ফোন করে এটিএমের পিন নম্বর জেনে নেওয়ার পুরনো কায়দা আর নয়। সরাসরি এটিএম কাউন্টারে কার্ড হাতসাফাই করে জালিয়াতি হল ধুলিয়ানে। তিন জনের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দু’লক্ষ টাকা তুলে নিল দুই প্রতারক। সিসিটিভি ফুটেজে তাদের দেখা গেলেও সোমবার রাত পর্যন্ত ধরা যায়নি।
প্রতারিত এক মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, এ দিনও রঘুনাথগঞ্জে একটি ব্যাঙ্কের সামনে প্রতারকদের ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। তারা হিন্দিভাষী, একটি মোটরবাইকে ঘুরছে। সমশেরগঞ্জ থানার পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছে। তবে দু’জনকে শনাক্ত করা যায়নি।
রবিবার দুপুরে রাস্তাঘাটে তেমন ভিড় ছিল না। ধুলিয়ান শহরের নতুন কৃষ্ণপুরের ইমতিয়াজ আহমেদ ব্যাঙ্ক লাগোয়া এটিএমে থেকে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। সবে ২টো বেজেছে। কিন্তু কার্ড ঢুকিয়েও টাকা পাননি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘টাকা তুলতে না পেরে নিরাপত্তাকর্মীদের খোঁজ করি। কেউ ছিলেন না।”
ইতিমধ্যে এক মহিলার সঙ্গে ঢোকেন দু’জন। মহিলাও বহু চেষ্টা করে টাকা তুলতে পারেননি। তা দেখে দুই আগন্তুক সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। তাতেও টাকা তোলা যায়নি। এর পরেই সকলে এটিএম ঘর থেকে বেরিয়ে যান।
এর কিছু ক্ষণ পরেই ফরাক্কার মুস্কিনগর গ্রামের ওই মহিলা সায়েদা বিবি তাঁর মোবাইলে মেসেজ পান যে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ইমতিয়াজ আহমেদও ঘণ্টাখানেক পরে বাড়ি ফিরে চারটি মেসেজ পান মোবাইলে । দেখেন, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তিন দফায় ৪০, ৪০ ও ২০ হাজার মিলিয়ে নগদ এক লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে ফরাক্কার এক এটিএম কাউন্টার থেকে। ওই কাউন্টার থেকেই অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে আরও ৩২ হাজার টাকা।
রবিবার ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় দু’জনে পুলিশকে সমস্ত ঘটনা জানান। থানায় গিয়ে তাঁরা শোনেন, সে দিন ওই একই এটিএম কাউন্টার থেকে আরও এক মহিলার ২৬ হাজার টাকা একই কায়দায় তুলে নেওয়া হয়েছে। এ দিন সমশেরগঞ্জ থানার ওসি অমিত ভকত ওই ব্যাঙ্কে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করেন। দেখা যায়, দু’জন অচেনা লোক সুকৌশলে ওই মহিলার এটিএম কার্ডটি বদলে নিচ্ছে। এবং ইমতিয়াজ আহমেদের কার্ডটিও ছুঁয়ে দেখছে তারা।
ওসি বলেন, “ওই দুই প্রতারকের ছবি মিলেছে। পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। প্রতারক চক্রটি জঙ্গিপুর এলাকাতেই ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”
কেন এমন সন্দেহ?
সায়েদা বিবি জানান, তাঁর এটিএম কার্ড ব্লক হয়ে যাওয়ায় প্রতিবেশীদের পরামর্শে এ দিন তিনি ওই ব্যাঙ্কের রঘুনাথগঞ্জ শাখায় বিষয়টি জানাতে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “ব্যাঙ্কের ভিতর থেকে নজরে পড়ে, সেই দুই প্রতারক বাইরে ঘোরাফেরা করছে। তক্ষুনি ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসি। কিন্তু ওরা একটা বাইকে চেপে চলে যায়। ভয়ে চিৎকার করতে পারিনি।” এই ঘটনার পরে পুলিশের ধারণা হয়েছে, ওই এলাকায় ফাঁদ পাতছে এটিএম প্রতারকেরা। শুধু ওই দু’জনই নয়, সঙ্গে আরও কেউ রয়েছে। এটিএম কাউন্টারগুলিতে নজরদারি শুরু হয়েছে। আশপাশের থানায় প্রতারকদের ছবিও পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy