মুখে ‘অভিন্ন’ জোটের কথা বললেও, কংগ্রেস বিধায়কের সঙ্গে ‘মাখামাখি’ দেখলে বর্ষীয়ান বাম নেতাদের এখনও মুখ ভার হয়!
নদিয়ায় সিপিএমের দুই লোকাল কমিটির সম্পাদক অপসারণের পর এখন বাম মহলে এমনই কানাঘুষো শুরু হয়েছে।
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সিপিএমের শান্তিপুর শহর-২ লোকাল কমিটির সম্পাদক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়কে সে কারেই ‘শাস্তি’ পেতে হল। তাঁর ‘দোষ’ স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’।
যা নিয়ে আপত্তি উঠতে শুরু করেছিল বিধানসভা ভোটের পর থেকেই। শুধু তাই নয় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগও উঠেছিল, দল ভাঙিয়ে কর্মীদের কংগ্রেসমুখী করছেন তিনি। তাঁকে সে ব্য়াপারে সতর্কও করা হয়েছিল। কিন্তু সে কথা কানে তোলেননি দীপঙ্করবাবু। বলেই জেলা নেতাদের দাবি।
দলের এক জো নেতার কথায়, ‘‘শোনা তো দূরের কথা, এক সময় নিজের বাড়িতেই কর্মীদের ডেকে কংগ্রেস বিধায়ককে পাশে বসিয়ে কার্যত বিদ্রোহের সুরেই বলেছিলেন, দল যাই বলুক তাঁরা বিধায়কের সঙ্গেই থাকবেন। অন্তত এমন তিনটি অভিযোগ জমা পড়েছিল শান্তিপুর জোনাল কমিটির কাছে।’’ সেই অভিুক্তের তালিকায় রয়েছেন, দলের দুই শাখা সম্পাদকও।
শান্তিপুরের কংগ্রেস বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য অবশ্য এ নিয়ে বিশেষ মুখ কুলতে চাননি। তিনি বলেন, “এটা সিপিএমের অভ্যান্তরীণ বিষয়। আমার কোনও মতামত নেই।’’
তবে, তার জেরেই শান্তিপুর জোনাল কমিটি ওই নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই মত জেলা কমিটির কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। সিপিঅমের জেলা কমিটির সম্পাদক সুমিত দে বলেন,“জেলা কমিটিতেও সর্বসম্মত ভাবে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দীপঙ্করবাবুর বিরদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপ ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আছে। যা প্রমাণিত হয়েছে।”
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ২৫ জুলাই শান্তিরপুর জোনাল কার্যালয়ে জোলান কমিটির ২৪ জন সদস্য বৈঠকে বসেন। সেখানে জেলা সম্পাদকও উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকের পর দীপঙ্করবাবুকে শোকজ করা হয়। কিন্তু তিনি সেই শোকজের উত্তর দেন নি। এরপর ১৭ আগষ্ট আবার জোনাল কমিটির সদস্যরা বৈঠকে বসে সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হবে। ২০ আগষ্ট জেলা কমিটি সেই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে। শান্তিপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক অনুপ ঘোষ বলেন,“দলীয় শৃঙ্খলার সঙ্গে কোন রকম আপোস করা হবে না। দীপঙ্করবাবু ধারাবাহিক ভাবে এমন কিছু কাজ করে গিয়েছেন যাতে দলের মর্যাদাহানী হয়েছে। পার্টি ভাঙার চক্রান্ত করেছেন।”
দীপঙ্করবাবু বলেন, “আমি প্রথম থেকেই দলের বেশ কিছু নেতার অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলাম। সেটাই হয়ত আমার অপরাধ। আর শুধু আমি কেন আরও অনেক নেতার সঙ্গেই তো কংগ্রেস বিধায়কের ঘনিষ্টতা ছিল। তাহলে শুধু আমি একা কেন?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy