তৃণমূলের কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার জের কাটার আগেই ফের দুষ্কৃতীদের পিস্তলের বাটের আঘাতে রক্ত ঝরল বহরমপুরে।
অটো থেকে নামিয়ে এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে শুধু মারধর করাই নয়, ছিনিয়ে নেওয়া হয় তাঁর হাতের ব্যাগটিও। শুক্রবার সকালে বহরমপুর-হরিহরপাড়া রাজ্য সড়ক ধরে অটোয় যাচ্ছিলেন কেরামতুল্লা নামে ওই চিকিৎসক। সেই সময়ে জনা কয়েক দুষ্কৃতী অটো থামিয়ে তাঁকে মারধর করে ব্য়াগটি নিয়ে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। আহত ওই চিকিৎসককে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে বহরমপুর শহরের সৈয়দাবাদ এলাকার বাঙালপাড়ায় তাঁর নিজের বাড়ির দরজার সামনে দুষ্কৃতীরা গুলি করে তৃণমূল কর্মী সুবীর সরকারকে। পেটে-বুকে গুলি নিয়ে কলকাতা নীলরতন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তার আগের মঙ্গলবার ও বুধবার দু’ দিনই সন্ধ্যায় শাসক দলের যুব সমর্থকরা শতাধিক মোটর বাইক নিয়ে অকারণে বহরমপুর শহরের ব্যারাক স্কোয়ার মাঠ, ক্যান্টনমেন্ট রোড, স্বর্ণময়ী-সহ বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালায় বলেও অভিযোগ।
তারও আগে গত ২৯ এপ্রিল রাতে বহরমপুরে রহস্যজনক ভাবে খুন হয় তৃণমূল কর্মী মাসারুল হোসেন সুমন। তারও কিছু দিন আগে ২০ ফেব্রুয়ারি খুন হয় তৃণমূলের বহরমপুর পূর্ব ব্লকের নির্বাহী সভাপতি মাসুদ রানা। রক্ত ঝরেই চলেছে।
হোমিওপ্যথিক চিকিৎসক কেরামতুল্লার বাড়ি বহরমপুর শহরের বারুইপাড়া গ্রামে। তাঁর ডাক্তারখানা রয়েছে বহরমপুর শহরে প্রাঙ্গণ মার্কেটে। কেরামতুল্লা বলেন, ‘‘এ দিন সকালে কুমড়াদহ ঘাটের কাছে একটি ব্যাঙ্কে লাখ খানেক টাকা জমা দিয়ে বহরমপুরে ডাক্তারখানায় যাওয়ার জন্য অটো ধরি। পিছনে ধাওয়া করে একটি মোটর বাইক। ওই বাইকে ছিল দু’জন। তাদের দলের আরও এক জন কাটাবাগান থেকে অটোতে চাপে। কাটাবাগান ও বুটারডাঙার মাঝে অটো পৌঁছতেই ওই তিন দুষ্কৃতী হামলে পড়ে। পিস্তলের বাট দিয়ে মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। তারপর জবরদস্তি আমার ব্যাগ কেড়ে নিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে চলে ওরা বহরমপুরের দিকে যায়।’’ তিনি জানান, ওই ব্যাগে ছিল ৩ হাজার টাকা, এটিএম কার্ড, আধার কার্ড, চাবি, রেশন কার্ড ও আরও অনেক জরুরি কাগজপত্র।
বহরমপুর থানার আইসি শৈলেন বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই ভদ্রলোক ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে ফিরছে ভেবে দুষ্কৃতীরা ছিনতাই করার ছক কষেছিল।’’ কেরামতুল্লা, বাপি, বাইক বাহিনী, সুমন, মাসুদের মতো লাগাতার খুন— সন্ত্রাসের ঘটনায় বহরমপুর শহর ও শহরতলি এলাকায় ব্যাপক সন্ত্রাস ছড়িয়েছে। শহরের আইন শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে বিভিন্ন মহল ক্ষুব্ধ হলেও বহরমপুর থানার আইসি শৈলেন বিশ্বাস অবশ্য অবিচল— বলেন, ‘‘এ সব ঘটনাগুলিই বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy