Advertisement
E-Paper

জেএনএমে অচলাবস্থাই

শুক্রবার সকাল ৯টা বাজতেই দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা এসে হাজির হন আউটডোরের সামনে। কিন্তু এসে দেখেন, সমস্ত টিকিট কাউন্টার ও আউটডোরের ঘর বন্ধ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০২:৫৩
জেএনএমের আউটডোর বন্ধ থাকায় প্রতিবাদ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

জেএনএমের আউটডোর বন্ধ থাকায় প্রতিবাদ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

জেলার একমাত্র মেডিক্যাল কলেজ, এবং সেখানে পর-পর তিন দিন আউটডোর অচল। রোগী ও পরিজনের দুরবস্থা সহজেই অনুমেয়। কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা গেল না শুক্রবারও। আরও তীব্র হল রোগী-অসন্তোষ।

এই হাসপাতালে শুধু নদিয়া নয়, বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলা থেকে প্রচুর রোগী প্রতিদিন আসেন। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের চাপে সেখানে গত কয়েক দিন ধরে তুলকালাম চলছে। পরিষেবা শিকেয় উঠেছে। আউটডোর দুরঅস্ত, ইন্ডোরেও চিকিৎসকদের দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পরিজনেরা। নতুন রোগী ভর্তিও তলানিতে এসে ঠেকেছে। সেই সঙ্গে দফায়-দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সঙঘাতে জড়িয়ে পড়ছে জনতা। আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে একপ্রস্ত তর্কাতর্কি, হাতাহাতি হয় জনতার। বিকেলে হস্টেল ছাড়েন অধিকাংশ জুনিয়র ডাক্তার।

শুক্রবার সকাল ৯টা বাজতেই দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা এসে হাজির হন আউটডোরের সামনে। কিন্তু এসে দেখেন, সমস্ত টিকিট কাউন্টার ও আউটডোরের ঘর বন্ধ। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে শতাধিক রোগী এসে আউটডোরের সামনে জড়ো হয়ে যান। কিন্তু বেলা বাড়ার পরেও আউটডোরের না খোলায় অসন্তোষ ও উত্তেজনা চরমে ওঠে। রোগী ও তাঁদের পরিজনদের একাংশ হাসপাতালের সামনের রাস্তা অবরোধ করেন। তাঁরা অনেকেই বলতে থাকেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বার বার বলা সত্ত্বেও চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক হচ্ছে না।’’

এ দিন বগুলা থেকে তাপস মণ্ডল এসেছিলেন ছেলেকে দেখাতে। এ দিন হাসপাতালে কোনও পরিষেবাই মিলল না। এ দিকে বছরের সাতেকের ছেলের চোখের অবস্থা বেশ খারাপ। বিরক্ত, হতাশ তাপসবাবু অন্যদের সঙ্গে পথ অবরোধে যোগ দেন। প্রায় মিনিট কুড়ি অবরোধ চলে। স্থানীয় মানুষদের অনেকেও তাতে সামিল হন। এঁদের মঘ্যে এলাকার দোকানীরাও চিলেন। হাসপাতালের পরিষেবা অচল থাকলে এঁদেরও ব্যবসায় ভাঁটা পড়ার আশঙ্কা থাকে।

তবে বেলার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, জরুরি বিভাগেই আউটডোর পরিষেবা দেওয়া হবে। সেই মতো সেখানে কয়েক জন সিনিয়র ডাক্তার বসেন। তবে সেখানে সে ভাবে রোগীরা আসেননি। তা ছাড়া, জরুরি বিভাগের একটি ঘরে সব রকমের আউটডোর পরিষেবা দেওয়াও সম্ভব হয়নি। হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানাচ্ছেন, আউটডোরে অন্তত ২০টি ঘরে রোগী দেখা হয়। একটি ঘরে এতগুলি বিভাগের চিকিৎসকদের বসা ও রোগী দেখা সম্ভব নয়। তাই কোনওরকমে পরিষেবা দেওয়া হয়। এ দিন রোগী ভর্তিও নেওয়া হয়নি সে ভাবে। ফলে ওয়ার্ডে সার-সার শয্যা ফাঁকা পড়েছিল। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের অধিকাংশকেই রেফার করা হয়েছে অন্যত্র।

হাসপাতাল চত্বরে ছিল ফাঁকা। জুনিয়র ডাক্তারদের অদিকাংশই নেই। হস্টেল ফাঁকা। কেউ বাড়ি চলে গিয়েছেন। কেউ বা আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়েছেন এনআরএসে। এই অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জুনিয়র ডাক্তার ছাড়া এত বড় হাসপাতাল চালানো সম্ভব নয়। শুক্রবার খুঁড়িয়ে চলেছে পরিষেবা। ইন্টার্নদের তরফে মেহেদি হাসান মোল্লা বলছেন, ‘‘বৃহত্তর স্বার্থে আন্দোলন চলছে। এখন তা আর জেএনএম-কেন্দ্রিক নেই। ফলে গোটা রাজ্যে যখন জুনিয়র ডাক্তারেরা কাজে যোগ দেবেন আমরাও সে দিন যোগ দেব।’’ আর হাসপাতালের সুপার অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ দিন জরুরি বিভাগে বহু মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। তবে কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা এই মূহূর্তে বলা যাচ্ছে না।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

College of Medicine and JNM Hospital Doctors Strike Kalyani
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy