Advertisement
E-Paper

২৬ বছর পরে বেকসুর খালাস হরিহরপাড়ায়

ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন ১০ জন। ‘ফেরার’ এক জন। বাকি ৩১ জন এই ছাব্বিশটা বছর ধরে মামলা লড়ে গিয়েছেন দাঁতে দাঁত চেপে।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৮ ০০:৫৬
ফাইল চিত্র 

ফাইল চিত্র 

মাঝখানে কেটে গিয়েছে ছাব্বিশটা বছর!

ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন ১০ জন। ‘ফেরার’ এক জন। বাকি ৩১ জন এই ছাব্বিশটা বছর ধরে মামলা লড়ে গিয়েছেন দাঁতে দাঁত চেপে।

বৃহস্পতিবার সেই ৩১ জনের সঙ্গে সঙ্গে জয়ীর হাসি হাসছে তামাম হরিহরপাড়া। সরকার পক্ষের আইনজীবী জিনারুল হক বলেন, ‘‘এ দিন বহরমপুর ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের (দ্বিতীয়) বিচারক সৌগত চট্টোপাধ্যায় ওঁদের বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেন। এই মামলাটি ২৬ বছর ধরে চলছিল। তবে এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে কোনও আপিল করা হয়নি।’’

দিনটা ১৯৯২ সালের ২ নভেম্বর।

ঠিক হয়, এ দিন প্রতিবাদ হিসেবে স্থানীয় ব্লক অফিসে আইন অমান্য হবে। হরিহরপাড়ায় তখন সমাজবিরোধী কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসে লোকজন অতিষ্ঠ। ওই এলাকায় কখনও কংগ্রেস, কখনও এসইউসি, কখনও সিপিএম ভোটে জিতেছে। কিন্তু ১৯৮৫-র মাঝামাঝি থেকেই এলাকা অশান্ত হতে শুরু করে। অভিযোগ, খুন, রাহাজানি, অপহরণ ছিল প্রায় নিত্য দিনের ঘটনা। রাজনৈতিক দলের প্রশ্রয়ে দাপিয়ে বেড়াত দুষ্কৃতীরা। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

এই পরিস্থিতিতে ১৯৯২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় প্রভাত সঙ্ঘের মাঠে এলাকার নানা শ্রেণির মানুষ একত্রিত হয়ে হরিহরপাড়া নাগরিক কল্যাণ পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। কল্যাণ পরিষদ ঠিক করে, ২ নভেম্বর ব্লক অফিসের সামনে গণ আইন অমান্য কর্মসূচি পালন করা হবে।

কল্যাণ পরিষদের অন্যতম মুখ্য উপদেষ্টা বছর বাহাত্তরের মদন সরকার জানাচ্ছেন, ব্লক অফিস প্রাঙ্গণে জেলার প্রায় সব থানা থেকে প্রচুর পুলিশ এনে জমা করা হয়েছিল। সামনের তিনশো জন দফতর প্রাঙ্গণে পৌঁছতেই মিছিল আটকে দেওয়া হল। এক দিকে পুলিশের ব্যারিকেড, অ‌ন্য দিকে বন্দুকধারী পুলিশ। তখনও স্লোগান উঠছে।

মদনবাবু বলছেন, ‘‘আমরা পুলিশের ব্যারিকেড পার হওয়ার চেষ্টা করছিলাম। আচমকাই শুরু হয়ে গেল লাঠিচার্জ। ছোড়া হল কাঁদানে গ্যাস। গুলি ছুটে এল। মিছিলের সামনের কয়েক জন গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ল। চার জন ঘটনাস্থলেই মারা গেলেন। পরে বহরমপুরে হাসপাতালে মারা যান আরও

তিন জন। মদ‌নবাবুর দাবি, ‘‘তৎকালীন সরকার আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছিল। সেটা এ দিন আরও এক বার প্রমাণিত হয়ে গেল। সে দিন যাঁরা নিহত হয়েছিলেন তাঁরা শহিদ। তাঁদের স্মৃতিতে হরিহরপাড়া ও চোঁয়ায় শহিদ বেদিও রয়েছে। আগামী ১১ অগস্ট সেই শহিদ বেদি থেকে বিজয় উৎসব করব। আমরা এ বার সরকারের বিরুদ্ধে খুন ও মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর জন্য মানহানির মামলা করব। আমরা তার প্রস্তুতিও শুরু করেছি।’’

Dead Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy