সেলের বাজার শেষ হল বলে, এ বার ভোটের বাজার সরগরম।
দলীয় পতাকা, দলীয় প্রতীক আঁকা টুপি, রোদ চশমা, ছাতা, টি-শার্ট হইহই করে বিকোচ্ছে। এত দিন তৃণমূল আর বিজেপি-র দলীয় ছাপমারা জিনিস বিক্রির প্রতিযোগিতা ছিল বেশ হা়ড্ডাহাড্ডি। কিন্তু দোকানিরাই জানাচ্ছেন, বহু জায়গায় মনোনয়ন পেশ করতে না-পেরে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ দুই জেলাতেই বিজেপি-র কর্মীরা একটু দমে গিয়েছেন। ফলে পদ্মছাপ-গেরুয়া রঙের টি-শার্ট, চশমা, ছাতার বাজার গত কাল থেকে সামান্য পড়তি। সিপিএম চলছে বিজেপি-র ঠিক পিছনে। এদের থেকে অনেক পিছিয়ে কংগ্রেস। বাজারে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না আরএসপি ও ফরওয়ার্ড ব্লককে।
চৈত্র সেলের জামাকাপড়, বিছানার চাদরের পাশে ঢেলে রাখা ভোট-বাজারের পশরা। ফুট চারেক লম্বা একটু ভাল সিল্কের পতাকার দাম ন্যূনতম একশো টাকা। সাদা টুপিতে দলীয় প্রতীক আঁকা, প্রতিটি গড়ে পঁচিশ থেকে তিরিশ টাকা। টুপি রঙিন হলে দাম প্রায় দেড় গুণ বেশি। প্রতীক আঁকা সানগার্ড প্রতিটির দাম দুই থেকে তিন টাকা। কলকাতার বড়বাজারে ভোট প্রচারের সাজ-সরঞ্জামের এটাই পাইকারি দর। অন্যান্য বারের তুলনায় দড় বেশ চড়া বলেই জানাচ্ছেন স্বরূপগঞ্জ অঞ্চলের তৃণমূলের শিক্ষক-নেতা কল্লোল কর।
বহরমপুরের রবীন্দ্রসদন লাগোয়া এক দোকান মালিক শুভঙ্কর বসু বলছেন, ‘‘বিক্রিবাটায় এগিয়ে রয়েছে তৃণমূলের পতাকা। ছোট মাপের এক-একটি পতাকা ৫-৬ টাকা দরে বিকোচ্ছে। টুপির দর ৬-৭ টাকা। সানগার্ডের চাহিদা ব্যাপক। যা রোদ! দাম প্রতিটি ২-৩ টাকা। রোদ চশমার চাহিদাও কম নয়।’’ চশমা বিক্রেতা অশোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দলের অল্পবয়সী কর্মীদের মধ্যে রোদচশমা কেনার হিড়িক পড়েছে। ভোট যত এগিয়ে আসবে, চাহিদা তত বাড়বে। রোদে অনেক ক্ষণ দৌড়েদৌড়ি করতে হবে তো।’’
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নবদ্বীপ ব্লক সভাপতি কল্লোল করের কথায়, “ কলকাতা বড়বাজার থেকে পাইকারি দামে জিনিসপত্র না-কিনলে খরচ সামলানো যাবে না। আপাতত স্বরূপগঞ্জ অঞ্চলের বাইশটা বুথের মধ্যে আটটি বুথের জন্য নানা সাইজের দু’ হাজার পতাকা আর পাঁচশো টুপি অর্ডার দিয়েছি। বুঝতে পারছেন খরচের বহরটা?” তবে দলীয় ছাপ মারা ছাতার কোন ব্যবস্থা করছেন না কল্লোল বাবুরা। কারণ, ছাতা হাতে ভোটের কাজ করা অসুবিধাজনক।
গত বিধানসভা ভোটে ছাতা, গেঞ্জি, টুপি, পতাকা কিনে দোকান ভরিয়েছিলেন বহরমপুর ইন্দিরা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী বুবাই কুণ্ডু। তিনি জানান, তৃণমূলের পাশাপাশি কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি’র পতাকা কিনছে মানুষ। তবে আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের পতাকা রাখছি না। গোটা বড়বাজার খুঁজে ওই পতাকা পাইনি। চাহিদাও নেই।’’