ডেঙ্গি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বহরমপুর শহরে মশানাশক স্প্রে করা শুরু করল কংগ্রেস। বুধবার দুপুরের বহরমপুরের গান্ধী কলোনি থেকে শুরু করে সার্কিট হাউস ও জেলা শাসকের বাংলোর আশপাশে থাকা বিভিন্ন জায়গায় মশানাশক স্প্রে করতে নামেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। পরে তিনি বলেন, ‘‘মানুষ যাতে সতর্ক হয়, মশার কামড়ে মানুষকে যাতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হতে না হয়, এই জন্য বেরিয়েছি। আমাদের ক্ষমতা কম। যতটুকু ক্ষমতা তা নিয়ে মানুষকে সচেতন করছি।’’
তাঁর দাবি, ‘‘এর আগের বছরেও মশার বিরুদ্ধে অভিযান করেছিলাম। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি আমাদের অভিযানের আগে ডেঙ্গি বেশি ছিল। আমাদের অভিযানের পরে ডেঙ্গি কমে যায়। মশানাশক স্প্রে করলে ডেঙ্গি রোখা সম্ভব। তাই শহরের এলাকায় এলাকায় আমরা মশানাশক স্প্রে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে দলের নেতৃত্ব মশানাশক স্প্রে করার কথা বলেছি।’’ অন্যদিকে এদিন বিকেলে যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ-সহ একাধিক দাবিতে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আমরা সব রকম চেষ্টা করছি।’’
তাঁর দাবি, ‘‘এ বার ডেঙ্গির পরীক্ষা বেশি করা হচ্ছে। যার জেরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি দেখাচ্ছে।’’ সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় মুর্শিদাবাদের ১৪৪৮ জনের ডেঙ্গি পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাতে ৪৪ জনের ডেঙ্গি পজ়িটিভ হয়েছে।
বহরমপুরের পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত বছর বহরমপুরে এ বার ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। ধারাবাহিক কাজের কারণে বহরমপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কম হয়েছে।’’
নাড়ুগোপাল বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়্ন্ত্রণ ধারাবাহিক কাজ। সেই কাজ আমরা করছি। আসলে রাজনীতি করার জন্য অধীর চৌধুরী এ ভাবে রাস্তায় নেমেছেন। আমরা এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ১৫০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বার ৪৫৭৪ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় সব থেকে খারাপ অবস্থা সুতি ২ ব্লকে। তার পরেই ভগবানগোলা ১ ব্লক ও লালগোলা ব্লক রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, গত বছর এই সময় জেলার ১৫০০ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মধ্যে বহরমপুরে ৩০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর এবছর ৪৫৭৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মধ্যে বহরমপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৩ জন। ফলে গত বছরের তুলনায় বহরমপুর শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এ বার অনেক কম। তবে সার্বিক ভাবে গোটা জেলায় গত বছরের ডেঙ্গি আক্রান্তের তিনগুন এবছরে আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)