Advertisement
E-Paper

সারিকুলরাই ভরসা ডোমকলের

তা-ও ধৈর্য ধরে সকলের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি।

সুজাউদ্দিন

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৮ ০২:১৬
কেরল ফেরত গল্প। ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।

কেরল ফেরত গল্প। ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।

টিনের চালওয়ালা বাড়ির দাওয়ায় বসে এক যুবক। তাঁকে ঘিরে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের ছেলে-বুড়ো-মহিলারা। ওই যুবকের কাছ থেকে প্রিয়জনদের সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে উৎকণ্ঠিত মুখগুলো। সারিকুল ইসলামের চোখেমুখে তখন ক্লান্তির ছাপ। তা-ও ধৈর্য ধরে সকলের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি।

বন্যা-বিপর্যস্ত কেরল থেকে কয়েকদিন আগে ডোমকলের জিতপুরের বাড়িতে ফিরেছেন সারিকুল। তবে তাঁর এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক এখনও কেরলে আটকে। তাঁদের খোঁজ দিতে ‘পোস্টম্যানের’ কাজ করছেন সারিকুল। রবিবার তিনি বললেন, ‘‘চোখের সামনে কত মানুষকে ভেসে যেতে দেখলাম। যেদিকে চোখ যায়, শুধু জল আর জল।’’ কথাবার্তার মধ্যেই এক বৃদ্ধা সারিকুলকে জড়িয়ে ধরলেন। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘‘বাপ আমার, ছেলেডা বাঁইচ্যা আছে তো! খাতি পাচ্ছে তো।’’

কারিমন বেওয়ার ছেলে পাতান শেখ কেরলে কাজের খোঁজে গিয়েছেন। গত কয়েকদিন ছেলের কোনও খোঁজ পাননি কারিমন। সারিকুল তাঁকে আশ্বস্ত করলেন, ‘‘সকলে ভাল আছে গো চাচি। ট্রেন চালু হলে ওরা ফিরে আসবে।’’

ঘরের ছেলেরা এখনও না ফেরায় ডোমকলের ঘরে ঘরে উৎকণ্ঠা। তাঁদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছেন সারিকুল কিংবা তাঁর মতো কেরল থেকে ফিরে আসা যুবকেরা। দিনদুয়েক আগে কেরল থেকে ফিরে এসেছেন কুপিলা গ্রামের মজিবর রহমান। এদিন বলছিলেন, ‘‘আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কাটা ছিল। তাই রক্ষে। ট্রেনে ওঠার দু’দিন আগে থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছিল। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তখনও হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় থামতে থামতেই আসছিল ট্রেনটা।’’ সময় যত গড়াচ্ছে, আশঙ্কা বাড়ছে ডোমকলের। কেরল থেকে ফিরে আসা সারিকুল-মজিবরদের কাছে ছেলে কিংবা স্বামীর সুস্থ থাকার খবর পেলেও চিন্তা পুরোপুরি যাচ্ছে না। এক বুক কষ্ট নিয়ে দিন কাটছে ডোমকলের। তবুও ক্ষণিকের স্বস্তি সারিকুল-মজিবরদের আশ্বাসটুকুই।

Kerala flood Kerala কেরল বন্যা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy