমাইপাড়ায় শনিবার সকালে চায়ের আড্ডায় একটাই আলোচনা। শুক্রবার জিয়াগঞ্জে স্টেশনে যাঁকে দেখা গিয়েছে, তিনি কি কুস্তিগির দলীপ সিংহ রানা। গোটা বিশ্ব যাঁকে ‘দ্য গ্রেট খালি’ নামে চেনে। ‘চায়ে পে চর্চা’ জারি রইল দিনভর। তবু ধন্দ কাটল না।
শুক্রবার সকালে এক হারানো আত্মীয়ের খোঁজে জিয়াগঞ্জে গিয়েছিলেন শের খান নামে এক ব্যক্তি। আদতে আফগানিস্তানের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি প্রতি বছর শীত পোশাক বিক্রি করতে বহরমপুরে আসেন। সাত ফুটের কাছাকাছি উচ্চতা। চেহারায় অনেক মিল প্রাক্তন কুস্তিগির ‘দ্য গ্রেট খালি’র সঙ্গে। কয়েক বছর আগে ভারতে এসেছিলেন ‘খালি’। ওই মুখ তাই চেনা অনেকেরই। চুড়িপট্টিতে শের খানকে দেখেই ভিড় জমে যায়। তাঁকে ‘দ্য গ্রেট খালি’ ভেবে অনেকে তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতে শুরু করেন। ভিড়ের মধ্যে থেকে ‘খালি খালি’ আওয়াজও শোনা গিয়েছে। একে তো এতটা পথ উজিয়ে এসেও আত্মীয়ের দেখা মেলেনি। তার ওপর তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলার হিড়িক। কিছুক্ষণেই মেজাজ বিগড়ে যায় শের খানের।
চুড়িপট্টি থেকে টোটোয় জিয়াগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছনোর পরেও জনতা পিছু ছাড়েনি শের খানের। খবর যায় জিয়াগঞ্জ থানায়। শেষ পর্যন্ত সেখানকার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে জিয়াগঞ্জের স্টেশন ম্যানেজারে ঘরে নিয়ে যায়। তাঁর পাসপোর্ট ও ভিসা খতিয়ে দেখা হয়। পরে তাঁকে বহরমপুর জিআরপির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ভিড় সামলে তাঁকে বহরমপুরের ট্রেনে তুলে দিয়েছে পুলিশ। তবে গোটা ঘটনায় ভীষণ চটেছেন ওই আফগান। ভাঙা হিন্দি ও ইংরেজি মিশিয়ে তিনি যা বললেন, তাতে স্পষ্ট, তিনি যারপরনাই বিরক্ত।
জিয়াগঞ্জ থানার এক পুলিশকর্মী এদিন বলছিলেন, ‘‘এ যে কী ঝক্কি, কী বলব! এত বছরের চাকরি জীবনে কোনওদিন কোনও ভিআইপি’কে নিরাপত্তা দিইনি। এ নিয়ে দুঃখ ছিল। আজ বুঝছি, বেঁচে গিয়েছি।’’ জিআরপির ওসি জানান, বহরমপুর স্টেশনে শের খান নামার পর এক পুলিশ কর্মী তাঁকে তাঁর গন্তব্যে পৌঁছে দেন।