E-Paper

জঙ্গি-যোগে কলকাতায় ধৃতেরা, তবু ধোঁয়াশা

হারেজের দাদু হায়দর শেখের দাবি, বুধবার তিনি দুর্গাপুরে গিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ ০৯:৩৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

আরও একটা দিন পেরিয়ে গেল। কিন্তু জঙ্গি-যোগে ধৃত মায়াপুরের হারেজ শেখকে নিয়ে নানা ধন্দের মেঘ কাটল না। বরং কিছু ক্ষেত্রে তা আরও ঘোরালো হয়েছে। যেমন হারেজের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার দুর্গাপুর আদালত এবং বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা থানায় গিয়েও পরিজনেরা পুলিশ হেফাজতে থাকা বারেজের দেখা পাননি। যদিও কাঁকসা থানা সূত্রের দাবি, কোনও অভিযুক্তই এখন থানায় নেই। কারও পরিবারকে দেখা করার জন্য ডাকাও হয়নি। এ দিন হারেজের পরিবারের কেউ কাঁকসা থানায় যানওনি।

গত শনিবার কাঁকসার মীরেপাড়া থেকে মানকর কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মহম্মদ হাবিবুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের শাখা ‘শাহদাত’-এর এই রাজ্যের চাঁই বলে এসটিএফের দাবি।

রবিবার দুর্গাপুর আদালতে হাজির করে তাকে ১৪ দিন হেফাজতে পায় পুলিশ। সে দিনই তাকে কলকাতায় নিয়ে যায় এসটিএফ। তাকে জেরা করে মঙ্গলবার সকালে হাওড়া স্টেশন এলাকা থেকে নদিয়ার মায়াপুরের মোল্লাপাড়ার বছর সাতাশের যুবক হারেজ শেখকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। সে দিনই তাকে দু্র্গাপুর আদালতে হাজির করা হয়। তার ক্ষেত্রেও ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পর তাকেও কলকাতা নিয়ে গিয়েছে
এসটিএফ।

অথচ হারেজের দাদু হায়দর শেখের দাবি, বুধবার তিনি দুর্গাপুরে গিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁর কথায়, “সে দিন উকিলবাবুরা আমাদের বলেছিলেন, আজ কিছু হবে না। ওকে ১৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার কাঁকসায় আসুন, কথা বলিয়ে দেব।” এ দিন তাঁর ছোট ছেলে শফিকুল বলেন, “বাবা আজ সকালের বাসে একাই দুর্গাপুরে যান। কিন্তু এ দিনও হারেজের সঙ্গে দেখা হয়নি। আজ উকিলবাবুরা বলছেন, ও এখন ‘রিমান্ডে’ আছে, এখন দেখা হবে না।”

হায়দারের আর একটি বক্তব্য নিয়ে আগের দিন থেকেই বেশ জলঘোলা হচ্ছে। তা হল: কুরবানির ইদের আগে মায়াপুর বামুনপুকুরে নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মীর তারান্নুম সুলতানার বাড়িতে কাজ করছিল হারেজ, এমনকি সেখানে টানা কয়েক দিন থাকছিলও। তাঁরা হারেজকে খুব ভালবাসেন বলেও হায়দার দাবি করেন। যদিও তখনই তারান্নুম জানিয়েছিলেন, এ রকম কিছু তাঁর জানা নেই।

কী করতে সভাধিপতির বাড়িতে গিয়েছিল হারেজ?

শফিকুলের বক্তব্য, হারেজ সেখানে একটি গরুকে বিচালি খাওয়ানোর কাজ নিয়েছিল। আবার হায়দারের দাবি, “ওখানে কাচের কাজ করতে গিয়েছিল হারেজ। ও অল্পস্বল্প কাচের কাজ জানে। হেল্পার হিসাবে রোজার মাসে ওখানেই কাজ করত, থাকত, ইফতার করত। সেই কাজ করতে করতে ওর সঙ্গে (ওদের) একটা ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল। তবে শুধু ওর সঙ্গেই। আমাদের সঙ্গে পরিচয় নেই।” যদিও এর আগে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল, ‘পাগলাটে’ হারেজ বাড়ি থেকে প্রায় বেরোতই না, কাজকর্মও বিশেষ করতে পারত না, খালি ফোনে কার্টুন দেখত।

এই প্রসঙ্গে এ দিন তারান্নুম বলেন, “এখন আমের সিজ়ন চলছে। বহু অস্থায়ী লোক আমাদের বাগানে খাটছে। তাঁদের আমি চিনি না। আমাদের নিজেদের কাজের লোক ৪৫ বছরের পুরোনো।” তাঁর পাল্টা দাবি, “আমাদের বাড়িতে এর মধ্যে কাচের কোনও কাজই হয়নি। আর শুনছি, ছেলেটির নাকি মাথার ব্যামো। একটা অসংলগ্ন লোক কি কাজ করতে পারে?” কোনও ‘ঘরের শত্রু’ এই ধরনের রটনার পিছনে থাকতে পারে দাবি করে তারান্নুমের হুঁশিয়ারি, “যাঁরা এ সব করছেন তাঁরা ঠিক করছেন না। আমি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। যেখানে জানানোর, জানিয়েছি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Terrorist

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy