বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক যুবতীকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে এনে তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকায়। এই খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই এক যুবককে আটক করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবতী স্থানীয় একটি স্কুলে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ধৃত ওই যুবকের বাড়ি ভরতপুর থানা এলাকায়। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আট দিন আগে ওই যুবতী যখন বাড়ি থেকে কোনও একটি কাজে বেরিয়েছিলেন, সেই সময় ধৃত তাঁকে অপহরণ করেন।
এর পর ওই যুবতীর বাড়ির লোক বিভিন্ন এলাকায় তাঁর সন্ধানে তল্লাশি চালালেও কোথাও তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাঁর পরিবারকে ফোন করে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয় একটি বাড়িতে ওই যুবতীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। ওই মহিলার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে ইতিমধ্যে পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
মৃতার বাবা অভিযোগ, “আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করেছে ওই যুবক। দিন আটেক আগে আমার মেয়ে যখন বাড়ি থেকে বার হয়ে হেঁটে যাচ্ছিল সেই সময়ে তাঁকে বাইকে করে তুলে নিয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় আমি আমার মেয়ের খোঁজ করেছিলাম কিন্তু তাকে খুঁজে পাইনি। আমার মেয়ে গত কিছুদিন ধরে ‘ভয়েস মেসেজ’ পাঠাত। সে আমাদের ফোন করতে পারত না। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ আমাকে ফোনে জানায় আমার মেয়ের প্রাণহীন দেহ রঘুনাথগঞ্জ থেকে উদ্ধার হয়েছে।”
মৃতার কাকা বলেন, “একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত এক যুবকের সঙ্গে আমার ভাইঝি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। ওই যুবকের বাড়িতে দুই সন্তান এবং স্ত্রী রয়েছে। কিন্তু এই সম্পর্কের কথা গোপন করে আমার ভাইঝির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই ব্যক্তি।”
মৃতার কাকা আরও জানান, প্রায় ছ’মাস আগে ওই যুবক তাঁর ভাইঝিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন। বহু চেষ্টার পর সে বাড়ি ফিরে আসে। আট দিন আগে ওই যুবক ফের তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে চলে যান। তাঁর দাবি, ওই যুবক তাঁর ভাইঝিকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর নিজের ‘ডেরা’য় একাধিকবার ধর্ষণ করেন এবং সেই ছবি নিজের মোবাইল ফোনে তুলে রেখেছিলেন। ভাইঝি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে ওই যুবক তাঁর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের গোপন ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “ওই যুবকের এই কুকীর্তির প্রমাণ আমাদের মোবাইল ফোনে রয়েছে।”
তাঁর অভিযোগ, ভাইঝি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করার জন্যই ওই যুবক তাঁকে বৃহস্পতিবার রাতে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন। পরিবারের দাবি, ওই যুবকের কঠোর শাস্তি হোক।