ধৃত স্বপন সরকার। নিজস্ব চিত্র
হুড়মুড় করে পুলিশ যখন চেম্বারে ঢোকে, তখনও বাইরে জনা চারেক রোগী। চেম্বারে এক জনের দাঁত পরীক্ষা করছিলেন ‘ডাক্তারবাবু’।
পুলিশ দেখে ভড়কে যান চিকিৎসক। অবাক রোগীরাও। পুলিশ ওই চিকিৎসকের কাছে সার্টিফিকেট দেখতে চায়। তা দেখাতে পারেননি স্বপন সরকার। পুলিশের নানা প্রশ্নে কার্যত আমতা আমতা করতে থাকেন তিনি। পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে যায়। জেরার পরে শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাস্থল চাকদহের গোরাচাঁদতলা।
হাঁসখালি, চাপড়ার পর এবার চাকদহ। ফের জেলায় পুলিশের জালে পড়ল ভুয়ো ডাক্তার। এই নিয়ে জেলায় চারজন ভুয়ো ডাক্তার ধরা পড়ল। বাকি তিন জনের দু’জন হাঁসখালি এবং একজন চাপড়ার। চাকদহের গোরাচাঁদতলার এই ভুয়ো চিকিৎসক স্বপন সরকার দাঁতের ডাক্তার হিসেবে এলাকায় পসার জমিয়েছিলেন। শুধু ভুয়ো ডাক্তারিই নয়, বছরখানেক আগে এক মহিলাকে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল স্বপনকে। বর্তমানে সে জামিনে রয়েছে। শনিবারের গ্রেফতারির পরে এলাকার বাসিন্দারা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, স্বপনের বাড়ি চাকদহের তাতলায়। গোরাচাঁদতলা ছাড়াও চাকদহের রসুল্যাপুর বাজার ও তাহেরপুরের বীরনগরেও তার চেম্বার রয়েছে। রবিবার তাকে কল্যানী আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক তাকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার শিসরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “স্বপনকে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।’’ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ছয়েক আগে চাকদহের গোরাচাঁদতলায় চেম্বার শুরু করে স্বপন। সম্প্রতি একের পর এক ভুয়ো চিকিৎসক গ্রেফতারের পর স্বপনের চালচলন সন্দেহজনক হয়ে পড়েছিল। এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিন ধরেই সন্দেহ ছিল তাকে নিয়ে। সম্প্রতি এলাকার বাসিন্দারাই পুলিশের কাছে নালিশ জানান। একর পরে পুলিশও তার উপরে নজর রাখতে শুরু করে।
সর্বত্র ‘বিডিএস’ পরিচয় দেওয়া স্বপন পুলিশকে কোনও সার্টিফিকেট দেখাতে পারেনি। পুলিশকে জানায় সে হাতুড়ে ডাক্তার। পুলিশ জানতে পেরেছে সে নিয়মিত রোগীদের দাঁত তুলত। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন সাধারণ মানের ছাত্র স্বপন উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। বছর দুয়েক পরে আচমকা সে নিজেকে দাঁতের ডাক্তার বলে প্রচার করতে শুরু করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy