প্রায় পাঁচ বছর পরে নবদ্বীপের বিভিন্ন ফেরি ঘাটে বাড়ল নৌকার ভাড়া।
মন্দিরনগরী নবদ্বীপ-মায়াপুর ও স্বরূপগঞ্জের মধ্যে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হল গঙ্গা এবং জলঙ্গি নদীপথে চলাচলকারী নৌকা। এখানে জলপথে মোট তিনটি রুটে যাত্রিবাহী ফেরি চলাচল করে। সব ক’টি ফেরিঘাটই পরিচালনা করে নবদ্বীপ জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। এত দিন পর্যন্ত নবদ্বীপের বিভিন্ন ঘাটে মাথাপিছু নৌকার ভাড়া ছিল সর্বনিম্ন এক টাকা এবং সর্বোচ্চ দু’টাকা। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের সাত তারিখ থেকে ওই ভাড়ার হার সামান্য বাড়ানো হয়েছে।
এত দিন মাথাপিছু নবদ্বীপ-মায়াপুরের ভাড়া ছিল ২ টাকা, হয়েছে ৩ টাকা। নবদ্বীপ-স্বরূপগঞ্জের ভাড়া ছিল দেড় টাকা, হয়েছে ২ টাকা। মায়াপুর-স্বরূপগঞ্জের ভাড়া ছিল ১ টাকা, হয়েছে ২ টাকা। তবে অন্য দুই পাড়ে বর্ধিত হারে ভাড়া চালু হলেও জলঙ্গি দিয়ে মায়াপুর-স্বরূপগঞ্জে স্থানীয় মানুষের আপত্তিতে পুরানো ভাড়াই বহাল রাখতে বাধ্য হয়েছেন ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ।
ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য গত পাঁচ বছরে জ্বালানি থেকে কর্মীদের বেতন, নৌকা থেকে ইঞ্জিনের দাম, বর্ষাকালে ঘাট সংরক্ষণের খরচ— বেড়েছে সব কিছুই। অথচ নবদ্বীপের বিভিন্ন খেয়াঘাটের নৌকার ভাড়া সেই এক-দু’টাকাতেই আটকে ছিল। নবদ্বীপ ফেরিঘাট পরিচালন সমিতির সম্পাদক অলোক মণ্ডল বলেন, “২০১৩ সালে শেষবার ভাড়া বেড়েছিল। তার পর সব কিছুরই দাম বাড়ল, কেবল নবদ্বীপ ফেরিঘাটের ভাড়া ছাড়া। ২০১৬ সালে আমরা নদিয়া জেলা পরিষদের কাছে ভাড়া বাড়ানোর আবেদন করি। সম্প্রতি তাঁরা অনুমোদন দেওয়ার পর নতুন ভাড়ার হার চালু করা হয়েছে। আর কোথাও এত কম ভাড়ায় ফেরি চলাচল করে বলে মনে হয় না।”
মায়াপুর-স্বরূপগঞ্জে নতুন ভাড়া চালু না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে স্থানীয় বাসিন্দা এবং নদিয়া জেলা পরিষদের জন্যস্বাস্থ্য দফতরের কর্মাধ্যক্ষ তথা নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি হরিদাস দেবনাথ জানান, স্বরূপগঞ্জ থেকে দু’টি পথে ফেরি চলে। গঙ্গায় নবদ্বীপ-স্বরূপগঞ্জ আর জলঙ্গিতে মায়াপুর-স্বরূপগঞ্জ। কিন্তু স্বরূপগঞ্জ থেকে দূরত্বের নিরিখে নবদ্বীপ যতটা, তার অর্ধেকেরও কম মায়াপুর। তাই ভাড়ার হারে পার্থক্য করতে বলে হয়েছে। তিনি বলেন “পাঁচ মিনিটের পথের ভাড়াও দু’টাকা, আবার এক মিনিটের পথের ভাড়া দু’টাকা কী করে হয়! তবে আগে ওই পথে ছাত্রছাত্রীদের ভাড়া ছিল পঞ্চাশ পয়সা। সেটা বাড়িয়ে সাধারণের সঙ্গে এক টাকা করে দেওয়া হয়েছে।”