Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩

তাহেরপুর-কাণ্ডে ধৃত কেয়ারটেকার

তাহেরপুরের গির্জায় চুরির চেষ্টায় অভিযোগে গির্জারই কেয়ারটেকার তপন মণ্ডলকে গ্রেফতার করল পুলিশ। নদিয়ার পুলিশ সুপার ভরতলাল মিনা জানান, সোমবার ভোরে স্থানীয় বারাসত গ্রাম প়ঞ্চায়েত এলাকার বাড়ি থেকে তাঁকে ধরে রানাঘাট থানার পুলিশ। এ দিন ধৃতকে রানাঘাট আদালতে হাজির করানো হলে দু’দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৫ ০১:৫৪
Share: Save:

তাহেরপুরের গির্জায় চুরির চেষ্টায় অভিযোগে গির্জারই কেয়ারটেকার তপন মণ্ডলকে গ্রেফতার করল পুলিশ। নদিয়ার পুলিশ সুপার ভরতলাল মিনা জানান, সোমবার ভোরে স্থানীয় বারাসত গ্রাম প়ঞ্চায়েত এলাকার বাড়ি থেকে তাঁকে ধরে রানাঘাট থানার পুলিশ। এ দিন ধৃতকে রানাঘাট আদালতে হাজির করানো হলে দু’দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে রানাঘাট ১ ব্লকের বারাসাত গ্রাম পঞ্চায়েতের খ্রিষ্টানপাড়ার সেন্ট টমাস ক্যাথলিক গির্জায় হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। সেখান থেকে কিছু খোওয়া না গেলেও, বেশ কিছু মূল্যবান জিনিস বাইরে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার ভোরে গির্জার ঘণ্টা বাজাতে এসে বিষয়টি প্রথম নজরে আসে সেখানকার কেয়ারটেকার তপনবাবুর। গত ১৩ মার্চ রাতে রানাঘাটের কনভেন্ট স্কুলে বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের ও ডাকাতির অভিযোগ ঘিরে গোটা দেশেই সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল। তার কয়েক মাসের মধ্যেই তাহেরপুরের গির্জায় চুরির ঘটনায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। ছুটে যান জেলা পুলিশ সুপারও।
কিন্তু, কেয়ারটেকারকে গ্রেফতার করা হল কেন?
পুলিশ কর্তাদের যুক্তি, গির্জার চাবি দুই ফাদার ও কেয়ারটেকারের কাছে থাকত। ঘটনার রাতে ফাদাররা ছিলেন না। গির্জারই কাজে ব্যান্ডেলে গিয়েছিলেন। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, বৃহস্পতিবার রাতে গির্জার দরজা খোলা ছিল। তদন্তকারী পুলিশ কর্তাদের অনুমান, কেয়ারটেকার হয়তো দরজা বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছিলেন। অথবা, বিশেষ কোনও কারণে ইচ্ছে করেই তা করেছিলেন। যার সুযোগকে কাজে লাগায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের যুক্তি, এর দায় এড়াতে পারেন না ঘটনার এক মাসের বেশি কিছু সময় আগে যোগ দেওয়া কেয়ারটেকার। সে কারণেই গ্রেফতার।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, কেয়ারটেকার মাসে মাত্র দু’হাজার টাকা মাইনে পেতেন। পুলিশকে তপনবাবু জানিয়েছেন, তাঁকে মূলত প্রচার মূলক কাজের জন্যেই নিয়োগ করা হয়। পুলিশের অনুমান, মাইনে ও কেয়ারটেকারের কাজ করানো নিয়ে ফাদারদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। সেই ক্ষোভ থেকে ঘটনায় অভিযুক্তের ইন্ধন থাকতে পারে।

গ্রেফতারের কারণ যাই হোক, তপনের ইন্ধনের কথা মানতে পারছেন না অনেকেই। গির্জার রেভারেন্ট ফাদার সতীশ বলেন, ‘‘সন্দেহ থেকেই হয়তো ওকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ও আমাদের কর্মচারী। বলুন তো, এ কাজ করতে পারে সেটা ভাবি কি করে!’’ আপনাদের সঙ্গে তপনের কী মতবিরোধ চলছিল? ফাদার বলেন, ‘‘সে রকম কিছু ছিল বলে মনে পড়ছে না!’’ তপন এমন কাজ করতে পারে, তা মন থেকে মানতে পারছে না ফাদার এবং গ্রামবাসীদের নিয়ে গঠিত চার্চ কাউন্সিল কমিটির সদস্য শচীন বিশ্বাসও। তিনি জানান, এর আগেও তপন বিভিন্ন জায়গায় বিশ্বাস যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করেছে। কোথাও সমস্যা হয়নি। কেয়ারটেকারের গ্রেফতারের খবরে অবাক বঙ্গীয় খ্রিষ্টান পরিষেবার তাহেরপুর শাখার সম্পাদক জন মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘ও তো গির্জার কাজ করতে ভালবাসত। এমন লোক কাজ করবে?’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.