ছুরিতে ক্ষতবিক্ষত করে বাবাকে খুন করল ছেলে।
শনিবার বিকেলে, শমসেরগঞ্জের চাঁদপুর সাহেবনগর গ্রামে, আব্দুল মজিদ (৫৭) নামে পেশায় বিড়ি শ্রমিককে খুনের কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশ অবশ্য আনারুল হক নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায়, মদ খেয়ে বাড়িতে এসে গালিগালাজ করছিল ছেলে। বাবা প্রতিবাদ করায় মদ্যপ ছেলের সঙ্গে শুরু হয় বচসা। সেই সময়ে লুঙ্গির কোঁচর থেকে আনারুল বের করে তার ছুরি। তার পর, ‘চুপ গেলি না হলি কোপাব!’ বলতে বলতে এগিয়ে যায় বাবার দিকে। তখনও মজিদ ছেলের আচরণের প্রতিবাদ করে চলেছেন। তখন আনারুল ঝাঁপিয়ে পড়ে ছুরি দিয়ে ক্রমাগত বাবার গলায় বুকে, পেটে কোপাতে থাকে। কেউ কিছু বোঝার আগেই লুটিয়ে পড়েন মজিদ। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
খবর পেয়েই ছুটে আসেন পড়শিরা। মদ্যপ ছেলেকে গোয়ালের খুঁটিতে বেঁধে চলতে তাকে মারধর। পড়শি কয়েকজন শেষতক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। রাতেই অবশ্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। পড়শিরা জানান, আব্দুলের দু’টি বিয়ে। তিন ছেলে রেখে প্রথম স্ত্রী মারা গেলে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তিনি। প্রথম পক্ষের বড় ও ছোট ছেলে ওড়িশা ও মুম্বাইতে রাজমিস্ত্রির কাজে। অভিযুক্ত সেজ ছেলে বছর তিরিশের আনারুল পেশায় দিনমজুর। তার বিয়ে হলেও স্ত্রী ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছে। দুই নাবালক ছেলে মেয়ে থাকে তাদের মামার বাড়িতে। আনারুলও বেশির ভাগ সময়ই বাড়িতে থাকে না। মাঝে মধ্যে বাড়িতে এসে মদ্যপ অবস্থায় সকলের উপরে অত্যাচার চালায় বলে পাড়া প্রতিবেশীর অভিযোগ।
ওই দিন বিকেলে, বাড়িতে এসে গালিগালাজ দিতে শুরু করে ছিল। পড়শিরা জানান, বাবা-ছেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি চলছিল অনেকক্ষণ ধরেই। থামানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। এক সময়ে ফিরে গিয়েছিলেন পড়শিরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই আব্দুলের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর আলিয়ারা বিবির আর্ত চিৎকার শুনে তাঁরা এসে দেখেন আনারুল তাঁকে কুপিয়ে চলেছে। শুধু বাবাকেই নয়, আনারুলের ছুরিতে হাত কেটেছে আলিয়ারা ও তাঁর বছর দশকের মেয়েরও। আলিয়ারা বলেন, ‘‘মদ খেয়ে এসে আনারুল এমন অত্যাচার চালাত প্রায়ই। ভাবতেই পারিনি এমন করে চোখের সামনে মানুষটাকে কুপিয়ে মারবে।’’
জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাবাকে খুনের অভিযোগে আনারুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’