Advertisement
E-Paper

থমকে সেতুর কাজ, ক্ষুব্ধ নওদা

দু’টি পা়র এক হতে চায়। সেতুরও প্রয়োজন আছে। সে কথা স্থানীয় বাসিন্দারা যেমন জানেন। তেমনই বিষয়টি অজানা নয় প্রশাসন থেকে রাজনীতির কারবারিদের। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না গত এক দশকেও। ভোট আসে, ভোট যায়। চেয়ে থাকে নদীর দু’পারও। এপারে মুর্শিদাবাদ। অন্য পারে নদিয়া। মাঝে জলঙ্গি। দুই পারের ব্যবধান সাকুল্যে ১০০ মিটার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ০২:১৩
দুই পাড় মিলবে কবে। ছবি: সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

দুই পাড় মিলবে কবে। ছবি: সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

দু’টি পা়র এক হতে চায়। সেতুরও প্রয়োজন আছে। সে কথা স্থানীয় বাসিন্দারা যেমন জানেন। তেমনই বিষয়টি অজানা নয় প্রশাসন থেকে রাজনীতির কারবারিদের। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না গত এক দশকেও। ভোট আসে, ভোট যায়। চেয়ে থাকে নদীর দু’পারও। এপারে মুর্শিদাবাদ। অন্য পারে নদিয়া। মাঝে জলঙ্গি। দুই পারের ব্যবধান সাকুল্যে ১০০ মিটার। প্রতি ভোটেই ডান-বাম সব দলই প্রতিশ্রুতির ঢল নামায়। কিন্তু ভোট মিটতেই প্রতিশ্রুতি যেন হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। অথচ সেতুটা হয়ে গেলে দুই জেলার উপকার হত।

২০০৬ সালে নওদা ও পলাশিপাড়ার সংযোগকারী রাধানগর ঘাটের সেতুর শিলান্যাস করেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। বলা হয়, বছর তিনেকের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে সেতু। তারপর কেটে গিয়েছে পাক্কা এক দশক। আজও সেতু তৈরি হয়নি। আর এই বিলম্ব নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

কংগ্রেসের অভিযোগ, মুর্শিদাবাদে তৃণমূল বিরোধী দল। ফলে সেতু তৈরিতে সমস্যা করছে তৃণমূল। ফলে সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে। যদিও প্রশাসনের দাবি, দরপত্র নিয়ে খুশি নন ঠিকাদারেরা। ঠিকাদারদের পাল্টা দাবি, দরপত্রে বেঁধে দেওয়া দরে কাজ করা করলে লোকসান নিশ্চিত। ফলে নতুন দরপত্র না ডাকলে কাজ শুরু করা যাবে না। ২০০৬ সালের ১৪ জানুয়ারি জেলা পরিষদের প্রচেষ্টায় অধীর চৌধুরী ওই সেতুর শিলান্যাস করেন। সরকারি নিয়ম মেনে কাজও শুরু হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকারের আঠারো মাসে বছর। কাজও চলে ঢিমেতালে। প্রথম পর্যায়ে দু’টি খুঁটি পোঁতা হয়েছে মাত্র। কাজ বলতে ওইটুকুই। অথচ ওই সেতু হলে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া ও নওদার মানুষ অল্প সময়ের মধ্যে নদিয়ার সদর শহর কৃষ্ণনগরে পৌঁছতে পারবেন। বিশেষ করে মালবাহী গাড়ি ওই সেতু পেরিয়ে সহজেই এ জেলা থেকে অন্য জেলায় চলে পারত। এখন রাধানগর ঘাট থেকে বহরমপুরের দূরত্ব ৫৬ কিলোমিটার। অন্য দিকে, আমতলা ভায়া হরিহরপাড়া হয়ে বহরমপুরের দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটার। রাধানগর ঘাট থেকে ৪৫টি বাস এই দু’টি রুটে চলাচল করে।

বাস চালক সমিতির পক্ষে নিলয়কুমার সিংহ বলেন, ‘‘সেতু চালু হলে মানুষ নদিয়া যাবেন বাসে চেপে। কিন্তু সে আর হল কই!’’ কংগ্রেসের আবু তাহের খান বলেন, ‘‘সরকারি কাজের কোনও হিসেব নেই। ২০০৬ সালে বলা হয়েছিল তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। কিন্তু তারপর দু’টো ভোট হয়ে গেল। কিন্তু কাজ শেষ হল না। মানুষ আমাকে কথা শোনাচ্ছেন। কিন্তু আসলে প্রশাসনই ঝামেলাটা পাকাচ্ছে।’’ জেলা পরিষেদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ কংগ্রেসের মোশারফ হোসেন মধু বলেন, ‘‘এই সেতু সম্পূর্ণ হলে নওদার কৃষিজ দ্রব্য সহজেই নদিয়ার বাজারে আসতে পারত। এতে কৃষিপ্রধান নদিয়ার চাষিদের আর্থিক হাল ফিরত। কিন্তু আমলারা বিষয়টিকে ঠাণ্ডা ঘরে চাপা দিয়ে রেখেছেন।’’

পূর্ত দফতরের জেলা নির্বাহী বাস্তুকার শুভঙ্কর মাঝি বলেন, ‘‘ওই সেতুর সিংহ ভাগ কাজই শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থা মাঝপথে দাবি করে, দর না বাড়ালে তারা কাজ করবে না। তাই সাময়িক ভাবে কাজ বন্ধ রয়েছে। নতুন করে দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি আগামী নভেম্বরে আবার কাজ শুরু হবে।’’

যদিও নদীর দুই পারের বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘এমনই প্রতিশ্রুতি ঢের শুনেছি। তাই না আঁচানো পর্যন্ত বিশ্বাস নেই।’’

Naoda Bridge development work stopped outraged
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy