Advertisement
E-Paper

পাশে সুমিত, শঙ্কর বলছেন ‘মডেল জোট’

তাঁর পুরনো গড়, রানাঘাটে কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী শঙ্কর সিংহ। তবে একা নন। হাতলওয়ালা পাশের চেয়ারে বসেছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-সহ সিপিএমের বেশ কয়েকজন নেতা-নেত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০১:৪২
শঙ্কর সিংহ। —নিজস্ব চিত্র।

শঙ্কর সিংহ। —নিজস্ব চিত্র।

তাঁর পুরনো গড়, রানাঘাটে কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী শঙ্কর সিংহ। তবে একা নন। হাতলওয়ালা পাশের চেয়ারে বসেছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-সহ সিপিএমের বেশ কয়েকজন নেতা-নেত্রী। সভা চলাকালীন বেশ কয়েকবার সুমিতবাবুর সঙ্গে হাসতে হাসতে কথা বলতেও দেখা গেল শঙ্করবাবুকে।

যা দেখে কংগ্রেস কর্মীদের অনেকেই বলছিলেন, ‘‘শঙ্করদার এই মেজাজটাই কিন্তু আসল রাজা। জোট মানে শুধু খাতায় কলমে নয়। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কী ভাবে লড়াই করতে হয় সেটা শঙ্করদাকে দেখেই শেখা উচিত।’’

রবিবার বিকেলে রানাঘাটের রবীন্দ্র সার্ধশতবর্ষ মঞ্চে কংগ্রেস ও সিপিএম জোটের কর্মিসভা ছিল। সেখানে দুই দলের প্রায় হাজার চারেক কর্মী ছিলেন। হলঘরে সকলের জায়গাও হয়নি। তাঁরা হলের বাইরে দাঁড়িয়েই নেতাদের বক্তব্য শুনছিলেন।

বাইরে দাঁড়িয়ে এক সিপিএম কর্মী যেমন বলেই ফেললেন, ‘‘শঙ্করদার বক্তব্যের মধ্যে কিন্তু বেশ একটা গরম গরম ব্যাপার আছে।’’ সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেসেরও এক কর্মী পাল্টা বললেন, ‘‘আস্তে কথা বললে কী হবে, সুমিতদার বক্তব্যেও কিন্তু দম আছে।’’ বক্তব্যের মাঝে এমন কথাবার্তায় বিরক্ত হয়ে এক প্রবীণ সিপিএম কর্মী ধমকের সুরেই বলেছেন, ‘‘চুপ কর না বাবা। মন দিয়ে কথাগুলো শুনতে দে। এ সব আলোচনা পরেও তো করা যায়!’’

এমন দৃশ্য শেষ কবে দেখেছে রানাঘাট? নাহ্, স্থানীয় পোড় খাওয়া নেতাকর্মীরাও মনে করতে পারছেন না। এ দিন সভায় প্রথমে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন সুমিতবাবু। শঙ্করবাবু তখন মঞ্চেই বসে। সুমিতবাবুর বক্তব্য শুনে মাঝেমধ্যেই হাততালি পড়ছে। হাসতে হাসতে মাথা নাড়ছেন শঙ্করবাবুও। সুমিতবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল সরাতেই হবে। আর সেই কারণেই এই জোট। আপনারা সকলেই শঙ্করদাকে জানেন ও চেনেন। এই নির্বাচনে তাঁকে জেতাতে হবে। লড়াই করতে হবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।’’

এ দিন শঙ্করবাবু শুরু থেকেই আক্রমনাত্মক ছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘রানাঘাট পুরসভায় দুর্নীতির পাহাড় জমেছে। সেখানে টাকা লুঠ হচ্ছে। ভাল মানুষের মুখোশ পড়ে তো একজন ঘুরে বেড়াচ্ছেন। র‍্যামেল থেকে দু’কোটি টাকা নিয়ে সেই টাকা পার্সোনাল লেজার অ্যাকাউন্টে জমা করেছেন। ওঁকে জেলে যেতেই হবে। র‍্যামেলের চুক্তির বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন।’’

তিনি বলেন, ‘‘একসময় আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম। কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে আজ কংগ্রেস ও সিপিএম এক হয়ে নির্বাচনে লড়াই করছে। ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়, মানুষের চাহিদাতে এই জোট হয়েছে। এই জোট পঞ্চায়েত, পুরসভা নির্বাচনে মডেল হবে।

কর্মিসভা শেষে জোটের মিছিল বের হয়। শঙ্কর সিংহ ও সুমিত দে ছিলেন মিছিলের প্রথম সারিতে। তাঁদের দাবি, ওই মিছিলে প্রায় হাজার দশেকের উপরে লোক হয়েছিল। রানাঘাটেকর অনেককেই এ দিন বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এই জোটকে এ বারে কিন্তু রোখা মুশকিল। মমতা কি এমনিই ভয় পাচ্ছে! শত্রুর শত্রু যে চরম মিত্র হয়ে যেতে পারে মমতা তা হাড়ে হাড়ে বুঝছেন।’’

যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘এ সব নিয়ে আমরা মাথাই ঘামাচ্ছি না। আমাদের লক্ষ্য তেহট্টের তিনটি আসনে জেতা। আর বাকি ১৪ টি আসনে জয়ের ব্যবধান বাড়ানো।’’

state news ranaghat shankar singh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy