সময় নিয়েছিলেন দিন সাতেক। তবে নিশা চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য নতুন প্রার্থী ঠিক করলেন জনতা উন্নয়ন পার্টির (জেইউপি) প্রতিষ্ঠাতা হুমায়ুন কবীর। ঘোষণামাফিক, এ বার সংখ্যালঘু মুখকেই প্রার্থী করেছেন তিনি। অন্য দিকে, ‘অপমানিত’ নিশা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তিনি হুমায়ুনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন।
বুধবার ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন জানিয়েছেন, তিনি বালিগঞ্জ কেন্দ্রের জন্য একটি নাম ভেবে ফেলেছেন। তাঁর নাম আবুল হাসান। পেশায় পুলিশ আধিকারিক ছিলেন আবুল। তাঁকেই বালিগঞ্জ কেন্দ্রে জেইউপি-র প্রার্থী করবেন বলে ঠিক করে ফেলেছেন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য আরও কয়েক জন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। ধীরে ধীরে সেগুলি প্রকাশ্যে আনবেন। হুমায়ুনের ঘনিষ্ঠদের সূত্রে খবর, বালিগঞ্জের জন্য যাঁকে প্রার্থী করবেন বলে ঠিক করেছেন, তিনি বিধায়কের দূর সম্পর্কের মামা। বাম আমলে পুলিশের চাকরি করতেন। এখন অবসর জীবন কাটাচ্ছেন।
গত সোমবার নিজের নতুন দলের নাম ঘোষণা করেন হুমায়ুন। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের মোট ১০টি কেন্দ্রের প্রার্থীর নামও ঘোষণা করে দেন। তার মধ্যে দুটো কেন্দ্র, ভরতপুর এবং রেজিনগরে তিনি নিজেই লড়বেন বলে জানিয়ে দেন। এ ছাড়া মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের জন্য সাবেক তৃণমূল নেত্রী মনীষা পাণ্ডে, রানিনগরের জন্য আর এক হুমায়ুন কবীর, বারাসতের জন্য সিরাজুল হক মণ্ডল, খড়্গপুর গ্রামীণে ইব্রাহিম হাজি, বৈষ্ণবনগরে মুস্তারা বিবি, ভগবানগোলার জন্য আরও এক হুমায়ুন কবীর এবং হরিরামপুর কেন্দ্রের জন্য ওয়েদুল রহমানের নাম ঘোষণা করেন। তবে বালিগঞ্জ কেন্দ্রের জন্য নিশার নাম ঘোষণার ১২ ঘণ্টার মধ্যে হুমায়ুন জানিয়ে দেন, তাঁকে প্রার্থী করা হচ্ছে না। কারণ? বিধায়কের মন্তব্য, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঁর অঙ্গভঙ্গি ভাল নয়। বিধানসভার মতো পবিত্র জায়গায় এঁরা অযোগ্য। সাত দিনের মধ্যে বালিগঞ্জে কোনও মুসলিম প্রার্থীর নাম জানিয়ে দেব।’’
স্বাভাবিক ভাবে হুমায়ুনের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ কলকাতাবাসী নিশা। তিনি জানান, ‘হুমায়ুন চাচা’ তাঁদের পারিবারিক বন্ধু। নতুন দলে বিধায়ক নিজেই তাঁকে আমন্ত্রণ করেছিলেন। তিনি তা গ্রহণ করেছিলেন। প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণার আগে পর্যন্ত এ নিয়ে বিন্দুবিসর্গ জানতেন না। তবে হুমায়ুন তাঁকে টিকিট দেবেন বলার পরে খুশিই হয়েছিলেন। প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। তার পর যে কারণ দেখিয়ে তাঁকে সরানোর কথা জানিয়েছেন, তাতে তাঁর সম্মানহানি হচ্ছে। নিশা বলেন, ‘‘প্রতিনিয়ত সমাজমাধ্যমে ট্রোল হচ্ছি। অপমান করা হচ্ছে আমায়। আমার বা আমার পরিবারের যদি কিছু হয়ে যায়, তার দায়িত্ব কি উনি নেবেন? ওঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার কথা ভাবছি।’’
আরও পড়ুন:
এ সবের মধ্যে হুমায়ুনের আর এক প্রার্থী মুস্তারা বিবি অভিযোগ করেছেন, তাঁর চাকরি চলে গিয়েছে। তিনি জানান, হুমায়ুন তাঁকে প্রার্থী করার পরে সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তিনি নিশানা করেন তৃণমূলকে। শাসকদল ওই অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা জানায়, হুমায়ুন বা তাঁর দলকে ধর্তব্যেই রাখছে না তারা। অভিযোগ ভিত্তিহীন।