ভারতমালা প্রকল্পে নদিয়ায় তিনটি বাইপাস, দুটি ফ্লাইওভার এবং ৩৫ টি আন্ডারপাস করা হবে। দু’দিন ধরে তেহট্ট, কৃষ্ণনগর এবং রানাঘাটে মহকুমা স্তরে এই প্রকল্প নিয়ে বৈঠক হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে। সেখানেই এমন খসড়া প্রস্তাব উঠে এসেছে।
সোমবার তেহট্টে, মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর ও রানাঘাটে মহকুমাশাসকের অফিসে ভারতমালা প্রকল্প নিয়ে বৈঠক হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তথ্য সংগ্রহকারী সংস্থা, ‘রাইটস’ এর প্রতিনিধিরাও ছিলেন। এ দিন রানাঘাটের বৈঠকে কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস প্রশ্ন তোলেন, “এই রাস্তা তৈরির জন্য অনেক জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন। জমিহারাদের কী ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে?” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জমি অধিগ্রহণের নতুন আইন অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণ করা হবে। ফলে জমিদাতারা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন। এ দিন কৃষ্ণনগরের বৈঠকেও তাঁরা একই কথা বলেছেন।
কৃষ্ণনগর সদরের মহকুমাশাসক ইউনিস রিশিন ইসমাইল বলছেন, “ভারতমালা প্রকল্প আমাদের মহকুমার কৃষ্ণনগর ১ ও চাপড়া ব্লকের ওপর দিয়ে যাবে। দুই ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থেকে শুরু করে বিধায়কদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। খসড়া প্রস্তাবে সকলেই রাজি হয়েছেন।” রানাঘাটের মহকুমাশাসক প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “এর আগেও ভারতমালা প্রকল্প নিয়ে ব্লক স্তরের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। কোন কোন এলাকা দিয়ে রাস্তা যাবে এ দিন তার ধারনা দিয়েছে রাইটস।”
ভারতমালা প্রকল্পে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে নদিয়া হয়ে উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাট পর্যন্ত প্রায় ৩২৯ কিলোমিটার চার লেনের রাস্তা হবে। এ দিন ওই সংস্থা খসড়া প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে প্রশাসনের কাছে। খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী করিমপুরের নাটনা মোড় থেকে করিমপুর বাইপাস শুরু হবে এবং চার কিলোমিটার দূরে গোবরুডাঙায় করিমপুর বাইপাস রাস্তা শেষ হবে। কৃষ্ণনগরের পানিনালার কাছ থেকে মাঠের ভিতর দিয়ে কৃষ্ণনগর বাইপাস শুরু হবে এবং প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে হাঁসখালির ইটাবেড়িয়ার কাছে কৃষ্ণননগর বাইপাস শেষ হবে।
সেখান থেকে হাঁসখালি-গুলা বাইপাস রাস্তা শুরু হবে। প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বগুলার হরিতলায় হাঁসখালি–বগুলা বাইপাস রাস্তা শেষ হবে। তাছাড়াও বগুলায় রেললাইনের উপর ওভার ব্রিজ করার প্রস্তাব রয়েছে। তাছাড়াও চাপড়ার সীমানগর এবং তেহট্টের বেতাইতে একটি করে ফ্লাইওভার করার প্রস্তাব রয়েছে। করিমপুরের স্বপনপুর মোড় থেকে শুরু করে একেবারে রানাঘাটের দত্তফুলিয়া পর্যন্ত ছোট ও বড় মিলিয়ে প্রায় ৩৫ টি আন্ডারপাস করার প্রস্তাব রয়েছে।
এ দিন বৈঠক শেষে কৃষ্ণনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিবুনাথ ঘোষ বলেন, “ভারতমালা প্রকল্প যে এলাকার ওপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে তাতে আমাদের আপত্তি নেই। সেই বিষয়টি আমরা এ দিন বৈঠকে
জানিয়েও দিয়েছি।”